ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

নিরাপদ আশ্রয়ে সোয়া তিন লাখ মানুষ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৪ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০১৭
নিরাপদ আশ্রয়ে সোয়া তিন লাখ মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে মানুষ। ছবি: উজ্জ্বল ধর

ঢাকা: ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র আঘাত থেকে রক্ষায় উপকূলের ঝুঁকিপূর্ণ প্রায় সোয়া তিন লাখ মানুষকে মধ্যরাতেই নিরাপদ আশ্রয়স্থলে সরিয়ে নিয়েছে সরকার।

স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় সরকারের নিবন্ধিত স্বেচ্ছাসেবকরা সোমবার (২৯ মে) সন্ধ্যা থেকে উপদ্রুত এলাকার লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করে।
 
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের পরিচালক আবু সৈয়দ মোহাম্মদ হাশিম (অতিরিক্ত সচিব) রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাংলানিউজকে বলেন, এখন পর্যন্ত সোয়া তিন লাখ মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, সমস্ত রাতে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলবে।


 
আবহাওয়া অধিদফতরের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, ঘূর্ণিঝটি রাত ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৬০ কি. মি. দক্ষিণে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ২৮০ কি. মি. দক্ষিণে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৩০ কি. মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৫০ কি. মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব দিকে অবস্থান করছিল।
 
প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কি. মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কি. মি., যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১৭ কি. মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
 
ঘূর্ণিঝড়টি আরও ঘণীভূত ও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে মঙ্গলবার (৩০ মে) সকাল ৬টা নাগাদ চট্রগ্রাম-কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
 
মোরা’র কারণে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরসমূহকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রে যাচ্ছে মানুষ।  ছবি: উজ্জ্বল ধর
 
অস্ট্রিয়ায় সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে ঢাকার সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন এবং সর্বাত্মক প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন।
 
ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলা এবং ক্ষতি থেকে রক্ষায় সরকার সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের পরিচালক আবু সৈয়দ।
 
তিনি বলেন, উপকূলে যে সব মানুষ ঝুঁকিপূর্ণ তাদেরকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকরা সাইরেন বাজিয়ে লোকজনকে সরিয়ে নিচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দারা ঘর-বাড়ি ছাড়তে না চাইলে পুলিশ দিয়ে বের করার তাগাদা দেওয়া হয়েছে।
 
স্থানীয় প্রশাসন বাস, ট্রলার, নৌকায় করে ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার কাজ করছেন।
 
উপকূলে তিন হাজার ৬০০ সাইক্লোন শেল্টার রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এর পাশপাশি স্কুল-কলেজ এবং অন্যান্য অবকাঠামো আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
 
তিনি বলেন, উপদ্রুতদের ন্যূনতম বা জিরো পরিমাণ ক্ষতির জন্য কাজ করছে প্রশাসন। আমাদের ৫৬ হাজার নিবন্ধিত স্বেচ্ছাসেবক রয়েছে। এরমধ্যে ১৫ হাজার উপকূলে কাজ করছে।  
 
উপদ্রুত এলাকার মানুষের সহায়তায় নগদ টাকা, খাদ্যসহ যা যা প্রয়োজন তা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের পরিচালক।
 
ঘূর্ণেঝড়ের অবস্থা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছে আবহাওয়া অধিদফতর। আর সার্বিক বিষয়ে দুযোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৩২৫ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৭
এমআইএইচ/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।