ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বইমেলা

কচিকাঁচাদের পদভারে রঙিন-সজীব মেলা

সৈয়দ ইফতেখার আলম, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৬
কচিকাঁচাদের পদভারে রঙিন-সজীব মেলা ছবি: দীপু মালাকার/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বইমেলা থেকে: বসন্তর সকালে এক দিকে কোকিলের কুহুতান, আরেক দিকে শিশুদের কলতান। দুয়ে মিলে একাকার মেলা।

রঙিন-সজীব প্রাণের জোয়ারে ছুটির দিনটি মাতাচ্ছে শিশু-কিশোর-কচিকাঁচারা।

বাবা-মায়ের হাত ধরে পুরো মেলা মাঠ তাদের দখলে। কচি-কচি পাগুলো হাঁটি হাঁটি করে ঘুরে বেড়াচ্ছে এক স্টল থেকে অন্য স্টল। নতুন বইয়ের বায়না ধরে আদায় করে নিচ্ছে পছন্দেরটি! আসলে শিশুপ্রহর বলে কথা, তাও আবার বইমেলার শেষ শিশুপ্রহর।

শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে দুপুর- পুরো সময়টাই সোনামনিদের। বইমেলার বাকি তিন শিশুপ্রহরের মতো এই ছুটির সকালেও শিশুদের পদভারে মুখরিত বাংলা একাডেমি-সোহরাওয়ার্দী উদ্যান।

তবে শিশুচত্বর সোহরাওয়ার্দীর বটতলায় হওয়ায় সেখানেই বেশি ভিড়। একাডেমিতে শুধু পুরস্কার বিতরণী।

শিশুদের জন্য শেষবারের বিশেষায়িত এ দিনে মেলার শিশু কর্ণারও সেজেছে নতুন সাজে। বিতা, গল্প-ছড়া, উপন্যাসসহ শিশুতোষ বিভিন্ন বই পাওয়া যাচ্ছে এসব স্টলে।

বাংলা একাডেমির মেলা অংশের প্রবেশদ্বার আনুষ্ঠানিক কিছু কাজে অনেক আগেই খুলে গেলেও নির্ধারিত সময় সকাল সাড়ে ১০টায় খুলে সোহরাওয়ার্দীর গেট।

তার আগে থেকেই দীর্ঘ লাইনে ছিল প্রবেশের অপেক্ষা। পরে একে একে শিশুরা দলবেঁধে গ্রন্থমেলায় ঢুকে পড়ে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শিশুদের কোলাহল বাড়তে থাকে। এক সময় পুরো মেলা প্রাঙ্গণে ছড়িয়ে পড়ে শিশুদের ছোটাছুটি।

যেন আনন্দে আটখানা হয়ে বাবা-মায়ের হাত ধরে তারা মেলায় এসে নতুন বইয়ের বায়না ধরছে, দেখছে এবং কিনছে।

বাংলা একাডেমির পরিচালক ও মেলার আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ বাংলানিউজকে জানান, মেলার শেষ শিশুপ্রহরটাতে ভিড় বেশি শিশুদের, আর তা তো স্বাভাবিক। কারণ এ সময়েই কেনাকাটার মৌসুম।

শিশুরা যাতে তাদের অভিভাবকসহ স্বাচ্ছন্দ্যে বই কিনতে পারে সেই জন্য নির্ধারিত শিশুপ্রহর ঘোষণা করে সময় বেঁধেছে বাংলা একাডেমি। তবে অভিভাবকসহ শিশুরা চাইলে বিকেলেও আসতে পারে।

রাজধানীর মতিঝিল থেকে দুই সন্তান মুস্তারি ইয়াসমিন ও নাহিয়ানকে নিয়ে মেলায় আসেন স্থানীয় সরকার, সমবায় ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা। ইতোমধ্যে কিনে দিয়েছেন বই। মেলা ঘুরে আইসক্রিম খাওয়ার বায়না ধরলে তা কিনে দিতে নিয়ে আসেন বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে।

এদিকে, অমর একুশে গ্রন্থমেলা উপলক্ষে বাংলা একাডেমি আয়োজিত শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন, সংগীত, সাধারণজ্ঞান ও উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন একাডেমির উপপরিচালক রহিমা আখতার কল্পনা।

অন্যদিকে, চলছে সিসিমপুরের আয়োজন। শিশু চত্বরের বটতলায় সিসিমপুরের শিক্ষামূলক এ আয়োজনে উপস্থিত হয়েছে টুকটুকি, হালুম ও ইকরি। তারা সরাসরি নাটিকা-গান ও কসরতে মাতিয়ে তুলছে সোনামনিদের। সকাল ১১টা, দুপুর ১টা এবং সন্ধ্যা ৬টায় তিন ধাপে তাদের এই মজার আয়োজন।

শিশুরা নতুন নতুন বই দেখা-কেনা আর অনুষ্ঠানের উপভোগের পাশাপাশি কেউ কেউ মেতে ওঠে খেলায়। মেলা প্রাঙ্গণের কুকুর ছানাদের দেখেই দৌড় দেওয়া আবার রীতিমতো হাঁস ধরার অভিযান তাদের। সব মিলিয়ে আনন্দে লুটপুটি! আজ কে শোনে কার কথা- কারণ দিনটা যে তাদেরই।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৬
আইএ/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।