ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর স্বদেশ চেতনা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৯
নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর স্বদেশ চেতনা সুভাষ চন্দ্র বোস। ফাইল ফটো

কলকাতা: নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু। নামটির পাশে দুটি ভাবনা আছে। একটি জন্মভূমি অর্থাৎ সবার উপরে আমার দেশ অপরটি অনুপ্রেরণা। দেশবাসীর কাছে তিনি চিরকালের এক মহানায়ক। 

এক আনফরগটেন হিরো। ভারতের ও বিশ্বের মুক্তি আন্দোলনের ইতিহাসের এক বিতর্কিত ও বর্ণাঢ্য ব্যক্তিত্ব।

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের অন্যতম প্রধান চরিত্র।  

স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের পাতায় তার উপস্থিতি চিরকালীন ও চিরস্মরণীয়। তার নেতৃত্বে প্রথম অঙ্কুর ঘটেছিলো কিশোর ক্ষুদিরামের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে।  

ক্ষুদিরামের ফাঁসির দিন স্কুলে ছাত্রদের কাছে প্রস্তাব দিয়েছিলেন উপবাসের। পিতা জানকীনাথ বসুর ইচ্ছা অনুযায়ী পাড়ি দেন ইংল্যান্ড।  
আইসিএস-এর চাকরি ছেড়ে ১৯৪২ সালে দেশে ফিরে এসে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের ভাবনায় প্রত্যক্ষ সংগ্রামের ডাকে উত্তাল ভারতে কর্মরত হন।  

ক্রমে ক্রমে যুবকদের দিশারী হয়ে উঠতে লাগলেন তিনি। নেতাজি বুঝেছিলেন ব্রিটিশদের দেশ ছাড়া করতে যুবসমাজকে সংঘটিত করতে হবে।  

১৯২২ সালে নিখিল যুব সম্মেলনে নেতাজি তার মর্মস্পর্শী ভাষায় জানালেন, ‘আমি আপনাদের আহ্বান করছি, আনন্দ উৎসবের মধ্যে নয়, সুখ ঐশ্বরয়্যের মধ্যে নয়, আমি আপনাকে আহ্বান করছি দুঃখ দারিদ্র্য নির্যাতনের মধ্যে, অভাব অজ্ঞতা অবসাদের মধ্যে, অত্যাচার অবিচার অনাচারে মধ্যে, অপরিসীম রিক্ততা আর অপরিমেয় ত্যাগের মধ্যে, আমাদের নিজের পথ নিজের করে নিতে হবে। ’ 

এছাড়া ১৯২৮ সালে দেওয়া এক ভাষণে তিনি বলেন, ‘দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে আলোচনা করা যদি রাজনীতি হয়, জন্মভূমি উন্নতি সাধনের প্রচেষ্টা যদি রাজনীতি হয়, তবে ছাত্রই হোক আর শিক্ষকই হোক সেই রাজনীতিতে যোগ দেওয়া ছাড়া তাদের আর গত্যন্তর নেই। ’ 

নেতাজির কথায় দেশের এবং মানবতার সেবায় নিজেকে নিযুক্ত করতে হলে পুরুষ ও নারীদের শিক্ষিত হতে হবে।  

শিক্ষার উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে নেতাজি বলেন, ‘আপনার জ্বলন্ত চরিত্রের উদাহরণের দ্বারা শিক্ষক, ছাত্রকে সাহসী, সত্যবাদী, স্বদেশী প্রেমিক ও স্বার্থত্যাগী, এককথায় চরিত্র মহাত্ম্য অতুলনীয় করে তুলবেন। ’

তিনি স্পষ্ট অনুভব করেছিলেন, ধ্বংসের অথবা সৃষ্টির যেখানে প্রয়োজন সেখানে ইচ্ছায় হোক, অনিচ্ছায় হোক যুবকদের উপর নির্ভর করতে হবে।  

সুভাষচন্দ্রের বিশ্বাস ছিল ভারতের রাজনীতিতে যুব সমাজের চোখ যতই প্রত্যক্ষ উঠবে ততই শাসক শক্তির শেষ দিন ঘনিয়ে আসবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি যুবলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

 সেদিনের জাতীয় আন্দোলনে নেতাজীর প্রতিষ্ঠা যুবলীগ নির্ভুল নেতৃত্ব দিয়েছিল।  

নেতাজি চিরকালই বঙ্গ সন্তানের উপর ভরসা রাখতেন। নেতাজি বলেন, ‘হে বাংলার ছাত্র ও যুব তরুণ সমাজ, তোমরা পরিপূর্ণ ও অখণ্ড মুক্তির উপায় হও। তোমরাই ভবিষ্যৎ ভারতের উত্তরাধিকারী। অতএব তোমরা সমস্ত দেশবাসীকে জাগাইবার ভার গ্রহণ করো। তোমাদের মধ্যে আছে অত্যন্ত অপরিসীম শক্তি। এই শক্তির উদ্বোধন করো এবং নবশক্তি অপরের মধ্যে সঞ্চারিত করো। তোমাদের নিকট নতুন স্বাধীনতা মন্ত্রে দীক্ষিত, সমস্ত জাতি আবার বাঁচিয়ে উঠুক। ’

বুধবার (২৩ জানুয়ারি) এই মহান ব্যক্তির ১২২ তম জন্মদিবস। যা মহাসমারোহে পালিত হচ্ছে গোটা ভারতজুড়ে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৯
ভিএস/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।