ঢাকা, সোমবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বইমেলা

বাংলানিউজকে শিক্ষামন্ত্রী

আমাদের বইমেলা পৃথিবীর অদ্বিতীয়

সাক্ষাৎকার/বইমেলা | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৬
আমাদের বইমেলা পৃথিবীর অদ্বিতীয় ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

অমর একুশে গ্রন্থমেলায় ঘুরছিলেন মনের আনন্দে। দেখছিলেন পাঠকের বই কেনার আনন্দ-উচ্ছ্বাস।

কখনো কখনো ছবিও তুললেন প্রিয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। সবাই তো তার শিক্ষার্থী। মেলা প্রাঙ্গণে ঘুরতে ঘুরতেই বাংলানিউজের সঙ্গে সাক্ষাৎ শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের। এরপর বেশ কিছুটা সময় আলোচনা। যাতে উঠে এলো মেলা ও শিক্ষার্থীদের বইপড়া বিষয়ে নানান কথা। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন বাংলানিউজের নিউজরুম এডিটর সৈয়দ ইফতেখার আলম

বাংলানিউজ: এবারের মেলা আয়োজন কেমন দেখছেন?
নুরুল ইসলাম নাহিদ: বইমেলা যখন শুরু হয়নি তখন থেকেই বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে আমার আসা-যাওয়া। এখন মেলা হচ্ছে, দিন-দিন এই মেলা পাঠক-লেখকের কাছে গুরুত্ববহ হয়ে উঠছে। অমর একুশে গ্রন্থমেলা এক মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। আমি তো মনে করি এটি পৃথিবীর অদ্বিতীয় আয়োজন।

বাংলানিউজ: মেলায় সব বয়সীদের সমাগম; কেবল শিক্ষার্থীদের নিয়ে যদি বলতেন, তারা কতটুকু উপকৃত হচ্ছে এখানে এসে?
নুরুল ইসলাম নাহিদ: মেলার প্রতি সবাই আকৃষ্ট। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষই রোজ আসছেন, ভিড় জমাচ্ছেন। এ এক মিলনমেলা। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা এখানে এলে ইতিহাস জানবে, ইতিহাসের প্রতি আকৃষ্ট হবে, আমাদের গৌরবের বিষয়গুলো বুঝবে— তবেই না একজন ছেলে কিংবা মেয়ে প্রকৃত মানুষ হতে পারবে।

ছেলেমেয়েদের জানতে হবে ভাষার জন্য তার জাতির রক্ত ঝরানোর ইতিহাস। আজ বিশ্বব্যাপী শহীদ দিবস পালিত হয়, যা আমাদের ভাইয়ের রক্তের জন্যই। ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছি আমরা। ভাষার আন্দোলন আমাদের, আন্তর্জাতিক হয়েছে আমাদের জন্য- এমন বোধ যে কত বড় গর্বের তা শিশুদের জানতে হবে। এই প্রাণের একুশে মেলা যার একটি অন্যতম মাধ্যম। এমন জ্ঞানের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা দেশপ্রেমে উৎসাহিত হবে বলে আমি মনে করি।
‘আর মেলায় এলে আরেকটি বিষয় শিশুদের কাজ করে— তা হলো বই নেওয়ার জন্য-কেনার জন্য উৎসাহ। এই তাড়নাটাই অনেক বড় বিষয়’ যোগ করেন মন্ত্রী।

বাংলানিউজ: আধুনিক এই যুগে বই পড়ার অভ্যাস বিষয়ে কী বলবেন?
নুরুল ইসলাম নাহিদ: শিক্ষার্থীরা যতই আধুনিক প্রযুক্তির দিকে ঝুঁকে যাক না কেন, আমি বলবো- বইপড়া যেন কমিয়ে বা বন্ধ না করে দেয়। শত শত কবিতা আছে, নতুন নতুন লেখা আছে- এসব তো স্কুলের পাঠ্যবইতে শিক্ষার্থীরা পাবে না। এজন্য বই পড়তে হবে। পড়ার চর্চা বাড়াতে হবে। আর সব কিছু স্কুলে সম্ভবও না। স্কুলে জ্ঞান অর্জনের শিক্ষা পেয়ে তা কাজে লাগাতে হবে বাইরে এসে। আমি চাই আরও বেশি বেশি শিশুরা/শিক্ষার্থীরা মেলায় আসুক।

বাংলানিউজ: মেলা উপলক্ষে প্রকাশিত সৃজনশীল বইগুলো আমাদের শিক্ষার্থীদের মননে কীভাবে প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করেন?
নুরুল ইসলাম নাহিদ: বইমেলা বাঙালি জাতির একটি উৎসব হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখানে এলেই আমরা সৃজনশীলতা শিখি, সৃজনশীলদের দেখতে পাই। এখন দেশ বদলাচ্ছে, আমাদের চিন্তা-চেতনা, দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। সে জন্য বই পড়তে হবে। আর শুধু জ্ঞান দিয়ে নয়, নিষ্ঠা দিয়ে কাজ করতে হবে। এই শিক্ষাও আমরা বই থেকে পাই।

বাংলানিউজ: বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থার পরিস্থিতি আর গাইড বইয়ের ব্যবহার বিষয়ে কিছু জানতে চাই?
নুরুল ইসলাম নাহিদ: গাইড বই বেআইনি, তাও কিছু কিছু অভিভাবক ভ্রান্ত ধারণায় সন্তানকে বেশি নম্বরের আশায় গাইড কিনে দেন। ঠিক তেমনি তারা স্কুলের শিক্ষকের কাছে কোচিংয়ে পাঠান, এই সুযোগে শিক্ষকরা ক্লাসে ঠিকমতো পড়ান না। এমনটা আমরা মেনে নেবো না। আর ইতোমধ্যে শিক্ষকদের বেতন বাড়ানো হয়েছে, আশা করছি এটি অনেকখানি কাজে দেবে। সর্বোপরি শিক্ষার্থীরা বেশি বেশি বই পড়ে সৃজনশীল হয়ে উঠবে, শিক্ষাব্যবস্থাতেও যার সুপ্রভাব পড়বে।

বাংলাদেশ সময়: ১২০৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৬
আইএ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।