ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বইমেলা

প্রেমপত্র লেখার প্রতিযোগিতা ডাক বিভাগের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১৮
প্রেমপত্র লেখার প্রতিযোগিতা ডাক বিভাগের বইমেলায় পোস্ট অফিসের স্টলে দর্শনার্থীদের ভিড়/ছবি: সুমন

ঢাকা: হ্যান্ডহেল্ডে মেসেঞ্জার, ভাইভার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো, গুগল ডুয়োসহ বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে যোগাযোগের যুগ এখন। ‘চিঠি দিও প্রতিদিন’- গানের আবেদন ফুরিয়েছে। ডাকবিভাগ বা পোস্ট অফিসের দিকে কারো পা পড়ে না বললেই চলে। অথচ এক যুগ আগেও কত কদর ছিল। বাসা-বাড়িতে পিয়নের সাইকেলের বেল কেমন শব্দ করে তাও অনেকের মুখস্থ ছিল।

চিঠি হাতে নেওয়া, খোলা, কয়েকবার করে পড়া, পড়া শেষ হলেও আবার পড়া আর সেই চিঠি সযত্নে তুলে রাখা- এসব ছিল উত্তেজনার। যে উত্তেজনার রেশ কাটতো না সহজে।

কারণ চিঠি পড়ার পর শুরু হতো উত্তর লেখার প্রস্তুতি। এবার ভালো একটা ডায়েরি জোগাড় করা কিংবা স্কেল টানা কাগজ যেটাই হোক, তাতে গুছিয়ে সুন্দর করে লেখা হতো।

এরপর পোস্ট অফিসে গিয়ে হলুদ রঙের আকর্ষণীয় খামে চিঠিটি সুন্দর করে ভাঁজ করাতেও থাকতো কত দরদ। আবার খামে চিঠি ভরে আঠা লাগিয়ে মুখ আটকিয়ে পোস্টবক্সে না ফেলা পর্যন্ত স্বস্তি আসতো না। এরপর আবার সেই উত্তরের অপেক্ষা, পিয়নের বেল….আবার প্রতিউত্তর এভাবেই চলতো।

চিঠি লেখা বাঙালির সাহিত্যচর্চার এক অনন্য উপাদানও ছিল। কিন্তু বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে লেখার অভ্যাসটা একেবারে নেই বললেই চলে। বাংলিশ ভাষার ব্যবহারে তারা মাতৃভাষার উপর দক্ষতাই হারাচ্ছে না কেবল, হারাচ্ছে বাংলার ঐতিহ্যও।

বাংলাদেশ ডাক বিভাগ হারানো সেই ঐতিহ্য রক্ষায় মানুষকে লেখার প্রতি আবারো উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছে। চেষ্টা করছে চিঠি লেখার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টির। আর ভাবনা থেকেই তারা আয়োজন করেছে ভালোবাসার মানুষের কাছে চিঠি লেখার প্রতিযোগিতা।

বইমেলায় পোস্ট অফিসের স্টলে দর্শনার্থীদের ভিড়/ছবি: সুমনবাংলা একাডেমি আয়োজিত অমর একুশে গ্রন্থমেলায় সরকারের এ বিভাগটি একটি স্টল নিয়েও বসেছে।

'চিঠি লিখুন, ইহা স্থায়ী' এই স্লোগান সামনে রেখে ডাক বিভাগের প্রতিযোগিতায় রয়েছে দু'টি ক্যাটাগরি। একটি হচ্ছে- ভালোবাসা দিবস উপলক্ষ্যে ভালোবাসার মানুষের কাছে পত্র। যা লিখতে হবে অ্যারোগ্রামে। তিন টাকা মূল্যের অ্যারোগ্রামটি নিতে হবে বাংলা একাডেমির স্টল থেকে। যেখানে নিজের নাম ঠিকানা মোবাইল নম্বর লিখে জমা দিতে হবে। অথবা যে কোনো পোস্ট অফিসে পোস্ট করে দিলেই হবে।

দ্বিতীয় ক্যাটাগরির বিষয় হচ্ছে- বাবার কাছে সন্তানের পত্র। এটি পাঠাতে হবে দেড় টাকা মূল্যের পোস্টকার্ডে। এই পত্রটিও একইভাবে নিজের নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর লিখে একইভাবে জমা দেওয়া বা পাঠানো যাবে।

আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে অ্যারোগ্রাম বা পোস্টকার্ডটি কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছাতে হবে। প্রতি ক্যাটাগরিতেই বিজয়ীদের প্রথমজন পাবেন দশ হাজার টাকার প্রাইজবন্ড, দ্বিতীয়জন পাবেন ছয় হাজার টাকার প্রাইজবন্ড। আর তৃতীয়জন পাবেন চার হাজার টাকার প্রাইজবন্ড।

এ বিষয়ে ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল শবনম মোস্তফা রিক্তা বাংলানিউজকে বলেন, মানুষ এখন আর চিঠি লেখেনই না। তরুণ প্রজন্ম তো সে প্রক্রিয়াটাই জানে না। তাই চিঠি লেখার প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়াতেই এ প্রতিযোগিতার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

মেলায় স্টল নেওয়া বিষয়ে তিনি বলেন, মূলত ডাক বিভাগ সম্পর্কে ধারণা নিতে আসা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১৮
ইইউডি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।