চট্টগ্রাম: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশ পরিচালনা হবে প্রত্যেকটি নাগরিকের অংশগ্রহণের মাধ্যমে এবং প্রত্যেকটি নাগরিকের পরিচয় হচ্ছে বাংলাদেশি। ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার৷ তাই এ রাষ্ট্রে, সমাজে, দেশে বিভক্তির কোনো সুযোগ থাকবে না।
রোববার (১১ মে) সকালে বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে নগরের নন্দনকানন বৌদ্ধ মন্দিরের সামনে শান্তি শোভাযাত্রা পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সম্মিলিত বুদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে শান্তি শোভাযাত্রায় ৬১টি সংগঠন অংশগ্রহণ করে। শোভাযাত্রাটি বৌদ্ধ মন্দিরের সামনে থেকে শুরু হয়ে নগরের এনায়েত বাজার, জুবলী রোড়, নিউমার্কেট, কোতোয়ালি মোড়, লালদীঘি পাড়, আন্দরকিল্লা, চেরাগি মোড় হয়ে পুনরায় বৌদ্ধ মন্দিরে গিয়ে শেষ হয়।
আমীর খসরু মাহমুদ বলেন, বুদ্ধিস্ট কমিউনিটিতে যারা দেশে আছে। তারা কিন্তু চট্টগ্রামেই বেশি বসবাস করেন। তাদের সাথে আমাদের ছোটবেলা থেকে বড় হওয়া। অনেক বন্ধু একসাথে লেখাপড়া করেছি। বৌদ্ধ পূর্ণিমার যে শান্তির বাণী এটা সারা বিশ্বে আছে এবং বাংলাদেশের জন্য বেশি প্রযোজ্য। আমরা বিগত ১০-১৫ বছর অনেক অশান্তির মধ্যে থেকেছি। এত অশান্তির মধ্যে থেকেছি যে এ সমাজ ভেঙে গেছে, রাজনীতি ভেঙে গেছে, দেশ ভেঙে গেছে, ব্যবসা বাণিজ্য সবকিছু আমাদের সমাজকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। আমরা এমন দেশ সমাজ গড়তে চাই, যেই দেশ হবে শান্তি। আমরা আর অশান্তি চাই না বাংলাদেশে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের চিন্তা চেতনা শহীদ রাষ্টপতি জিয়াউর রহমানের এটাই ছিল মূল উদ্দেশ্য। তিনি বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদকে এনেছেন এজন্য। এদেশে বসবাসরত সবাই বাংলাদেশি। ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার একথাটা পরিষ্কার। আমরা মেসেজ দিতে চাই, এ দেশ সবার। সবাই মিলে গড়তে হবে৷
মানুষের মধ্যে রাজনৈতিক ভিন্ন থাকতে পারে বলে জানিয়ে সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু বলেন, এ শান্তি শোভাযাত্রায় দেশের রাজনীতিতে শান্তিপূর্ণ অবস্থা থাকতে হবে৷ অপরের সঙ্গে আমার রাজনৈতিক ভিন্নতা থাকবে, কিন্তু অপরের যেই মত সেটাকে সম্মান জানাতে হবে। ভিন্ন থেকেও আমরা একসঙ্গে চলতে পারবো, সম্মান জানাতে পারবো, কোনো অসুবিধা নেই। সবাইকে সহনশীল হতে হবে। দেশ যেন আরো শান্তিপূর্ণ রূপ নেয়। এ দেশের মানুষ একটা স্থিতিশীল বাংলাদেশ চাই। যেখানে সবাই উঠে আসবে। আজকের শোভাযাত্রা সেটারই প্রতীক হিসেবে মনে করি।
উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রাক্তন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রিটন কুমার বড়ুয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সিএমপির উপ পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মো. আলমগীর হোসেন, আর কে কে বাংলাদেশের ব্রাঞ্চ মিনিস্টার মি. মরি মাসানোবু, মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক আবু সুফিয়ান, বিএনপি চেয়ারপারসনের ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
লায়ন রনি কুমার বড়ুয়া ও রোটারিয়ান সপু বড়ুয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতির চেয়ারম্যান অজিত রঞ্জন বড়ুয়া, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি ও শোভাযাত্রার প্রধান সমন্বয়কারী রুবেল বড়ুয়া প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৯ ঘণ্টা, মে ১১, ২০২৫
এমআই/পিডি/টিসি