ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইউএসএ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

নির্বাচনী সহিংসতার শঙ্কা প্রকট হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে

মাহমুদ মেনন, হেড অব নিউজ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৬
নির্বাচনী সহিংসতার শঙ্কা প্রকট হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে ছবি: সংগৃহীত

ম্যানচেস্টার (কানেক্টিকাট) থেকে: যুক্তরাষ্ট্রের এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সংঘর্ষ কি অনিবার্য হয়ে উঠছে? নির্বাচনের দিন কিংবা তার আগে পরে কি রক্ত ঝরবে এই আমেরিকায়? নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে এই আশঙ্কা ক্রমশঃই প্রকট হয়ে উঠছে। আর একটি জরিপ তো এ কথাই জানাচ্ছে যে, দেশটির অর্ধেকেরও বেশি মানুষ সে আশঙ্কটিই করছেন।

 

ইউএসএ টুডে ও সাফোক ইউনিভার্সিটির যৌথ পরিচালনায় করা জরিপ থেকে জানা যাচ্ছে, ৫১ শতাংশ আমেররিকান মনে করেন তারা নির্বাচনী সহিংসতা দেখতে যাচ্ছেন। আর প্রতি ৫ জনের মধ্যে ১ জন এতে ভীষণ উদ্বিগ্ন বলেই জানিয়েছেন।  

ওই জরিপ নিয়ে সাধারণ আমেরিকানদের সঙ্গে কথা বলে সায় পাওয়া গেছে এই ধরনের আশঙ্কায়। যুক্তরাষ্ট্রের কানেটিকাটে চেইন শপিং মল মেসি'জ এর একজন কর্মী তো বলেই ফেললেন, সবচেয়ে ভালো হতো যদি বলা হতো এ বছর আর নির্বাচনই হবে না। এই নারী দোকানি তার উদ্বেগের চেয়ে ক্ষোভটাই বেশি প্রকাশ করলেন। বললেন, এমন নির্বাচন কস্মিনকালেও দেখিনি।  

এই নির্বাচনে কারোই জয় না হোক সে প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বললেন, আমি বুঝি না আমাদের প্রেসিডেন্টেরই দরকার কী?

এই যখন সাধারণ মানুষের ভাবনা, তখন নির্বাচনী সহিংসতার সম্ভাবনার খবরে আশঙ্কার চেয়েও আমেরিকানদের মধ্যে বেড়েছে অপরাধবোধ। তারা অনেকেই দুষছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। এর আগেও তার নিজের নির্বাচনী প্রচারাভিযানে সহিংস ঘটনা ঘটেছে। তিনি নিজেও একাধিকবার প্রচ্ছন্নভাবে ডেমোক্র্যাট প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটনকে হত্যার হুমকি পর্যন্ত দিয়েছেন। ট্রাম্পকে দোষী করে অনেকে বলছেন, এভাবেই তিনি চাইছেন আমেরিকাকে ফের মহান করতে।  

এখানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যেও ট্রাম্প-বিদ্বেষ প্রকট। যারা দুই-তিন দশক ধরে এখানে রয়েছেন তারা অনেকেই বলছেন যুক্তরাষ্ট্রে তারা এমন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী আর দেখেননি। হিলারি ক্লিনটনকেও যে তারা ভীষণ যোগ্য প্রার্থী মনে করছেন তা নয়, তবে তাকে মন্দের ভালো বলে মত দিচ্ছেন।  

ট্রাম্পের নারী-বিদ্বেষের কারণে হিলারির পক্ষে যে নারীরা সরাসরি ভোট দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছিলো তাও যথার্থ নয়, যা প্রতিফলিত হয়েছে শপিং মলের ওই নারী কর্মীর কথায়। তিনি চাইছেন কেউ ই যেন প্রেসিডেন্ট হতে না পারে।  

অনেকেই এও মনে করছেন, ক্ষমতা হস্তান্তরটিও এবার শান্তিপূর্ণ ও আনন্দঘন পরিবেশে হবে না। নির্বাচনে হিলারির জয় হলে তা মেনে নেবেন না বলে আগেই ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন ট্রাম্প। নির্বাচনে কারচুপি হবে বলেও যে আগাম বার্তা ট্রাম্প দিয়ে যাচ্ছেন, তাতে নির্বাচনী কর্তৃপক্ষের মধ্যেও তৈরি হয়েছে অস্বস্তি। খবরগুলো জানাচ্ছে, দেশজুড়েই নির্বাচনী কর্মকর্তা ও কর্মীরা খারাপ যে কোনো পরিস্থিতির প্রস্তুতি নিয়ে রাখছেন।

সম্ভাব্য সহিংসতার আশঙ্কায় অনেক স্কুল ভোটের দিন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আর তা করা হয়েছে অভিভাবকদের দাবির মুখেই। অনেক স্কুল থেকে ভোট কেন্দ্র অন্যত্র সরিয়েও নেওয়া হচ্ছে।  

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তরফ থেকে বলা হয়েছে, তারাও বিষয়টিতে সতর্ক দৃষ্টি ও সব ধরনের প্রস্তুতি রাখছে।  

নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা নিয়েও শঙ্কিত অনেকে। ট্রাম্পের নির্বাচন ফল মেনে না নেওয়ার ইঙ্গিত তার সমর্থকদের প্রভাবিত করেছে। তাদের মধ্যে প্রতি ১০ জনের চার জনই বলছেন, ট্রাম্প না জিতলে ফল মেনে নেবেন না, তাদের মতে হিলারির প্রেসিডেন্সি কখনোই বৈধতা পাবে না।  

অন্যদিকে ভোটে কারচুপি হতে পারে এমনটা বিশ্বাসেই আনতে চান না হিলারির সমর্থকরা। তারা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ২০০ বছরের গণতন্ত্রের ইতিহাসকে কলুষিত করার মতো এমন বক্তব্য কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৬
এইচএ/এমএমকে/

আরও পড়ুন
** আর্লি ভোটে আর্লি তুষারপাত, মূল ভোটে কি হবে!
** মুসলিম ডেমোক্র্যাটরা সক্রিয়, রয়েছেন বাংলাদেশিরাও
***বোস্টনে ভোট ক্যাম্পেইনের এক উপভোগ্য সন্ধ্যা
*** বোস্টনে মিললো ভোটের বিলবোর্ড
*** হিলারির জন্য প্রচারে আমেরিকান মুসলিমদের র‌্যালি রোববার
*** জ্যাকসন হাইটসের আড্ডায় ট্রাম্প আতঙ্ক​
***বহু জাতির দেশে বহুমুখী ভোট, বহু তার সমীকরণ
*** আবহাওয়া ঠাণ্ডা, ভোটের হাওয়া কী গরম!​
***অদ্ভুত এক নির্বাচনের দেশে!
***
প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কাভার করতে বাংলানিউজ’র মেনন যুক্তরাষ্ট্রে


বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।