ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিএনপি

ঐক্যফ্রন্টের আসন বণ্টন, ‘গলার কাঁটা’ ৩ আসন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৮
ঐক্যফ্রন্টের আসন বণ্টন, ‘গলার কাঁটা’ ৩ আসন ...

ঢাকা: জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাথে বিএনপির আসন বণ্টনে ৩টি আসন নিয়ামক হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঢাকার ওই ৩ আসনের মধ্যে ২টি আসনে বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছেন। কিন্তু আসন দুটি ছাড় দিতে নারাজ ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম শরিক গণফোরাম। যদিও ঢাকার ১টি আসন গণফোরামের সাধারণ সম্পাদকের জন্য ছাড় দিতে রাজি বিএনপি।

জানা গেছে,  ঐক্যফ্রন্টের অন্য দুই শরিক জেএসডি ও নাগরিক ঐক্যকে সন্তুষ্ট করতে পারলেও গণফোরামকে সন্তুষ্ট করতে পারছে না বিএনপি। ফলে দফায় দফায় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকের পরেও আসন ভাগাভাগির ফয়সালা হচ্ছে না।

ফলে মনোনয়ন প্রত্যাহারের আগের দিন পর্যন্ত গড়াতে পারে আসন বণ্টন নিয়ে দরকষাকষি। যদিও ইতোমধ্যে দীর্ঘদিনের মিত্র ২০ দলীয় জোটের সাথে আসন বণ্টনের বিষয়টি ফয়সালা করেছে বিএনপি।

তবে বিএনপি নেতারা বলছেন, আসন বণ্টন নিয়ে ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে কোনো ফাটল তৈরি হবে না। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ৯ ডিসেম্বরের আগেই বিষয়টির চূড়ান্ত ফয়সালা হয়ে যাবে।

এদিকে গণফোরামের নেতারা বলছেন, আসন বণ্টনের বিষয়ে বিএনপিকে আরও উদার হতে হবে। জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির বিষয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন ড. কামাল হোসেন ও মোস্তফা মহসীন মন্টু। ড. কামাল হোসেনের কারণেই বিএনপির নেতা-কর্মীরা এখন থলে থেকে বের হতে পারছেন। সুতরাং দলের সাধারণ সম্পাদক মন্টুকে বিএনপির ছাড় দেওয়া উচিত।

জানা গেছে, আসন ভাগাভাগি চূড়ান্ত না হওয়ায় ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলগুলোকে নিজেদের মতো করে মনোনয়ন জমা দিতে বলে বিএনপি। ফলে নিজেদের মতো করে মনোনয়ন জমা দেন শরিক দলগুলোর প্রার্থীরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলীয় জোটের শরিকদের ৬০টির মতো আসন ছাড় দিতে পারে বিএনপি। এর মধ্যে ২০ দলীয় জোটে জামায়াতকে ২৫ ও অন্য শরিকদের ১৫টি আসন ছাড় দিয়েছে বিএনপি। আর বাকি ২০টি আসন গণফোরাম, জেএসডি ও নাগরিক ঐক্যকে দিতে চায় বিএনপি।  

যদিও একসময় ঐক্যফ্রন্টের তিন শরিক দল বিএনপির কাছে ১৫ আসন দাবি করেছিল। কিন্তু সেই দাবি থেকে সরে আসলেও মূলত গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টুর চাওয়া তিন আসন নিয়েই জটিলতা তৈরি হয়েছে। মোস্তফা মহসীন মন্টু ঢাকা-২, ঢাকা-৩ ও ঢাকা-৭ আসন থেকে নির্বাচন করতে আগ্রহী।

এই তিন আসনে বিএনপিকে ছাড় দিতে একেবারেই নারাজ গণফেরাম। কিন্তু ঢাকা-২ ও ৩ আসনে নিজেদের ২ হেভিয়েট প্রার্থী থাকায় বেকায়দায় পড়েছে বিএনপি। এ দুই আসনে যথাক্রমে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান ও স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বিএনপির প্রার্থী। মোস্তফা মহসীন মন্টুকে ঢাকা-৭ আসন ছেড়ে দিতে রাজি হলেও তাতে সন্তুষ্ট নয় গণফোরাম। ফলে দফায় দফায় বৈঠকের পরও বিষয়টির সুরাহা করতে পারছেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা।

গণফেরাম ওই তিন আসনে তাদের প্রার্থী দিতে এখনও অনড় থাকায় বিষয়টির সুরাহা হতে মনোনয়ন প্রত্যাহারের আগের দিন পর্যন্ত গড়াতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিস্টরা। এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার (২৯ নভেম্বর) ফের জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এখন প্রতিদিনই ইনফরমাল বৈঠক হচ্ছে। মূলত গণফোরামের সাথে কোনো ঐক্যমতে পৌছাঁতে না পারায় পারায় বিলম্ব হচ্ছে।

যদিও আসন ভাগাভাগির বিষয়ে কথা বলতে নারাজ বিএনপি ও গণফোরাম নেতারা। বিএনপির একাধিক নেতার কাছে জানতে চাইলে এ ব্যাপারে কথা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন তারা। গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টুও এখনই কোনো কথা বলতে রাজি নন।

তবে গণফোরামের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য লতিফুল বারী হামিম বাংলানিউজকে বলেন, আসন বণ্টনের বিষয়ে বিএনপিকে উদার হতে হবে। আমরা চাই জাতীয় ঐক্য টিকে থাকুক। একসাথে সবাই মিলে নির্বাচন করি। জাতীয় ঐক্য সৃষ্টিতে মোস্তফা মহসীন মন্টুর ভূমিকা অনেক। তাই বিএনপির উচিত তাকে ছাড় দিয়ে বিষয়টির ফয়সালা করা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৮
টিএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।