ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

কক্সবাজারের আকর্ষণ ২৫ মণের ‘রাজা’

সুনীল বড়ুয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৭ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০২৩
কক্সবাজারের আকর্ষণ ২৫ মণের ‘রাজা’

কক্সবাজার: কক্সবাজারের পশুর হাট দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে বিশাল আকারের প্রায় ২৫ মণ ওজনের ‘রাজা’। শুধু নামে নয়, চালচলন, আচরণ ও বেশভূষায় রাজসিক হওয়ায় খামার মালিক গরুটির নাম রেখেছেন ‘রাজা’।

বর্তমানে এ ‘রাজা’কে দেখতে হাটে ভিড় করছেন ক্রেতাদের পাশাপাশি অনেক উৎসুক জনতা।

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে ‘রাজা’র দাম হাঁকা হচ্ছে ১২ লাখ টাকা। ইতোমধ্যে কয়েকজন ক্রেতা আট লাখ টাকায় কিনতে রাজী হলেও তার ভরণপোষণ আর লালন-পালনের ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে দাবি খামার মালিকের।

কক্সবাজার সদর উপজেলার খরুলিয়া বাজার সংলগ্ন এলাকার ‘আরসিজি অ্যাগ্রো’ খামার। শফিকুর রহমান ও তারেকুর রহমান নামের দুই ভাই মিলে গড়ে তোলেন খামারটি। বর্তমানে এ খামারে রয়েছে গরু ও ছাগলসহ বিভিন্ন পশু। এ খামার থেকে প্রায় সারা বছরই বিক্রি যোগ্য পশু হাটে নেওয়া হলেও এবার ঈদুল আজহা উপলক্ষে খামারের অন্যতম আকর্ষণ অস্ট্রেলিয়ার ফ্রিজিয়ান প্রজাতির এ গরুটি।

খামার মালিক তারেকুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, গত তিন বছর আগে ‘অস্ট্রেলিয়ার ফ্রিজিয়ান’ প্রজাতির গাভি থেকে এ বাঁছুরের জন্ম হয়। বর্তমানে সাড়ে পাঁচ ফুট উচ্চতা ও সাড়ে আট ফুট র্দৈঘ্যর এ গরুটির ওজন প্রায় ওজন ২৫ মণ।

তিনি জানান, জন্মের পর থেকে গরুটির চাল-চলন ছিল ‘রাজা’র মতো। চলাফেরার মধ্যেও ছিল তার আভিজাত্যের ভাব। এমনকি অতিরিক্ত গরমের কারণে ‘রাজা’ যেখানে ঘুমায় সেখানে সিলিং ফ্যানও লাগাতে হয়েছে। জীবনযাপনে আভিজাত্যে ভরা গরুটির নাম রাখা হয় ‘রাজা’।  

খামার মালিক তারেকুর বলেন, প্রতিদিন একাধিকবার সাবান ও স্যাম্পু দিয়ে রাজাকে গোসল করানো হয়। দিনে অন্তত পাঁচবার খাবার দিতে হয়। এর মধ্যে রয়েছে সবুজ ঘাস, খৈল, চালের গুড়াসহ পুষ্টিকর খাবার। ‘রাজা’র পেছনে দৈনিক খরচ হয় এক হাজার ২০০ থেকে দেড় হাজার টাকা। এছাড়াও নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা তো আছেই।

এবার ঈদুল আজহা উপলক্ষে খামারটির অন্যতম আকর্ষণ ‘রাজা’কে একাধিকবার বাজারে তোলার কথা জানিয়ে খামার মালিক তারেকুর বলেন, ২৫ মণ ওজনের ‘রাজা’র দাম ১২ লাখ টাকা। ইতোমধ্যে কয়েকজন ক্রেতা আট লাখ টাকা পর্যন্ত দাম বলেছেন। কিন্তু গত তিন বছরে ‘রাজা’র লালন-পালনে যে ব্যয় হয়েছে তাতে ক্রেতাদের দামের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। তবে  রাজাকে নয় লাখ টাকায় বিক্রি করবেন বলে আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি।  

খামারটিতে রাজাকে লালনপালন ও দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন মোহাম্মদ সালাম। তিনি জানান, কয়েকবার বাজারে তোলার পর থেকে ক্রেতা ও উৎসুক জনতার অনেকেই ‘রাজা’কে দেখার জন্য খামারেও আসছেন।

তিনি আরও বলেন, নিজের সন্তানের মতো ‘রাজা’কে বড় করেছি। চার-পাঁচ বেলা খাবার দিয়েছি। প্রতিদিন একাধিকবার শ্যাম্পু দিয়ে গোসল করাই। গরম লাগলেই ফ্যান চালু করে দেই। ‘রাজা’ চলে গেলে আমার খুবই খারাপ লাগবে।

জেলার বিভিন্ন গরুর হাটে শত শত গরু বেচার জন্য হাটে তোলা হলেও রাজার দিকেই ক্রেতাদের অন্যরকম দৃষ্টি থাকে বলেও জানান সালাম।  

তিনি বলেন, দেখতে সুন্দর হওয়ায় সবাই ‘রাজা’কে পছন্দ করছে। কিন্তু সাইজে বড় হওয়ায় দামের কারণে অনেকে কিনতে পারছেন না।

‘রাজা’কে দেখতে এসে মো. শফিক মিয়া নামে এক ক্রেতা বলেন, গরুটি আসলেই নজর কাড়ার মতো। কিন্তু সাইজে অনেক বড়। খামার মালিক দাম চাচ্ছেন অনেক বেশি।  

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্য মতে, এবার ঈদুল আজহা উপলক্ষে কক্সবাজার জেলার খামার ও বিভিন্ন কৃষকের ঘরে কোরবানি যোগ্য পশু রয়েছে এক লাখ ৫১ হাজার ৬২২টি। এর বিপরীতে চাহিদা রয়েছে এক লাখ ৪০ হাজার ৯২৩টি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৬ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০২৩
এসবি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।