ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

বন্যা পরিস্থিতির আরও বিস্তার ঘটেছে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৬, ২০২৪
বন্যা পরিস্থিতির আরও বিস্তার ঘটেছে

ঢাকা: ময়মনসিংহ বিভাগে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হচ্ছে। এতে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।

রোববার (০৬ অক্টোবর) পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এমন তথ্য জানিয়েছে।

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান জানিয়েছেন, ময়মনসিংহ বিভাগের কংস, জিঞ্জিরাম, সোমেশ্বরী ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ-নদীসমূহের পানির সমতল বাড়ছে। অপরদিকে ভুগাই নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল রয়েছে। বর্তমানে শেরপুর জেলার ভুগাই নদী, নাকুয়াগাঁও এবং জামালপুর জেলার জিঞ্জিরাম নদী গোয়ালকান্দা পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।  

আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্যানুযায়ী, আগামী তিন দিন ময়মনসিংহ বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে অতিভারী বৃষ্টিপাতের (>৮৮ মি.মি/২৪ ঘণ্টা) প্রবণতা কম রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে, আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত ভুগাই নদীর পানি সমতল ধীর গতিতে কমতে পারে এবং শেরপুর এবং ময়মনসিংহ জেলার ভুগাই নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে, তবে জামালপুর জেলার জিজিরাম নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হতে পারে। অপরদিকে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় নেত্রকোনা জেলার কংস নদ ও সোমেশ্বরী নদীর পানি সমতল বিপৎসীমা অতিক্রম করে সংশ্লিষ্ট কতিপয় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। পরবর্তী দুই দিনে কংস, জিঞ্জিরাম, সোমেশ্বরী ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদীগুলোর পানির সমতল কমে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে এবং জেলাগুলোর নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।

সিলেট বিভাগের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানির সমতল বাড়ছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আবহাওয়া সংস্থাসমূহের তথ্যানুযায়ী, আগামী তিন দিন পর্যন্ত সিলেট বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে অতিভারী বৃষ্টিপাতের (>৮৮ মি.মি/২৪ ঘণ্টা) প্রবণতা কম রয়েছে, যার পরিপ্রেক্ষিতে আগামী দুইদিন সুরমা ও কুশিয়ারা নদীগুলোর পানির সমতল ধীর গতিতে বাড়তে পারে, তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। পরবর্তী এক দিন সুরমা ও কুশিয়ারা নদীগুলোর পানির সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে।

সিলেট বিভাগের অন্যান্য প্রধান নদীগুলো— সারিপোয়াইন, যাদুকাটা, ধলাই ও খোয়াই নদীগুলোর পানির সমতল বাড়ছে, অপরদিকে মনু নদীর পানির সমতল কমছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী তিন দিন পর্যন্ত সিলেট বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে অতিভারী বৃষ্টিপাতের (>৮৮ মি.মি/২৪ ঘণ্টা) প্রবণতা কম রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে, আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সারিগোয়াইন, ধলাই ও মনু-খোয়াই নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং পরবর্তী দুই দিন কমতে পারে। তবে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় যাদুকাটা নদীর পানির সমতল বেড়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে এবং সুনামগঞ্জ জেলার সংশ্লিষ্ট কতিপয় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। পরবর্তী দুই দিনে যাদুকাটা নদীর পানির সমতল কমে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।

রংপুর বিভাগের ব্রহ্মপুত্র নদ ও তার ভাটিতে যমুনা নদীর পানির সমতল বাড়ছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী পাঁচদিন পর্যন্ত নদ-নদীগুলোর পানির সমতল বাড়তে পারে, তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।

চট্টগ্রাম বিভাগের গোমতী নদীর পানির সমতল বাড়ছে, অপরদিকে মুহুরি, ফেনী, হালদা, সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীসমূহের পানির সমতল কমছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্যানুযায়ী, আগামী তিন দিন পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিভাগ ও তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের (৪৪-৮৮ মি.মি/২৪ ঘণ্টা) প্রবণতা কম রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে, আগামী তিন দিন চট্টগ্রাম বিভাগের এসব নদীগুলোর পানির সমতল কমতে পারে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশ ও তৎসংলগ্ন উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকার বিরাজমান লঘুচাপটি বর্তমানে গুরুত্বহীন হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আগামী দুই দিন পর্যন্ত অমাবস্যার কারণে বরিশাল, খুলনা ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় নদীগুলোতে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি জোয়ার এবং উপকূলীয় অঞ্চলের কিছু স্থানে ভারী বৃষ্টিপাতের (৪৪-৮৮ মি.মি/২৪ ঘণ্টা) কম প্রবণতা পরিলক্ষিত হতে পারে।

রাজশাহী বিভাগের গঙ্গা নদীর পানির সমতল কমছে এবং তার ভাটিতে পদ্মা নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল রয়েছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী দুই দিন গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং পরবর্তী তিন দিন কমতে পারে, তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।

রংপুর বিভাগের তিস্তা নদীর পানির সমতল কমছে, অপরদিকে ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানির সমতল বাড়ছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং পরবর্তী দুই দিন কমতে পারে, তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।

ঢাকা জেলা এবং এর নিকটবর্তী প্রধান নদীগুলো-বুড়িগঙ্গা, টঙ্গী খাল, তুরাগ ও বালু নদীগুলোর পানির সমতল স্থিতিশীল রয়েছে। আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্যানুযায়ী, আগামী তিন দিন পর্যন্ত ঢাকা বিভাগে অতিভারী বৃষ্টিপাতের (৪৪-৮৮ মি.মি/২৪ ঘণ্টা) প্রবণতা কম রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে, আগামী একদিন পর্যন্ত এসব নদীগুলোর পানির সমতল স্থিতিশীল এবং পরবর্তী দুই দিন কমতে পারে, তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০২৪
ইইউডি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।