ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বইমেলা

ভিড়-বিক্রিতে স্বস্তি

আসাদ জামান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৫
ভিড়-বিক্রিতে স্বস্তি ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

গ্রন্থমেলা থেকে: অনেকটা পথ হেঁটে বিকেল ৩টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মেলা চত্বরে পৌঁছানোর পর ফাল্গুনের দুপুরটাকে চৈত্রের দুপুর মনে হচ্ছিলো। পশ্চিম দিকে সামান্য হেলে পড়া সূর্যটার রং লালচে আকার ধারণ করলেও গরমের দাপট কম ছিলো না।

একটু ছায়া পাওয়ার আশায় উদ্যানের বটমূলে গিয়ে দাঁড়াই।
 
একটু জিরিয়ে এগিয়ে যাই স্টলগুলোর দিকে। সময় ও অন্যপ্রকাশের সামনে অন্যদিনের মতই ভিড়। মেলার ২৫ দিনের শুরুতেই জমে উঠেছে বিক্রি। বিক্রি বাড়ায় প্যাভিলিয়ন দু’টির বিক্রয়কর্মী ও কর্মকর্তাদের চোখে মুখে স্বস্তির ছাপ।
 
ষাটোর্ধ্ব খালেকুজ্জামান সময় প্রকাশনীতে এসে খুঁজছেন হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস ‘বাদশা নামদার’। সময় প্রকাশন’র বিক্রয়কর্মীরা তাকে অন্যপ্রকাশে পাঠিয়ে দিলেন।
 
কৌতূহলবশত পেছন পেছন গিয়ে জিজ্ঞেস করতেই খালেকুজ্জামান জানালেন, কলেজ পড়‍ুয়া ছোট মেয়ে আয়েশা জামানের জন্য বই কিনতে জুরাইন থেকে মেলায় এসেছেন তিনি।
 
প্রতিদিনের মতো আজও মেলার শুরুতে তাম্রলিপি প্রকাশনীর সামনে জটলা। মেলার দরজা উন্মুক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাতে গোনা যে ক’টি প্রকাশনীর সামনে ভিড় জমে তাম্রলিপি এগুলোর অন্যতম। এর কারণও আছে। এ প্রকাশনী থেকেই বের হয়েছে সমাকালীন বাংলাসাহিত্যের জনপ্রিয়ধারার কয়েকজন লেখকের বই।
 
আনিসুল হকের উপন্যাস ‘আকাশের ঠিকানায়’ এবং মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‘গ্রামের নাম কাঁকনডুবি’ কিনে মলাট উল্টিয়ে নতুন বইয়ের গন্ধ নিচ্ছিলেন অতীশ দিপঙ্কর ইউনিভার্সিটির ছাত্র বকুলচন্দ্র দাস ও স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ছাত্র ওবায়দুল্লাহ ইমন।
 
জিজ্ঞেস করতেই টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র বকুলচন্দ্র দাস বাংলানিউজকে বলেন, টেক্সট বইয়ের বাইরে খুব একটা পড়া হয় না। সারা বছর টেক্সট বই-ই পড়তে হয়। তারপরও মেলায় এলে বই না কিনে ফেরা যায় না।
 
স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির আইনের ছাত্র ওবায়দুল হকের প্রতিক্রিয়াও অনেকটা একই রকম। তিনি বলেন, বই পড়তে ভালোই লাগে, কিন্তু সময় কই। তারপরও মেলায় এলে বই কিনতে ইচ্ছে করে। বই কিনি।
 
অনন্যার প্যাভিলিয়ন থেকে বই কিনে আগামী প্রকাশনীর প্যাভিলিয়নের দিকে হাঁটা শুরু করেছেন শায়লা শারমিন। সঙ্গে ৭ বছর বয়সী ছোট মেয়ে শ্যারিনা। নিজের পরিচয় দিয়ে কথা বলতে চাইলে হাঁটতে হাঁটতেই কথা বলে যান শায়লা শারমিন।
 
‘ভিড় এড়াতে একুশের পরে মেলায় আসা। কিন্তু এসে দেখ ভিড় রয়েই গেছে। তবুও ভালো লাগছে এই ভেবে যে, সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে পাঠক দর্শনার্থী মেলায় আসছেন এবং বই কিনছেন। মেলায় ভিড় না হলে, বই বিক্রি না হলে প্রকাশনা শিল্প টিকবে কী করে? আর এ শিল্প না টিকলে জ্ঞান চর্চায় ভাটা পড়বে। আমার পিছিয়ে যাব- হাঁটতে হাঁটতে বললেন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শায়লা শারমিন।
 
আগামী প্রকাশনীতে গিয়ে শেখ হাসিনার ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’ বইটি কিনে লোকের ভিড়ে হারিয়ে গেলেন তিনি।  
 
মূলমঞ্চের আয়োজন: প্রতিদিনের মতো বুধবারও মেলা শুরু হয় বিকেল ৩টায়। বিকেল ৪টায় মূলমঞ্চে শুরু হয় আলোচনা সভা। ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস’ শীর্ষক এ আলোচনা সভায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শান্তনু কায়সার। প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন বদিউর রহমান, পূরবী বসু, জাকির তালুকদার। সভাপতিত্ব করেন সেলিনা হোসেন।
 
একই মঞ্চে সন্ধ্যায় শুরু হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৫

** মেলায় ‘এ টু জেড বাংলা ভিডিও টিউটোরিয়াল’

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।