ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ততা বাড়ার কারণ জলবায়ু পরিবর্তন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩০২ ঘণ্টা, জুলাই ১১, ২০১৯
উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ততা বাড়ার কারণ জলবায়ু পরিবর্তন সেমিনারে বক্তারা

ঢাকা: জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে লবণাক্ততা বাড়ছে। মিঠাপানির অভাবে উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে কমে যাচ্ছে ধান চাষ। আবার অনেক কৃষক ধানের বদলে চিংড়ি অথবা সামুদ্রিক মাছ চাষ করছেন।

তবে, বর্তমান সরকার খাদ্য নিরাপত্তা ও টেকসই কৃষি উন্নয়ন নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের জন্য বদ্ধপরিকর।

বুধবার (১০ জুলাই) ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের (আইইবি) কৃষিকৌশল বিভাগের উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের লবণাক্ত উপকূলীয় অঞ্চলের মাটির উপরিভাগে চাষযোগ্য ফসলের জন্য পানি সংরক্ষণের সেচ প্রযুক্তির উন্নয়ন ও অভিযোজন’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ কথা বলেন।

বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও বিশ্বের তাপমাত্রা বেড়ে চলা এখন মানব সভ্যতার প্রতি বিশ্বের অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর বাংলাদেশ হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সর্বোচ্চ ঝুঁকির মুখে থাকা দেশগুলোর একটি। বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উপকূলীয় নিচু এলাকা। সেসব এলকায় সমুদ্রের পানির উচ্চতা বাড়ার ফলে লোনা পানি বাড়ছে। মিঠা পানি কমে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে অনেকে ধান চাষ করছেন না। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলেই এ ঘটনা ঘটছে। তবে, উপকূলীয় এলাকাগুলোতে এখন লবণাক্ততা সহ্য করতে পারে এমন প্রজাতির ধান চাষ হচ্ছে। অনেকে ধান ছেড়ে চিংড়ি চাষ করছেন। কোথাও বা বৃষ্টির পানি ধরে রাখা হচ্ছে। তারা পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।

বক্তারা আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিভিন্ন প্রতিকূলতা ও সীমাবদ্ধতা মোকাবিলা করে কৃষির জন্য দুর্যোগপ্রবণ এলাকা তথা হাওর ও উপকূলীয় এলাকার চাষযোগ্য জমিকে উৎপাদন উপযোগী করে ফসল উৎপাদন বাড়ানোর মাধ্যমে বাংলাদেশ এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। সে পরিকল্পনা নিয়ে সরকার লবণাক্ত এলাকার উপযোগী লবণ ও খরা সহিষ্ণু জাত উদ্ভাবনে কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোকে গবেষণার জন্য যথেষ্ট সুযোগ-সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে। গবেষকরা কাজ করে যাচ্ছেন পাশপাশি মিঠা পানি সংরক্ষণ করে আধুনিক কলাকৌশলের মাধ্যমে, ডিপ, শাওয়ার সেচ, সেচ পদ্ধতি অনুসরণ করে শস্য উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে।

বক্তারা জানান, দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় ফসল উৎপাদন সচল রাখতে কৃষি প্রকৌশলী/গবেষকরা তাদের মেধা জ্ঞান ও দক্ষতা দিয়ে পানি সাশ্রয়ী প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণ করে সফলতার সঙ্গে ফসল উৎপাদন ব্যবস্থায় অবদান রেখে চলেছেন। এসডিজি-২ এবং এসডিজি-৬ এর লক্ষ্যমাত্রা হলো ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রহণযোগ্য কৃষি ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি ও টেকসই করা সেই সঙ্গে কম পানির ব্যবহার নিশ্চিত করা। একইভাবে বিশ্বের প্রায় ৪০ ভাগ মানুষের সুপেয় পানির যে সমস্যা রয়েছে তাকে একটি মাত্রা পর্যন্ত নামিয়ে আনা।  

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইইবি’র প্রেসিডেন্ট এবং আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মো. আবদুস সবুর।  

আইইবি’র কৃষিকৌশল বিভাগের সম্পাদক  মো. শফিকুল ইসলাম শেখ শফিকের সঞ্চালনায় ও একই বিভাগের চেয়ারম্যান মো. আবুল কাশেম মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের পরিচালক ড. সুলতান আহম্মেদ, আইইবি’র সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মনজুর মোর্শেদ, বিএআরআই’র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. খোকন কুমার সরকার, বিএআরআইয়ের সাবেক পরিচালক (গবেষণা) এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের এনএটিপি প্রকল্পের কনসালটেন্ট ড. মো. সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।  

বাংলাদেশ সময়: ২৩০২ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৯
এমএএম/এইচএডি/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।