ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বইমেলা

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারে বাড়ছে বই বিক্রি

সাজ্জাদুল কবির, ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৯ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০২২
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারে বাড়ছে বই বিক্রি

ঢাকা: তথ্য-প্রযুক্তির প্রসারে বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। সময়ের পরিক্রমায় ছাপা কাগজের বিজ্ঞাপনের অনেকাংশই অনলাইন নির্ভর হয়েছে।

যার কারণে নতুন লেখকদের অধিকাংশ বই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে পাঠকপ্রিয়তা অর্জন করছে। বিক্রিও বাড়ছে এসব বইয়ের।

তবে ফেসবুকে জনপ্রিয়তার কারণে যেমন ভালো বইও বিক্রি হচ্ছে, তেমনি কম মানসম্পন্ন বইও কিনছেন পাঠক। এটি নিয়ে প্রকাশনাগুলো মিশ্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। কথাপ্রকাশ প্রকাশনীর মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ এস এম ইউনুস বাংলানিউজকে বলেন, এটাকে আমরা ভালোভাবেই দেখি। কারণ আমাদের পাঠক তৈরি করতে হবে। তাহলে লেখকরা যে কষ্ট করে বই লেখেন তা সার্থক হবে। আর প্রকাশকদের বইও বেশি বিক্রি হবে।

প্রথমা প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী রায়হান চৌধরী বলেন, ‘অনলাইনে আমাদের বেচা-কেনা বরাবরের মতোই খুব ভালো। আমাদের প্রকাশনীর নিজস্ব একটা ওয়েবসাইট আছে, যেখানে আমাদের নিজস্ব বইগুলো পাওয়া যায়৷ এছাড়া রকমারিতেও আমাদের প্রচুর বই বিক্রি হয়।

কোন কোন বই বেশি বিক্রি হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মহিউদ্দিন আহমেদ, আকবর আলী খান, আনিসুজ্জামান, আনিসুল হকের বই এখনও পর্যন্ত টপ সেলিংয়ের লিস্টে আছে। এছাড়া আসিফ নজরুলের বই, বিজ্ঞান অনুবাদ, জাবেদ হোসেনের উর্দু অনুবাদেরও প্রচুর পাঠক চাহিদা রয়েছে।

থ্রিলার প্রকৃতির বই 'হিমলুং শিখরে' এর লেখক ইকরামুল হাসান শাকিল বলেন, আমার এই বইটা রকমারিতে থ্রিলার ক্যাটাগরিতে টপ ফাইভে আছে। অনলাইনে এর অনেক প্রচারণা হয়েছে। এই বইয়ে গতানুগতিক থ্রিলার বইয়ের বাইরে গিয়ে নতুন অনেক কিছু আমি সন্নিবেশ করেছি।

ছায়াবীথি প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী আশরাফুল ইসলাম বলেন, ফেসবুকে আমাদের প্রকাশনীর একটা পেজ আছে। সেখানে ৪০% ছাড়ে আমাদের প্রকাশনীর বইগুলো পাওয়া যায়। এখন পর্যন্ত আবদুল্লাহ ইবনে মাহমুদের অতিপ্রাকৃতের সন্ধানে, ইহুদি জাতির ইতিহাস, ইসরাইলের উত্থান পতন, তারেক অণুর ভ্রমণকাহিনী, পৃথিবীর পথে পথে ভালো বিক্রি হচ্ছে।

অমর একুশে বইমেলার ১৫তম দিনে মঙ্গলবার (১ মার্চ) নতুন বই এসেছে ৬৯টি। বরাবরের মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রবেশ করেছেন বইপ্রেমী ও দর্শনার্থীরা। তবে মেলার পরিসর বাড়ায় দর্শনার্থীরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে প্রিয়জনসহ ঘুরে ঘুরে বই দেখছেন। সন্তানদের বই কিনে দেখছেন। সোহরাওয়ার্দীর লেকের ধারে বসে গল্প-আড্ডায় মেতে ওঠেন।

মেলার সময় বাড়ায় প্রকাশকরা বেশি বিক্রির আশা করছেন। তবে মেলার স্টলের অবস্থানের কারণে বিক্রি কম বেশি হচ্ছে। ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশের বিক্রয়কর্মী জান্নাত বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের অবস্থানের কারণে বিক্রি কম হয়। যেদিন মেলার সামনের অংশে দর্শনার্থী বেশি থাকে সেদিন আমাদেরও বিক্রি বাড়ে।

বইমেলায় বিকেলে মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় স্মরণ: জামিলুর রেজা চৌধুরী শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আবদুল কাইয়ুম। আলোচনায় অংশ নেন মোহাম্মদ কায়কোবাদ, মাসুদুল হক এবং মুনির হাসান। সভাপতিত্ব করেন আইনুন নিশাত।

প্রাবন্ধিক আবদুল কাইয়ুম বলেন, অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী বাংলাদেশ প্রকৌশল জগতে সবার পরিচিত নাম। স্বাধীনতার পর এ দেশে যত বড় বড় ভৌত অবকাঠামো তৈরি হয়েছে, তার প্রায় সবগুলোর সঙ্গেই তিনি কোনো না কোনোভাবে জড়িত ছিলেন। বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের পাশাপাশি পদ্মা সেতুর বিশাল কর্মযজ্ঞেও যুক্ত ছিলেন তিনি। একাধারে গবেষক, শিক্ষাবিদ, প্রকৌশলী ও বিজ্ঞানী জামিলুর রেজা চৌধুরী দেশে-বিদেশে বিভিন্ন অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা।

আলোচকরা বলেন, অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর জ্ঞানের গভীরতা ও বৈচিত্র্য আমাদের মুগ্ধ করে। তিনি বিশ্বাস করতেন বিজ্ঞানের পাশাপাশি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ সাহিত্যকর্ম, ইতিহাস, দর্শন বিষয়েও তরুণদের জ্ঞানার্জন করতে হবে। নিজের জ্ঞান ও মেধা দিয়ে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য তিনি সারাজীবন কাজ করে গেছেন।

সভাপতির বক্তব্যে আইনুন নিশাত বলেন, অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর নিষ্ঠা, কর্মোদ্যম ও জ্ঞানস্পৃহা আমাদের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ হয়ে থাকবে। তার জীবনদর্শন, চিন্তাভাবনা ও বিপুল কর্মযজ্ঞ নতুন প্রজন্মকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২১৯ ঘণ্টা, ২ মার্চ, ২০২২
এসকেবি/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।