ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জলবায়ু ও পরিবেশ

ভাঙন ঠেকানোর পাশাপাশি ঘর-বাড়ি হারানোর ভয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২, ২০২১
ভাঙন ঠেকানোর পাশাপাশি ঘর-বাড়ি হারানোর ভয় ছবি: বাংলানিউজ

নীলফামারী: তিস্তার ভাঙনে দিশেহারা তিস্তা পাড়ের মানুষ। আবাদি জমি ও বাড়ি-ঘর গিলে খাচ্ছে রাক্ষুসী তিস্তা।

শামসুল ইসলাম (৫৫)। নির্বাক চেয়ে আছেন তিস্তা গিলে খাওয়া জমির দিকে তাকিয়ে। তার দশ বিঘা জমি খেয়ে ফেলেছে তিস্তা নদী। কপালে এখন আর কিছু নেই। জমি হারিয়ে স্পার বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। বাঁধেও ভাঙন ধরেছে। সেখান থেকে ঘর বাড়ি সরিয়ে নিয়েছেন অন্যত্র। সাত জনের সংসারে উপার্জনের একমাত্র পথ কৃষি কাজ। গেল কয়েক দফার বন্যায় রোজগারও বন্ধ। নিরুপায় তিনি।

স্পার বাঁধটি ঘিরে চারটি ওয়ার্ডের প্রায় ২০ হাজার মানুষের বসবাস। তারা এখন সবাই পড়েছেন আতঙ্কে। সেখানে থাকা কুটিপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পটি পানিতে ভরেছে। সেখানে বসবাসরত ৩৯ পরিবার সরে এসে অবস্থান করছেন উচু স্থানে।

ভাঙন ঠেকাতে কেউবা জিও ব্যাগ তৈরিতে ব্যস্ত, কেউবা বালু ভর্তিতে, আবার কেউ বহনে আবার কেউবা ভাঙনের মুখে বস্তা ফেলতে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন। এসব কাজে তদারকি করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদৌলা।

ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেন, তিস্তায় কয়েক দফা পানি বৃদ্ধির ফলে ভেন্ডাবাড়ি চর প্লাবিত হয়ে রয়েছে মাসখানেক ধরে। সবশেষ ভাঙন ধরে স্পার বাঁধে। এ পর্যন্ত সেখানে ১৫০ মিটার ভেঙে যাওয়ায় তিস্তার নতুন চ্যানেল তৈরি হয়েছে। এর ফলে পানি প্রবেশ করেছে লোকালয়ে। বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছেন সহস্রাধিক পরিবার।

স্থানীয় মানুষরা নিরাপদ থাকতে ঘর বাড়ি সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এখনো। ভেঙে নদী গর্ভে যাচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। এই বাধঁটি বিলিন হয়ে গেলে হাজার হাজার মানুষ হারাবে বসতভিটা, গিলে খাবে শত শত একর জমি। তিস্তার প্রসার ঘটবে এবং বাড়তে থাকবে।

ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, বাঁধটি ঘিরে প্রায় ২০ হাজার মানুষ টিকে থাকেন। ভাঙন ধরায় চিন্তায় পড়েছেন এসব মানুষ। বাঁধটি যুগোপযোগী করে কার্যকর করা এবং তিস্তা এলাকার মানুষদের বাঁচাতে তিস্তা মহাপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন।

জানতে চাইলে পাউবো ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদৌলা জানান, বাঁধটি রক্ষায় আমরা চেষ্টা করছি। ১৫০ মিটারের মত ভেঙে গেছে। যার কারণে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে।  এ পর্যন্ত এক হাজার বালুর বস্তা ফেলে ভাঙন রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে। যত প্রয়োজন বালু বস্তা ফেলে বাঁধটি টিকিয়ে রাখার কাজ করবো আমরা। পাশাপাশি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে টেকসই ব্যবস্থার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়শ্রী রাণী রায় বলেন, গত কয়েকদিনে ১৮ পরিবারকে তিন হাজার টাকার নগদ অর্থ সহায়তা ও সেখানে তিন টন চাল বিতরণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০০১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২, ২০২১
কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।