ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিএনপি

নির্বাচন কমিশন সরকারের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠান: রিজভী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৮
নির্বাচন কমিশন সরকারের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠান: রিজভী বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী/ছবি- ডি এইচ বাদল

ঢাকা: নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) সরকারের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠান বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

শুক্রবার (১৬ নভেম্বর) সকালে নয়াপল্টনে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘বিগত ৫ জানুয়ারির মতো আরেকটি একতরফা ও প্রহসনমূলক নির্বাচন হতে যাচ্ছে।

নির্বাচনে সরকারি দলকে বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন। সরকার প্রতিনিয়ত আচরণবিধি ভঙ্গ করলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। যেখানে বিএনপিকে প্রাপ্য তথ্য দিয়ে নির্বাচন কমিশন কোনো সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে না’।  

আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনের অফিসে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের অবাধ বিচরণ ঘটছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘অফিসটি বর্তমানে আওয়ামী লীগ অফিসে পরিণত হয়েছে। আওয়ামী লীগের নির্দেশে পরিচালিত হচ্ছেন নির্বাচন কমিশনের কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। সরকারের নির্দেশ প্রতিফলন ঘটানোর জন্য নির্বাচন কমিশনে নিয়মিত অফিস করছেন আওয়ামী লীগের নির্বাচন বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান বাবলা’।  

রিজভী আরও বলেন, ‘২০১৭ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমামের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে যে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল সেই দলের মধ্যে অন্যতম ছিলেন এই বাবলা। এরপর গত ৭ এবং ১৪ নভেম্বর আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সদস্য হিসেবে নির্বাচন কমিশনে যান বাবলা। তিনি নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে থাকেন। গোপনে তথ্য না দিলে তাদেরকে বদলিসহ বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে থাকেন’।

বিএনপি’র কার্যালয়ে পুলিশি হামলা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনে আরেকজন আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী লোক হচ্ছেন কমিশনের যুগ্ম-সচিব ফরহাদ আহমেদ খান। পুলিশের আইজিপি-কে বিএনপি'র কার্যালয়ে সভা-সম্মেলন বন্ধ করার জন্য চিঠি দিয়ে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল সেই চিঠিতে স্বাক্ষরকারী হলেন এই ফরহাদ। ফরহাদ ও বাবলা যৌথভাবে আজ্ঞাবহ ইসি ও সরকারের কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করেন। তারা আওয়ামী লীগের নেতাদের জন্য নির্বাচন কমিশন থেকে স্মার্টকার্ডের পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে দেন’।

তিনি বলেন, ‘কার্যালয়ের সামনে নেতাকর্মীদের অবস্থান ছিল শান্তিপূর্ণ। কিন্তু তার (ফরহাদ আহমেদ) পাঠানো চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সে প্রমাণ আমরা দেখলাম। কারা কার্যালয়ের সামনে রাখা পুলিশের গাড়িতে হেলমেট পরিহিতি ক্যাডারদের পাঠিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়? যাতে দোষ বিএনপির হয়। এ ধরনের পরিকল্পিত নাশকতা আওয়ামী লীগ খুব ভালোভাবেই করতে পারে। আর এই পরিকল্পিত হামলাকে কেন্দ্র করেই তারা বিএনপি'র সিনিয়র নেতাদের গ্রেফতার করছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই ও গ্রেফতারকৃতদেরকে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাই’।  

রিজভী বলেন, পুলিশের আচরণ দেখে আমাদের মনে হয়েছে নির্বাচনে সরকারকে বিজয়ী করতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে। পুলিশ বলছে তারা ৬৮ জন নেতাকর্মীকে আটক করেছে। কিন্তু আমরা ১৫০ জন নেতাকর্মীকে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার খবর পাচ্ছি। এদের মধ্যে আবার ৩৮ জনকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।  

এ সময় তিনি মোস্তাফিজুর রহমান বাবলা ও ফরহাদ আহমেদ খানের নির্বাচন কমিশনে অবস্থানকালের গোপনীয়ভাবে তোলা বিভিন্ন ছবি প্রদর্শন করেন।  

‘তফসিল ঘোষণা হওয়ার পরও এখনো আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা উদ্বোধনীসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করছেন। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো আচরণবিধি তৈরি হয়নি। পুরো নির্বাচন ব্যবস্থা একটি জগাখিচুড়ি পদ্ধতিতে এগিয়ে চলছে। নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হলেও আজ সরকারি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। নির্বাচন কমিশনে বাবলার অবাধ চলাচল তার প্রমাণ’। এ সময় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে বলেন, সময় থাকতে আপনারা পরিবর্তন না হলে জনগণ এর সঠিক জবাব দেবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০১৮
এমএএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।