ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

সাধের ইলিশ বিমানবন্দরে ধরা পড়ায় প্লেন উড়লো দেরিতে 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫২৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৮
সাধের ইলিশ বিমানবন্দরে ধরা পড়ায় প্লেন উড়লো দেরিতে  বরিশালের নদীদে ধরা পড়া ইলিশ। ফাইল ফটো

কলকাতা: পদ্মার ইলিশ ভালোবাসেন না এমন আমিষভোজী মানুষ গোটা ভূ-ভারতে পাওয়া দায়। তাও আবার ওজন যদি হয় আড়াই কেজি। সাধারণ ভারতবাসীর কাছে এমন ‘ইলিশপ্রীতি’র লোভ দমন করা খুবই মুশকিল বিষয়। 

তবে বাংলাদেশ থেকে লুকিয়ে ইলিশ মাছ আনাকে আইনি ভাষায় ‘চোরাচালান’ বলেই অভিহিত করেন সংশ্লিষ্টরা। আর সেটা করতে গিয়েই ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপত্তাকর্মীদের কাছে হাতেনাতে ধরা খেলেন এয়ার ইন্ডিয়ার এক পাইলট।

 

বাংলাদেশ থেকে ভারতে ইলিশ রপ্তানি আপাতত নিষিদ্ধ। ভারতের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, লুকিয়ে প্লেনে করে সেই ইলিশ মাছ আনতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়লেন এয়ার ইন্ডিয়ার ওই পাইলট।  

নতিস্বীকার না করে জড়িয়ে পড়েন বাগবিতণ্ডায়। যার জেরে কলকাতাগামী ওই প্লেনটির একটি ফ্লাইট ছাড়তে দেরি হয় পুরো একঘণ্টা। শেষপর্যন্ত ‘ইলিশপ্রীতি’র লোভ দমন করে সাধের আড়াই কেজির ইলিশ ঢাকায় রেখেই প্লেন ছাড়েন পাইলট।  

খবরে বলা হয়েছে, এয়ার ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ এরইমধ্যে বিষয়টির তদন্ত শুরু করেছে। তবে লগ বুকে যান্ত্রিক ত্রুটির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।  

ঠিক কী ঘটেছিল ওইদিন? এয়ার ইন্ডিয়ার এআই২২৯ ফ্লাইটটি গত ৮ আগস্ট ঢাকা থেকে স্থানীয় সময় রাত ৯ টা ২৫ মিনিটে ছাড়ার কথা ছিলো। সোয়া ন’টার মধ্যেই যাত্রীরা যে যার আসনে বসেও পড়েছিলেন।  

ওই সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, প্লেনটির পাইলটের সঙ্গে বিমানবন্দরের নিরাপত্তার কর্মকর্তাদের সঙ্গে তীব্র বাদানুবাদ হয়।  

জানা যায়, প্লেনটি ছাড়ার কয়েক মুহূর্ত আগেই বিমানবন্দরের এক কর্মী পাইলটের হাতে একটি প্যাকেট দিয়ে যান। যা নজরে পড়ে সেখানে উপস্থিত এক নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।  
তিনি প্যাকেটটি খুলে দেখেন, তাতে বরফঢাকা একটি আড়াই কেজির ইলিশ মাছ রয়েছে। এরপরই আইন অনুযায়ী ওই কর্মকর্তা মাছের প্যাকেটটি প্লেনে তুলতে বাধা দেন। এ নিয়ে পাইলটের সঙ্গে বাধে বচসা।  

শেষ পর্যন্ত ওই কর্মকর্তার অনড় মনোভাবের কাছে হার মানেন পাইলট। প্যাকেটটি না নিয়েই তিনি ককপিটে চলে যান। শুধু তাই নয়, ওই সময় ক্ষুব্ধ ওই পাইলট এটিসি’র এয়ারক্রাফ্ট রিলিজ সার্টিফিকিটে (এআরসি) সই করতেও অস্বীকার করেন। ততক্ষণে ফ্লাইটটি ছাড়তে প্রায় ৩৫ মিনিট দেরি হয়ে গেছে।  

এদিকে, এআরসি-তে চালকের সই না মেলায় প্লেনটিকে রানওয়েতেই দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। তাৎক্ষণিক হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষও বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করতে শুরু করলে পাইলটের সঙ্গে তাদেরও বচসা বাধে।  

এক পর্যায়ে বাধ্য হয়ে ককপিট থেকে বেরিয়ে এআরসি-তে সই করেন তিনি। এরপর স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ প্লেনটি কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেয়।  

আইন অনযায়ী, বাংলাদেশ থেকে লাইসেন্স ছাড়া একটি ইলিশও রফতানি করা বেআইনি।  

উড়োজাহাজ সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেন, ওই প্যাকেটে যদি ইলিশ নাও থাকত, তবুও তা প্লেনে নিয়ে তুলতে পারতেন না পাইলট। কারণ ভারতীয় আইনেও বিদেশ থেকে কাঁচা ফল, সবজি, মাছ এবং পোলট্রি লাইসেন্স ছাড়া আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১২০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৮
ভিএস/ এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।