ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বইমেলা

মন্দিরের গেট প্রবেশদ্বার হিসেবে চান প্রকাশকরা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৬
মন্দিরের গেট প্রবেশদ্বার হিসেবে চান প্রকাশকরা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

অমর একুশে গ্রন্থমেলা থেকে: অমর একুশে গ্রন্থমেলার যে ম্যাপটি করা হয়েছিলো, সেখানে মন্দিরের গেটটি ছিলো প্রবেশপথ। কিন্তু মেলার শুরু থেকে সেটি ব্যবহৃত হচ্ছে বহির্গমন পথ হিসেবে।

এ নিয়ে প্রকাশকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

তাদের অভিযোগ, শিশু চত্বরসহ মন্দির এলাকায় যেসব স্টল পড়েছে, সেখানে ক্রেতা-পাঠকদের আগমন নেই বললেই চলে। তাই মন্দিরের গেট প্রবেশদ্বার হিসেবে খুলে দেওয়া হোক।

রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে গেলে হঠাৎই সেখানে জটলা দেখা যায়।
শিশু চত্বর ও রমনা কালীমন্দির এলাকায় বরাদ্দকৃত স্টল মালিকরা অধ্যাপক শামসুজ্জামান খানের কাছে যান তাদের দাবি জানাতে।
 
অন্বেষা প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী শাহাদাত হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, বইমেলার যে ম্যাপটি করা হয়েছিলো, তার বাস্তবায়ন দেখা যায়নি। ম্যাপে মন্দিরের গেটটি ছিলো প্রবেশপথ। কিন্তু মেলার শুরু থেকে সেটি ব্যবহৃত হচ্ছে বাহির হওয়ার পথ হিসেবে। এতে শিশু চত্বরসহ মন্দির এলাকায় যেসব স্টল পড়েছে, সেখানে ক্রেতা-পাঠকদের আগমন নেই বললেই চলে। এসব স্টলে এবার এখনও তেমন বিক্রিই হয়নি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের দাবি, মন্দিরের গেটটি প্রবেশদ্বার হিসেবে খুলে দেওয়া হোক।

শিশুচত্বরসহ মন্দির এলাকায় রয়েছে প্রায় ২৫০টির মতো স্টল। এর মধ্যে অন্বেষা প্রকাশনী, বাংলা প্রকাশ, যুক্ত, শিল্পতরু, ঘাসফুল, হাওলাদার প্রকাশনী, রাবেয়া বুকস, ধ্রুবপদ, পাললিক সৌরভ, বইপত্র প্রকাশন, উত্তরণ, রাত্রি প্রকাশনী, শোভা প্রকাশ, নওরোজ কিতাবিস্তান, পার্ল পাবলিকেশনসসহ নামকরা বেশ কয়েকটি প্রকাশনা সংস্থা রয়েছে। এসব প্রকাশক জানান, মেলার সপ্তম দিন পার হলেও এ এলাকায় বরাদ্দকৃত স্টলগুলোতে বিক্রিই হয়নি তেমন।

বিকেলে হুমায়ূন আহমেদ চত্বরের মোড়ক উন্মোচন মঞ্চের সামনে ৫০টির বেশি প্রকাশনা সংস্থার মালিকরা প্রতিবাদ ও দাবি জানাতে যান বইমেলার আয়োজক বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের কাছে।

নওরোজ কিতাবিস্তানের স্বত্বাধিকারী মঞ্জুর খান চৌধুরী বলেন, বাংলা একাডেমি প্রদত্ত ডায়াগ্রামে ৪টি প্রবেশপথ ও ৫টি নির্গমন পথের কথা থাকলেও এখন নির্গমন পথ হিসেবে তিনটি গেট ব্যবহৃত হচ্ছে। এতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
   
প্রকাশকদের এ দাবি সম্পর্কে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক বলেন, ম্যাপে মন্দিরের গেটটি প্রবেশদ্বার হিসেবে ছিলো এটি ঠিক। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরামর্শে এটিকে নির্গমন পথ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রকাশকরা যে দাবি করেছেন, সে ব্যাপারে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া ঠিক হবে না। এটা আমাদের ব্যাপার নয়, নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপার।

বাংলা একাডেমির তেমন লোকবল নেই উল্লেখ করে শামসুজ্জামান খান বলেন, কলকাতায় প্রকাশকরা নিজেরাই বই মেলা করেন। এখানে প্রকাশকরা বই মেলার আগে আমাদের কাছে আসেন না, পরামর্শ করেন না।

তবে অন্বেষা প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী শাহাদাত হোসেন বললেন উল্টো কথা। তিনি বলেন, আমি বই মেলা পরিচালনা কমিটির একজন সদস্য। মন্দিরের গেটটি প্রবেশদ্বার না হয়ে নির্গমন পথ হিসেবে ব্যবহার করা হবে, এ ব্যাপারে বাংলা একাডেমি আমাদের সঙ্গে কোনো আলাপ-আলোচনাই করেনি। তারা নিজেরাই এটির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরামর্শে মন্দিরের গেটটিকে নির্গমণপথ হিসেব ব্যবহার করা হচ্ছে, আয়োজকদের এমন কথার জবাবে মঞ্জুর খান চৌধুরী বলেন, তারা প্রবেশদ্বার খোলা রেখেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন, এটা হওয়া উচিত ছিলো। মাথাব্যথা হলে মাথা তো কাটা যাবে না।
শিশু চত্বর ও মন্দির এলাকায় বরাদ্দকৃত স্টলগুলোর বিক্রয়কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ এলাকায় ক্রেতা আসছেই না। এবার তাদের লোকসানের মুখে পড়তে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৬
এডিএ/আরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।