ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

ত্রিপুরায় বাণিজ্যিকভাবে গোলমরিচ চাষে গুরুত্ব

সুদীপ চন্দ্র নাথ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৭ ঘণ্টা, মে ৬, ২০২১
ত্রিপুরায় বাণিজ্যিকভাবে গোলমরিচ চাষে গুরুত্ব ত্রিপুরায় বাণিজ্যিকভাবে গোলমরিচ চাষে গুরুত্ব

আগরতলা (ত্রিপুরা): ত্রিপুরা সরকার রাজ্যে বাণিজ্যিকভাবে গোলমরিচ চাষে গুরুত্ব দিয়েছে। রাজ্যের প্রতিটি সরকারি ও বেসরকারি বড় গাছের বাগিচায় গোলমরিচ  চাষ করার জন্য চারা বিতরণ করা হচ্ছে।

প্রাচীন কাল থেকে গোলমরিচের চাহিদা রয়েছে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যসহ শ্রীলঙ্কায় প্রচুর পরিমানে গোলমরিচ চাষ হয়। সুদুর প্রাচীনকাল থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বণিকরা ভারতের এই গোলমরিচ নিয়ে যেতেন। এর ইংরেজি নাম ব্ল্যাকপেপার। এখন এর চাহিদা রয়েছে বিশ্ব জুড়ে। তাই এটি একটি অর্থকরী ফসল। এর চাহিদার জন্য একে ব্ল্যাক গোল্ডও বলা হয়ে থাকে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এর বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয়। ত্রিপুরা রাজ্যের মাটি ও জলবায়ু গোলমরিচ চাষের উপযুক্ত হলেও এখানে তেমন ভাবে গোলমরিচ চাষ হচ্ছে না। আগে সরকারও তেমন গুরুত্ব দেয়নি। ফলে রাজ্যে চাষের উপযোগী পরিবেশ থাকলেও প্রতি বছর বর্হি:রাজ্য তা আমদানি করতে হচ্ছে। কিন্তু বর্তমান সরকার অর্থকরী এই ফসল চাষে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। বিশেষ করে এই মশলা চাষে খুব বেশি যত্নের প্রয়োজন হয় না, মিশ্র পদ্ধতিতে এর চাষ করা সম্ভব হয়। যেমন সুপারি, নারিকেল আম, চা, কফিসহ অন্যান্য যে সব বড় গাছের বাগান রয়েছে এই সব গাছের মধ্যে লতানো এই মশলার গাছটি লাগিয়ে দিলেই হল। সামান্য বড় হলেই গোলমরিচ ধরতে শুরু করে।

ত্রিপুরা সরকার ব্যাপকভাবে এই মশলার চাষের পরিকল্পনা নিয়েছে তাই আগরতলার পার্শ্ববর্তী  নাগিছড়া এলাকার কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের উদ্যান ও ফল গবেষনা কেন্দ্রকে গোলমরিচ চারা তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানান এই গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান উদ্যান ও ভুমি সংরক্ষণ বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর ড. রাজীব ঘোষ।  

তিনি আরও জানান, বর্তমান রাজ্য সরকার পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্যের যতগুলো সরকারি ও বেসরকারি ফল ও অন্যান্য বাগান রয়েছে এগুলোতে গোলমরিচ লাগানো হবে। ত্রিপুরা ধলাই, ঊনকোটি ও উত্তর জেলায় প্রচুর পরিমাণ সুপারি বাগান রয়েছে, পাশাপাশি রাজ্যের বাকি ৫টি জেলাতেও বাগান রয়েছে। এই বাগান গুলোতে গোলমরিচ চাষ করলে কৃষকদের বাড়তি আয় হবে। বিশেষ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কৃষকদের আয় দ্বিগুন করার জন্য যে ডাক দিয়েছেন তা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে গোলমরিচ। তাই ২০২০ সালে নাগিছড়ার এই উদ্যান ও ফল গবেষণা কেন্দ্র থেকে ৫০ হাজার গোলমরিচার কাটিং চারা উৎপাদন করে দেওয়া হয়েছে। এ বছর আর বেশি পরিমানে চারা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছেন তারা। তারা মূলত ভারতের অন্যতম বৃহৎ গোলমরিচ উৎপাদক রাজ্য কেরালার উন্নত পান্নি ১ প্রজাতির গোলমরিচের চারা উৎপাদন করছেন। যেগুলোর ফলন খুব ভাল হয় এবং ত্রিপুরা রাজ্যের আবহাওয়ার জন্য উপযুক্ত বলেও জানান। এই প্রজাতির গোলমরিচ প্রতি কেজি নূন্যতম ১ হাজার রুপি করে বিক্রি হয়।  

আশা করা যাচ্ছে খুব দ্রুত ত্রিপুরা রাজ্য নিজের চাহিদা মিটিয়ে গোলমরিচ অন্য রাজ্যে রপ্তানি করতে পারবে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব নিজে গোলমরিচের বাণিজ্যিক উৎপাদনের জন্য আগ্রহ দেখিয়েছেন। কারণ ত্রিপুরা রাজ্যে পাহাড়ি টিলা জমির অনেক বাগিচায় কোন রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয় না ফলে এই জমির গোলমরিচও অর্গানিক পদ্ধতিতে উৎপাদন হবে। ফলে এগুলির চাহিদা আন্তর্জাতিক বাজারেও প্রচুর হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৬ ঘণ্টা, মে ০৬, ২০২১
এসসিএন/এমআরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।