ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নারীর স্বাধীনতা

স্বপ্ন পূরণে সালমা খাতুন 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২০ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৯
স্বপ্ন পূরণে সালমা খাতুন  সালমা খাতুন 

সালমা খাতুন, বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটের আইকন। যে কাজ পুরুষ ক্রিকেটাররা করতে পারেননি, সেই অধরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট টুর্নামেন্টের শিরোপা জেতা (এশিয়া কাপ) দলের অধিনায়ক ছিলেন তিনি।

একাধারে ডানহাতি ব্যাটসম্যান আর অফব্রেক বোলিং করেন ১৯৯০ সালের ১ অক্টোবর খুলনায় জন্মগ্রহণ করা এই এই প্রথিতযশা প্রমিলা ক্রিকেটার। ২৬ নভেম্বর, ২০১১ তারিখে সাভারে অনুষ্ঠিত খেলায় আয়ারল্যান্ড মহিলা ক্রিকেট দলের বিপক্ষে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার।

এরপর ২৮ আগস্ট, ২০১২ তারিখে ডাবলিনে আয়ারল্যান্ড দলের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয়।  

সালমা খাতুনের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট রিফাত আনজুম ও স্টাফ করেসপন্ডেন্ট (স্পোর্টস) মোয়াজ্জেম হোসেন।  

বাংলানিউজ​: এত খেলা থাকতে ক্রিকেটকেই কেন বেছে নিলেন?
সালমা: আসলে আমি ক্রিকেট খেলাটা দেখতেও পছন্দ করি আর খেলতেও পছন্দ করি। ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেট আমার অনেক পছন্দের।  
সালমা খাতুন 
বাংলানিউজ​: পরিবার কখন থেকে উৎসাহিত করতে শুরু করে?

সালমা: যখন থেকে নারী ক্রিকেট দল যাত্রা শুরু করে আর আমি যোগ দিলাম, তখন থেকেই আমার পরিবার উৎসাহ দিতে শুরু করে। বিশেষ করে আমার পাড়ার ছেলেরা যাদের সঙ্গে আমি খেলতাম, তারা তো অনেক খুশি। সেই থেকে আমি নিজেও উৎসাহ পেতে শুরু করি।  

বাংলানিউজ​: এশিয়া কাপ থেকেই বাংলাদেশ নারী ক্রিকেটের মূল উত্থান বলা যায়। আপনার এবং আপনার সতীর্থদের হাত ধরেই প্রথম আন্তর্জাতিক শিরোপা জেতার স্বাদ পায় নারী ক্রিকেট দল। ওই মুহূর্তের অনুভূতিটা যদি একটু শেয়ার করতেন-

সালমা: আমি যতদিন অধিনায়ক ছিলাম, আমার লক্ষ্য ছিল আমার নেতৃত্বে দল একটা বড় শিরোপা বাংলাদেশের জন্য এনে দেব। একটানা ৮ বছর নেতৃত্বে থাকার পর ২ বছর আমার অধিনায়কত্ব ছিল না। পরে যখন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড আমাকে সুযোগ দিল, তখন ভাবলাম আরেকটা সুযোগ পেয়েছি, এবার দেশকে কিছু দিতে হবে। তো যেদিন এশিয়া কাপের শিরোপা জিতলাম, সবাই টেলিভিশনের পর্দায় নিশ্চয় দেখেছেন, ওই মুহূর্তের আনন্দ আসলে কখনোই ভুলব না। আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছিল সেদিন। দেশের জন্য শিরোপা জিতিয়ে আমি অনেক গর্ববোধ করছিলাম।


বাংলানিউজ​: জাতীয় দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অধিনায়কত্ব কতটা উপভোগ করেন? আর সতীর্থদের সঙ্গে আপনার বোঝাপড়া কেমন?

সালমা:  সতীর্থরা অনেক হেল্পফুল। তাদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক অনেক ভালো। আর নেতৃত্ব খুব উপভোগ করি। মাঠে সতীর্থদের উৎসাহ দেওয়া, আনন্দে রাখা আমার কাছে বিষয়টা খুব উপভোগ্য। আর নারী হিসেবে খেলতে এসেছি বলে বাইরে থেকে অনেক কথা হয়। আমি শুধু একটা কথাই বলব, পুরুষদের যেভাবে দেখা হয়, একইভাবে যেন নারীদেরও দেখা হয়।


বাংলানিউজ​: আপনার মতো আরও যারা ক্রিকেট খেলতে চায়, সেসব নারীদের ক্ষেত্রে এই খেলায় আসার পেছনে কী ধরনের প্রতিবন্ধকতা আছে বলে মনে করেন?

সালমা: এখন কিন্তু আগের চেয়ে সুযোগ অনেক বেড়েছে। এখন অনেকে পারিবারিক সমর্থনও পাচ্ছেন। আমার কাছেই অনেকে ফোন করে জানতে চান তাদের মেয়েকে কোথায় প্র্যাকটিস করাবেন কিংবা কোথায় দিলে ভালো হবে এসব। অর্থাৎ, এখন পরিবার থেকেই আগ্রহ দেখানো হচ্ছে। আমরা এশিয়া কাপের শিরোপা জেতার পর থেকেই এমন আগ্রহ বেড়ে গেছে। কিন্তু এগিয়ে আসার পরেও কিছু বিষয় থাকে। এখন তৃণমূল থেকে খেলোয়াড় বাছাই করা হচ্ছে। জাতীয় দলের পাইপলাইন সমৃদ্ধ হচ্ছে এটা ভালো দিক। তবে এটা ধরে রাখতে হবে।  

বাংলানিউজ​: এবার অন্য প্রসঙ্গে আসি, খেলোয়াড় সালমা অবসরে কী করেন?

সালমা: আসলে সেভাবে সময় পাইনা। মাঠের খেলা শেষে বাসায় এসে পরিবারকে সময় দেওয়ার পর হয়তো গান শুনি কিংবা বই পড়ি। মাঝে মাঝে সতীর্থদের সঙ্গে আড্ডা দেই, গান গাই- এইতো।

বাংলানিউজ​: যদি ক্রিকেটার না হতেন তাহলে কোন পেশা বেছে নিতেন?

সালমা: ক্রিকেট না খেললে আর যদি বাংলাদেশে নারী ক্রিকেট দল না থাকতো তাহলে বিয়ে-শাদি করতাম, ঘর সংসার হতো(হাসি)। আমি একটা জিনিসই পছন্দ করি, আর তা হলো ক্রিকেট। এর বাইরে অন্য কোনো চাওয়া কিংবা পাওয়া নেই। #

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।