ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

৩ বছরে বাংলাদেশের সুন্দরবনে বাঘ বেড়েছে ৮ শতাংশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩২ ঘণ্টা, মে ২২, ২০১৯
৩ বছরে বাংলাদেশের সুন্দরবনে বাঘ বেড়েছে ৮ শতাংশ সুন্দরবনের বাঘ জরিপের ফল প্রকাশ এবং বাংলাদেশের সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগার দ্বিতীয় ধাপ-২০১৮ রিপোর্টের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান

ঢাকা: গত তিন বছরে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে ৮ শতাংশ রয়েল বেঙ্গল টাইগার বা বাঘ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাবউদ্দিন।

বুধবার (২২ মে) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বন ভবনে আয়োজিত সুন্দরবনের বাঘ জরিপের ফল প্রকাশ এবং বাংলাদেশের সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগার দ্বিতীয় ধাপ-২০১৮ রিপোর্টের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা জানান। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে।

তিনি বলেন, সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বাঘের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। সরকারিভাবে পরিচালিত সবশেষ বাঘশুমারি থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়। ২০১৮ সালে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বেড়ে ১১৪টি হয়েছে। ২০১৫ সালে বাঘের সংখ্যা ছিল ১০৬টি।

মন্ত্রী বলেন, ইউএসএইড এর আর্থিক সহযোগিতায়  বেঙ্গল টাইগার  কনজারভেশন অ্যাক্টিভিটি (বিএজিএইচ)  প্রকল্পের  আওতায়  দ্বিতীয় পর্যায়ে সুন্দরবন  ক্যামেরা  ট্রাপিংয়ের মাধ্যমে  বাঘ গণনার কার্যক্রম শুরু হয়।  ২০১৬ সালের  ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু করে  ২৪ এপ্রিল  ২০১৮ সাল পর্যন্ত  চারটি ধাপে  সুন্দরবনের  সাতক্ষীরা, খুলনা ও শরণখোলা রেঞ্জের  তিনটি ব্লকে  ১৬৫৬ বর্গকিলোমিটার  এলাকায়  বিশেষ এক ধরনের ক্যামেরা ব্যবহার করে জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।

মন্ত্রী বলেন, মোট ২৪৯ দিনব্যাপী পরিচালিত এ জরিপ কার্যক্রমে  ৬৩টি পূর্ণবয়স্ক বাঘ, চারটি জুভেনাইল বাঘ এবং পাঁচটি অপ্রাপ্ত বয়স্ক বাঘের সর্বমোট দুই হাজার ৪৬৬টি ছবি পাওয়া যায়।

তিনি আরো বলেন, সুন্দরবনের বাঘের বিচরণক্ষেত্র চার হাজার ৪৪৬ কিলোমিটার এলাকাকে আপেক্ষিক ঘনত্ব দিয়ে গুন করে  বাঘের সংখ্যা হিসাব করা হয়েছে ১১৪টি। এ হিসাব অনুযায়ী  ২০১৮ সালের জরিপে সুন্দরবনের বাঘের সংখ্যা শতকরা ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্লক অনুযায়ী বাঘের ঘনত্ব বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, শরণখোলা রেঞ্জে বাঘের  ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি  (৩.৩৩ বাঘ/ ১০০ বর্গকিলোমিটার) এবং খুলনা রেঞ্জে বাঘের ঘনত্ব সবচেয়ে কম (১. ২১/১০০ বর্গকিলোমিটার)।

২০১৫ সালে সুন্দরবনে ক্যামেরা ট্রাপিংয়ের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো বাঘ গণনা কার্যক্রম শুরু করা হয়েছিল। সে হিসাব অনুযায়ী বাঘের ঘনত্ব ছিল প্রতি ১০০ বর্গকিলোমিটারে ২.১৭টি এবং মোট বাঘের সংখ্যা ছিল ১০৬টি।  

প্রধান বন সংরক্ষক মোহাম্মদ সফিউল আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, পরিবেশ সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী, অতিরিক্ত সচিব মো. বেলাল হোসেন এবং ইউএসএইড এর বাংলাদেশ মিশনের ডেপুটি ডিরেক্টর জেন্টস সালেহি। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল ঢাকার বন সংরক্ষক মো. জাহিদুল কবির।

এর আগে ২০০৪ সালে বন বিভাগ জানিয়েছিল, সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বাঘের সংখ্যা ৪৪০টি। ২০১০ সালে বন বিভাগ ও ওয়াইল্ড লাইফ ট্রাস্ট অব বাংলাদেশের যৌথ জরিপে বাঘের সংখ্যা হয় ৪০০ থেকে ৪৫০টি।

ক্যামেরা-পদ্ধতিতে ২০১৫ সালে সুন্দরবনের বাঘ গণনা জরিপে বন বিভাগ জানায়, বাঘের সংখ্যা মূলত ১০৬টি। আর বাংলাদেশ ও ভারত মিলিয়ে পুরো সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ১৭০ বলে জানানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, মে ২২, ২০১৯
এসএমএকে/এএ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।