ঢাকা, বুধবার, ২৪ বৈশাখ ১৪৩২, ০৭ মে ২০২৫, ০৯ জিলকদ ১৪৪৬

এভিয়াট্যুর

মিলানের ফ্যাশন ডিস্ট্রিক্টে এক বিকেল

ইশতিয়াক হুসাইন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬:৫০, অক্টোবর ২৪, ২০১৪
মিলানের ফ্যাশন ডিস্ট্রিক্টে এক বিকেল ছবি : ইশতিয়াক হুসাইন / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মিলান, ইতালি থেকে: আরমানি, গুচি, ভার্সাসে, প্রাডো, ডলস অ্যান্ড গ্যাবান্না, এমিলো, পুচ্চি, ফেরাগেমো। বিশ্বের নাম করা ব্র্যান্ড।

সব ব্র্যান্ডই ইতালির।
 
শুধু কি ইতালির ব্যান্ড মিলান শহরের অলিগলি ধরে হাঁটলে এ ধরনের বিশ্বখ্যাত বহু ব্যান্ডের নাম আপনার চোখে পড়বে।
 
এ তো গেল মিলান শহরের কথা। কিন্তু কেউ যদি মিলানের ফ্যাশন ডিস্ট্রিক্টে যান, তাহলে তার চোখ ছানাবড়া হয়ে যাবে নিশ্চিত। মিলান শহরের একটি এলাকা জুড়ে কয়েকশ’ ব্র্যান্ডের দোকান দেখতে পাবেন।

undefined

undefined


বিশ্বের যেসব ডিজাইনের পোশাক আপনি এখানে দেখবেন তা আর কোথাও পাবেন না। দুনিয়া জোড়া নাম করা ব্র্যান্ড যেমন এই ফ্যাশন ডিস্ট্রিক্টে দেখতে পাবেন, তেমনি পাওয়া যাবে খ্যাতনামা সব ফ্যাশন ডিজাইনারদেরও। আর তাইতো মিলানকে বলা হয় ফ্যাশন ক্যাপিটাল।

ভিয়া মন্টেনাপলেওনি নামে পরিচিত ফ্যাশন ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাশনের আঁতুর ঘরও বটে। নতুন নতুন মডেল, ডিজাইনার ও কোরিওগ্রাফারদের পদচারণায় এই শহর পরিণত হয়েছে ফ্যাশন আইকনে।  

মিলানের ফ্যাশন ডিস্ট্রিক্টে ঢুকতে চোখ জুড়ে বিস্ময় খেলা করে। ইতালিতে পা দিয়ে পরদিন বিকেলে ঢাকা থেকে আসা এক দল সাংবাদিক বেরিয়ে পড়েন ফ্যাশন ডিস্ট্রিক্টের উদ্দেশে। রাস্তার দু’পাশ জুড়ে শতশত দোকান। আর এসব দোকানে নিত্যনতুন ডিজাইনের পোশাক শোভা পাচ্ছে। একেকটি পোশাকের দাম দুই থেকে তিন লাখ টাকা থেকে আট/১০ লাখ টাকা পর্যন্ত।

শতশত মানুষ হেঁটে হেঁটে দোকানগুলোতে যাচ্ছেন, ঘুরছেন, কিনছেন। এসব ক্রেতারা সৌখিনও বটে। বিশ্বের যে ডিজাইনের পোশাক কেউ আগে পরেননি তা যদি কেউ পরতে চান, তাহলে তাকে আসতে হবে এই শহরে। ফ্যাশন ডিস্ট্রিক্টে ঢুকলেই সর্বশেষ ডিজাইনের পোশাকটি যে মিলবে এটা নিশ্চিত।
 
ফ্যাশনের সঙ্গে সঙ্গে হোম অব ফ্যাশন ম্যাগাজিনেরও উত্থান ঘটেছে মিলানে। এজন্য এই শহরকে হোম অব ফ্যাশন ম্যাগাজিন নামেও ডাকা হয়।

undefined


ফ্যাশনের তীর্থস্থান মিলানে ফ্যাশনের বিপ্লব ঘটে ৭০-এর দশকের পর।

সেই থেকে ধিরে ধিরে এই ফ্যাশন শহরের উন্নতি ঘটেছে। গেল মাসে মিলানের ফ্যাশন উইক হয়ে গেল। এর এক মাস পরেও ফ্যাশন উইকের রেশ কাটেনি। এই রেশ কাটতে না কাটতে আগামী বছর মিলানে বসতে যাচ্ছে এক্সপো ২০১৫। এই এক্সপোতে দুই কোটি লোক সমাগম হবে বলে টার্গেট করেছে ইতালি। ছয় মাস ধরে এই এক্সপো চলবে। এক মাসেও যেখানে ফ্যাশন উইকের রেশ কাটে না, সেখানে ছয় মাসের এক্সপোর রেশ কতদিনে কাটবে তা নিয়ে রীতিমতো গবেষণায় বসতে হবে বিশ্বখ্যাত গবেষকদের।   

undefined

undefined


ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, মিলানকে দেখেই পরবর্তীকালে ফ্যাশন শহর হিসেবে পরিচিত পায় প্যারিস, লন্ডন, নিউইয়র্ক। খ্রিষ্টপূর্ব একাদশ দশকের আগে থেকেই ইতালির ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির যাত্রা শুরু হয়েছিল। ফ্যাশন জগতে ইতালির যাত্রা মসৃণ ছিল না। ১৭ শতক থেকে বিংশ শতক পর্যন্ত সমকালে দূরবস্থার মধ্য দিয়ে গিয়েছে তারা।

তবে এই খারাপ সময় স্থায়ী হয়নি। পরবর্তীকালে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ইতালি। ফ্যাশনের কারণেই পরে বিশ্বের সেরা শপিংয়ের শহরগুলোর তালিকায় স্থান পেয়েছে মিলান। বাহারি পণ্যে ঠাসা ফ্যাশন ডিস্ট্রিক্টকে ফ্যাশন জগতের বিশিষ্টজনেরা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ও মর্যাদাপূর্ণ শহর হিসেবে গণ্য করে থাকেন।
  
ইতালিয়ানরা নাকি পোশাকের ব্যাপারে সব সময়ই সচেতন। হয়তো এ কারণেই মিলান ফ্যাশনের শহর হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছে।

ঘুরতে ঘুরতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। কেনা হলো না কিছুই। কিন্তু সন্ধ্যা নামতেই ফ্যাশন ডিস্ট্রিক্ট অন্য রূপে ধরা দিলো। আলো ঝলমলে ভিন্ন নগরের চেহারায় আবির্ভূত হলো এই ফ্যাশন নগরী।      

বাংলাদেশ সময়: ০৬৩০ ঘন্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।