ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কর্পোরেট কর্নার

ইসলামী ব্যাংকের ওয়াক্ফ হিসাব: স্থায়ী জনকল্যাণের অনন্য উপায়

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২২ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২৪
ইসলামী ব্যাংকের ওয়াক্ফ হিসাব: স্থায়ী জনকল্যাণের অনন্য উপায়

আর্ত-মানবতার সেবায় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া মানব জীবনের অন্যতম কর্তব্য। এই কর্তব্য পালনে সমাজের বিত্তবানদের উদ্বুদ্ধ করতে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি-এর রয়েছে মুদারাবা ওয়াক্ফ ক্যাশ জমা হিসাব।

 

এটা একটা সাদাকায়ে জারিয়া’র সেবা। মানুষের মৃত্যুর পর তার অনুকূলে সাদাকাহ অব্যাহত রাখতে একটি সহজ উপায় হলো ক্যাশ ওয়াক্ফ।  

সামাজিক ও মানবিক কল্যাণে অংশগ্রহণ করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে ক্যাশ ওয়াক্ফ-এর গুরুত্ব অপরিসীম।

ইসলামী ব্যাংক মানুষের এই সদিচ্ছা পূরণের জন্য মুদারাবা ওয়াক্ফ ক্যাশ জমা হিসাব চালু করেছে।  

পরিবার পুনর্বাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবা এবং নানাবিধ সামাজিক উপযোগিতামূলক সেবা খাতের উন্নয়নে ‘ক্যাশ ওয়াক্ফ’ হিসাব চালু ইসলামী ব্যাংকের একটি অনন্য পদক্ষেপ।  

সমাজের সচ্ছল ও বিত্তবান ব্যক্তিদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন করা, পারিবারিক স্মৃতি সংরক্ষণ, সামাজিক ও ধর্মীয় কর্মকাণ্ডে উৎসাহ প্রদান করে সামাজিক সঞ্চয় আহরণ, ধনীদের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ বিশেষ করে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কল্যাণ সাধন এবং সামাজিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি করে সামাজিক নিরাপত্তা ও দেশের সার্বিক উন্নয়ন প্রচেষ্টায় সহযোগিতা করা মুদারাবা ক্যাশ ওয়াক্ফ হিসাবের অন্যতম মৌল লক্ষ্য।

ওয়াকফকৃত সমুদয় অর্থ এককালীন জমা করা যায় অথবা ওয়াক্ফ ক্যাশের মোট পরিমাণ ঘোষণা করে প্রারম্ভিক অবস্থায় ন্যূনতম একহাজার টাকা জমা করে পরবর্তী সময়ে বাকি অর্থ কিস্তিতে জমা করা যাবে।  

ওয়াক্ফ অ্যাকাউন্টে বৈদেশিক মুদ্রাও জমা করা যায়। ঘোষিত ক্যাশ ওয়াকফের   সমুদয় অর্থ ব্যাংকে জমা হওয়ার পর পুরো অর্থের জন্য একটি ক্যাশ ওয়াক্ফ সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।  

মুদারাবা নীতির ভিত্তিতে ব্যাংক হিসাবধারীর পক্ষে ওয়াক্ফ-এর অর্থ তদারকি করে থাকে। ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত এক বা একাধিক খাতে অথবা হিসাবধারী তার পছন্দমাফিক অন্য কোন শরিয়াহ সম্মত খাতে ওয়াক্ফ ক্যাশের মুনাফা ব্যয় করার জন্য ব্যাংককে নির্দেশনা দিতে পারেন।  

হিসাবধারী নিজেও ওয়াক্ফ তহবিল থেকে অর্জিত মুনাফা নিয়ে নির্দিষ্ট খাতে ব্যয় করতে পারেন।  

এই হিসাবের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থ লাভজনক খাতে বিনিয়োগ করে তা থেকে অর্জিত মুনাফা অছিয়ত অনুযায়ী বিভিন্ন কল্যাণধর্মী কাজে ব্যয় করা হয়।  

ওয়াকফকৃত অর্থ থেকে অর্জিত মুনাফা ব্যয়ের খাতসমূহের মধ্যে রয়েছে দারিদ্র্য মানের নিচে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর জীবন-মানের উন্নয়ন, শারীরিকভাবে পঙ্গু, অক্ষম, অনগ্রসর জনগোষ্ঠী, ভিক্ষুক ও দুঃস্থ মহিলাদের পুনর্বাসন এবং বস্তির দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সামগ্রিক অবস্থার উন্নয়ন।  

এতিমদের জন্য বিনামূল্যে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, বৃত্তি আকারে মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের সাধারণ ও কারিগরি শিক্ষাক্ষেত্রে সহযোগিতা প্রদান, দুর্গম ও অবহেলিত অঞ্চলে শিক্ষা বিস্তার ও উন্নয়নের লক্ষ্যে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় অর্থায়ন করা।

গ্রামীণ চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য সেবা প্রদান, বিভিন্ন বস্তি, স্কুল, মসজিদ প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ, গরিবদের জন্য হাসপাতাল ও ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা, নির্দিষ্ট রোগের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য গবেষণায় অনুদান, দুঃস্থ মহিলাদের আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আইনগত সহযোগিতা প্রদান, দরিদ্র মেয়েদের যৌতুকবিহীন বিবাহ অনুষ্ঠানে সহযোগিতা প্রদান, গ্রামের রাস্তা-ঘাট উন্নয়ন ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি জোরদারকরণ, সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান নির্মাণ ও উন্নয়ন, আয়-উৎপাদনকারী কর্মসূচির মাধ্যমে নির্দিষ্ট কবরস্থান, ঈদগাহ্ প্রভৃতির উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদিতে অর্থায়ন করা হয়।  

এছাড়া হিসাবধারীর পছন্দমতো শরিয়া সম্মত যে কোনো কল্যাণ ও সেবামূলক খাতে ওয়াকফকৃত অর্থ ব্যয় করা যাবে।

২০০৪ সালে চালুকৃত ওয়াক্ফ ক্যাশ ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট সব মহলে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ইতোমধ্যে প্রায় এক লাখ গ্রাহক ওয়াক্ফ অ্যাকাউন্ট খুলেছেন। যে কেউ ব্যাংকের যে কোন শাখা, উপশাখা ও এজেন্ট আউটলেটে ওয়াক্ফ অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন।  
মানবকল্যাণে সম্পদ ব্যয় এবং মৃত্যুর পরও তা থেকে সদকায়ে জারিয়ার সুবিধা লাভ করতে ইসলামী ব্যাংকের মুদারাবা ওয়াক্ফ ক্যাশ জমা হিসাব হতে পারে পরকালীন মুক্তির একটি অন্যতম উপায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৭ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২৪
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।