ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

কলকাতা বইমেলায় দুই বাংলার বই আদান-প্রদানের সমস্যা-সমাধানের প্রসঙ্গ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৮ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০২২
কলকাতা বইমেলায় দুই বাংলার বই আদান-প্রদানের সমস্যা-সমাধানের প্রসঙ্গ

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গবাসীর চাহিদা থাকলেও বাংলাদেশের বই খুব একটি সহজলভ্য নয় কলকাতায়। ফলে সারা বছর কলকাতাবাসী অপেক্ষা করেন বইমেলায় ‘বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নের জন্য।

যদিও কলকাতার দেজ প্রকাশনা এবং পাঠক সমাবেশে বাংলাদেশের কিছু বই থাকে তা সত্ত্বেও বিপুল সংগ্রহ থাকে কলকাতা বইমেলার বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে। পাশাপাশি কলকাতার ‘বাংলাদেশ বইমেলা’য় বাংলাদেশি বই মেলে।

৪৫তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) পালিত হচ্ছে বাংলাদেশ দিবস। এবারের থিমকান্ট্রি বাংলাদেশ। ফলে এদিন দ্বিতীয় ধাপে 'বাংলাদেশ-ভারত বই বিনিময় ও বিপণন, সমস্যা ও সম্ভাবনা' এ শিরোনামে এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছিল।

সেমিনারে আলোচনায় উঠে এলো নানান সমস্যা এবং সমাধান। দুই বাংলা ভাষা এক হলেও বই আদান-প্রদানের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হলো বই আদান-প্রদানের সাংগঠনিক কোনো গবেষণা হয় না। প্রাতিষ্ঠানিক করের ওপর অপ্রাতিষ্ঠিক খরচ বেশি থাকায় দুই দেশের মধ্যে বই আদান-প্রদানে বিঘ্নিত হয়।

অথচ ভৌগোলিকভাবে দুই বাংলা দূরত্ব বেশি না। বাংলাদেশের বই যেমনি ভারতে আসতে সমস্যা হচ্ছে পাশাপাশি ভারতের বই বেশি পরিমাণে অর্ডার না থাকলে বাংলাদেশ পৌঁছায় না। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে অন্যান্য পণ্যের আদান-প্রদানে সহযোগিতা থাকলেও বইয়ের ক্ষেত্রে এই সহযোগিতা দেখা যায় না।  

কলকাতাবাসীর কাছে বাংলাদেশের বইয়ের যে চাহিদা আছে তা বোঝা যায় কলকাতা বইমেলা এবং কলকাতার বাংলাদেশ বইমেলা দেখলে। কলকাতার পাঠকদের বাংলাদেশের বই কতটা চাহিদা আছে তা বোঝা যায় কলকাতায় প্রকাশকদের আসার আগ্রহ দেখে। কয়েক বছর আগেও কলকাতা বইমেলায় হাতে গোনা প্রকাশক আসতেন। এখন প্রকাশক আসার লম্বা তালিকা তৈরি হলেও কলকাতায় সবাইকে জায়গা দিতে পারেনি।

আলোচনায় উঠে এলো মুদ্রণ এর পাশাপাশি ই-বুক ব্যবহারেও জোর দিতে হবে। পাশাপাশি কো পাবলিকেশনে জোর দিতে হবে অর্থাৎ এক বই দুই দেশে প্রকাশিত করার অধিকার থাকতে হবে। এছাড়া কপিরাইটের নিয়মগুলোকে মেনে বই প্রকাশ ও অনুবাদ করার ওপর জোর দিতে হবে।

বাংলাদেশের বিক্রয় ডটকম এ ভারতীয় বইয়ের সম্ভার থাকলেও ভারতের ফ্লিপকার্টে সেভাবে বাংলাদেশের বই দেখা যায় না। প্রাতিষ্ঠানিক কর এবং বইয়ের আদান-প্রদানে লেনদেন সহজ করতে হবে, তবেই এর সমাধান হবে।

বাংলাদেশের তরফে এ সমস্যা এবং সমাধানগুলো তুলে ধরলেও কলকাতার পাবলিশার্স অ্যান্ড গিল্ডের তরফ থেকে বলা হয়, শাসন যারা চালান তাদের মধ্যে সদিচ্ছা থাকতে হবে। তবে দুই বাংলার সমস্যা হলো বাংলাদেশ একটা স্বাধীন রাষ্ট্র আর পশ্চিমবাংলা হলো ভারতের রাজ্য। সে কারণেই একাধিক সমস্যার মুখে পড়তে হয় দুই বাংলার পাঠকদের। তবে ইউরোপীয় নীতিতে বইমেলা এবং বই আদান-প্রদানের সহযোগিতা থাকতে হবে তবেই দুই বাংলা উপকৃত হবে।

আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির ফরিদ আহমেদ, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি মাজহারুল ইসলাম, ইউনিভার্সিটি প্রেস ব্যবস্থা পরিচালক মাহরুখ মহিউদ্দিন, কলকাতার পাবলিশার্স ও বুকসেলার্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার চট্টোপাধ্যায় ও সভাপতি তথা দেশ পাবলিশিংয়ের সুধাংশু শেখর দে।

বাংলাদেশ সময়: ২২২৮ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০২২
ভিএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।