ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

অনাবাদি জমিতে তুলা চাষ, চরের চাষিদের ভাগ্য বদল

সাগর ফরাজী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৭ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০২৪
অনাবাদি জমিতে তুলা চাষ, চরের চাষিদের ভাগ্য বদল

জামালপুর: জামালপুরে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের বালুরচর এখন হয়ে উঠেছে তুলার সমাহার। এক সময়ের পতিত এই জমিগুলো এখন তুলার দখলে।

অন্য ফসল চাষ করে লাভবান না হতে পারায় তুলা চাষেই ঝুকছেন চরাঞ্চলের চাষিরা। বাণিজ্যিকভাবে তুলা চাষে সাফল্য পেয়েছেন তারা। তুলা চাষে লাভ যেমন বেশি, তেমনি উৎপাদনে খরচও কম।

তুলা উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, তুলার ফলন ভালো হওয়ায় তুলা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন চাষিরা। জেলায় এবার ৩০০ হেক্টর জমিতে তুলা চাষ করেছেন অর্ধশতাধিক কৃষক। এ বছর হাইব্রিড ও কার্পাস জাতের তুলা চাষ করা হয়েছে।

গত রোববার (১৭ মার্চ) সকালে জামালপুর সদর উপজেলার গুয়াবাড়িয়া ও পাথালিয়ার ব্রহ্মপুত্র নদের চরাঞ্চলে গিয়ে দেখা গেছে, এ অঞ্চলগুলোতে এবার ব্যাপক তুলার চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর তুলার বাম্পার ফলন হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা। তবে তুলা উত্তোলনে শ্রমিকের মজুরি বেশি হওয়ায় কাঙ্ক্ষিত লাভ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। কৃষকদের দাবি সরকার যদি তুলা উত্তোলনে আধুনিক যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে তাতে এই ফসলের চাষ আরও বৃদ্ধি পাবে।

চাষিরা জানান, এক মণ তুলা চার হাজার টাকা করে বিক্রি হয়। যা কিনেও নেন তুলা উন্নয়ন বোর্ড। তুলা বিক্রি টাকা পেতেও কৃষকদের কোনো ঝামেলা না হওয়ায় খুশি চাষিরা। কৃষকেরা জানিয়েছেন, এক বিঘা জমিতে ১৪ থেকে ১৫ মণ তুলা উৎপাদন হয়। তাতে কৃষকের খরচ হয় ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় তুলা বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা।

নুর ইসলাম নামের এক তুলা চাষি বাংলানিউজকে বলেন, গত বছর আমি দেড় বিঘার মত তুলার চাষ করেছিলাম। এবার তিন বিঘা জমিতে তুলার চাষ করছি। গতবারের মতই এবার ফলন ভালো হয়েছে। কিন্তু আমাদের সমস্যা একটি ক্ষেত থেকে তুলা তুলতে শ্রমিক পাওয়া যায় না। আর শ্রমিক পাওয়া গেলেও শ্রমিকের মজুরি অনেক বেশি। তাই তুলা উত্তোলনের জন্য আধুনিক যন্ত্র ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করছি।

পাথালিয়া এলাকার তুলা চাষি মো. জাকির বলেন, এই চরে কোনো আবাদ ভালো হয় না। যাই রোপণ করা হোক না কেনো তাই নষ্ট হয়ে যায়। তাই আমরা সবাই তুলা চাষ শুরু করি। ভালো ফলন হয় লাভও হয় ভালো। শুধু একটু দামা বাড়ালেই আমাদের জন্য আরও ভালো হতো।

জামালপুর তুলা উন্নয়ন বোর্ডের কর্টন অফিসার মো. আব্দুল গণি বাংলানিউজকে বলেন, সরকারের যে ইচ্ছা এক ইঞ্চি জমিও যেন খালি না থাকে। সেই উদ্দেশ্যকেই সামনে রেখে চর অঞ্চলে অনাবাদি জমিগুলোকে তুলা চাষের আওতায় নিয়ে আসছি। এতে তুলা চাষে প্রতিবছরই অন্যান্য ফসলের চাইতে চাষিরা লাভবান হচ্ছেন। যার ফলে তুলা চাষে আগ্রহী হচ্ছে কৃষকেরা। আমাদের কর্টন বোর্ড থেকে চেষ্টা করছি আধুনিক প্রযুক্তিসহ উন্নতমানের বীজ দিয়ে যেন তুলা চাষ করা যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৭ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।