ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

মানিকগঞ্জের মিষ্টি কুমড়া যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়

সাজিদুর রহমান রাসেল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৫ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২৪
মানিকগঞ্জের মিষ্টি কুমড়া যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়

মানিকগঞ্জ: জেলার ঘিওর উপজেলায় আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলন হয়েছে। কম খরচে অল্প সময়ে অধিক লাভ হওয়ায় স্থানীয় চাষিরা মিষ্টি কুমড়া আবাদে ঝুঁকছেন।

 

উপজেলার বিস্তীর্ণ জমিতে বড় বড় মিষ্টি কুমড়া পরিপক্ব হয়ে আছে। উর্বর মাটি হওয়ায় মিষ্টি কুমড়াগুলো প্রচুর পরিমাণে মিষ্টি হয়েছে। যার ফলে এই অঞ্চলের মিষ্টি কুমড়ার চাহিদা রয়েছে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেলার ঘিওর উপজেলায় বালিয়াখোড়া ইউনিয়নে তুলনামূলকভাবে জমি একটু নিচু হওয়ায় পানি জমাট বাঁধে। এ কারণেই মৌসুমি সবজি মিষ্টি কুমড়ার ভালো ফলন হয়। দীর্ঘ দিন যাবত এই অঞ্চলে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করে আসছে কৃষকেরা। তবে অল্প সময়ে অধিক মূল্য পাওয়ায় স্থানীয় চাষিরা মিষ্টি কুমড়া চাষে মনোনিবেশ করেছেন। জমি প্রস্তুত থেকে মিষ্টি কুমড়া পরিপক্ব হতে সময় লাগে দেড় থেকে দুই মাস, অন্য সবজি আবাদের চেয়ে খরচও অনেকাংশেই কম তবে লাভ বেশি। স্থানীয় চাষিদের বাজারে গিয়ে বিক্রি করতে হয় না এই মিষ্টি কুমড়া। পাইকাররাই জমির সব কুমড়া একেবারেই কিনে নেয়।  

প্রতিটি কুমড়া আকার ভেদে তিন থেকে ১০ কেজিও হয়ে থাকে। মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৮/৯ টাকা দরে বিক্রি হয়ে থাকে তবে খুচরা বাজারে এর দর দ্বিগুণ পর্যন্ত হয়।

বালিয়াখোড়া এলাকার মিষ্টি কুমড়া চাষি মহর আলী বলেন, এ বছর আট বিঘা জমিতে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ করেছি এবং প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে ১২ হাজার টাকা। চলতি মৌসুমে ফলন ভালো হয়েছে। প্রতি বিঘার মিষ্টি কুমড়া ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার বিক্রি করেছি। অন্য ফসলের চেয়ে অধিক লাভ হওয়ায় এ বছর পাঁচ বিঘা জমিতে বেশি আবাদ করেছি।  

নায়েব আলী নামের এক চাষি বলেন, আমাদের এই অঞ্চলের মিষ্টি কুমড়ার আবাদ হচ্ছে দীর্ঘ দিন যাবত। জমি প্রস্তুত থেকে কুমড়া তোলা পর্যন্ত তেমন খরচ হয় না, আবার সময়ও লাগে অন্য ফসলের চেয়ে কম। এ অঞ্চলের মাটি ভালো হওয়ায় মিষ্টি কুমড়ার ফলনও আশানুরূপ হয়। জমি থেকে কুমড়া তুলে বাজারে আনতে হয় না, পাইকাররা জমি থেকেই কিনে নেয়। এ বছর অন্য সময়ের চেয়ে দামটা কম হলেও লাভ হয়েছে আমার।

বরঙ্গাইল এলাকার পাইকার জামাল বেপারী বলেন, আমরা স্থানীয় চাষিদের কাছ থেকে মিষ্টি কুমড়া কিনে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে থাকি। এই অঞ্চলের মিষ্টি কুমড়ার চাহিদা রয়েছে গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, রাজশাহী, চিটাগাং অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি। যে কারণে ওইসব অঞ্চলের বড় বড় আড়তদাররা আমাদের অগ্রিম টাকা দিয়ে এই মিষ্টি কুমড়া কেনার জন্য ঘিওরের বালিয়াখোড়ায় পাঠান।  

ঘিওর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. মাজেদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ঘিওরের বালিয়াখোড়া অঞ্চলের মিষ্টি কুমড়ার চাহিদা দেশের সর্বত্রই রয়েছে। নিজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে এই অঞ্চলের মিষ্টি কুমড়া দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাইকাররা ট্রাকযোগে নিয়ে যায়। স্থানীয় চাষিদের মিষ্টি কুমড়া আবাদে সব ধরনের পরামর্শ দিয়ে থাকেন আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৫ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।