ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

ব্রয়লার মুরগির কেজি ২০০ টাকার বেশি হওয়া অযৌক্তিক: ভোক্তার ডিজি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৫ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০২৩
ব্রয়লার মুরগির কেজি ২০০ টাকার বেশি হওয়া অযৌক্তিক: ভোক্তার ডিজি

ঢাকা: মুরগির দাম নিয়ে কয়েক মাস ধরেই বাজারে অস্থিরতা চলছে। দফায় দফায় ব্যবসায়ী, উৎপাদক ও খামারিদের সঙ্গে বৈঠক করেও এই পোল্ট্রি পণ্যটির দাম কমাতে ব্যর্থ তদারকি সংস্থাগুলো।

এ অবস্থায় ব্রয়লার মুরগির দাম ভোক্তা পর্যায়ে কেজিতে ২০০ টাকার বেশি হওয়ার যৌক্তিক কোনো কারণ নেই বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ. এইচ. এম. সফিকুজ্জামান।

বুধবার (২২ মার্চ) আসন্ন পবিত্র রমজান উপলক্ষে রাজধানীর নিউমার্কেটের বনলতা মার্কেট কাঁচাবাজারে তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি একথা জানান।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের ডিজি বলেন, ব্রয়লার মুরগি নিয়ে আমরা কাজ করেছি। আমাদের পর্যবেক্ষণ হলো, ব্রয়লার মুরগির দাম ভোক্তা পর্যায়ে কেজিতে ২০০ টাকার উপর হওয়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। যারা দায়িত্বশীল রয়েছেন, তারা ভোক্তাদের কষ্ট লাঘবের জন্য বিষয়টি দেখবেন সেই প্রত্যাশা করবো।

উল্লেখ্য, নিউমার্কেটের বনলতা মার্কেট কাঁচাবাজারে আজ (বুধবার) প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৭০ টাকা। যা দোকানিরা ২৫০ টাকা কেজি দরে কিনে এনেছেন। এছাড়া ৩০০ টাকায় কিনে আনা লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকায় এবং ৩৬০ টাকায় কিনে আনা কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৮০ টাকায়।

ভোক্তা অধিদফতরের ডিজি আরও বলেন, রমজান মাসে যেসব কারণে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যায় সেটি আমরা শনাক্ত করেছি। কিছু ব্যবসায়ী রমজানের অজুহাতে দাম বাড়ানোর কারসাজি করেন। এবার রমজানে তারা যাতে এটি করতে না পারে, সেজন্য বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি, এফবিসিসিআই ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর যৌথভাবে কাজ করছি।

তিনি আরও বলেন, এবার রমজানে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে যাতে ব্যবসায়ীরা কারসাজি করতে না পারে, সেজন্য বাজার কমিটিগুলোকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারপরও দেশের কোনো বাজারে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে যদি অস্থিরতা সৃষ্টি হয়, তাহলে এর জন্য বাজার কমিটি দায়ী থাকবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।  

এ. এইচ. এম সফিকুজ্জামান আরও বলেন, বাজারে পণ্যের কোনো ঘাটতি নেই৷ দামও স্থিতিশীল পর্যায়ে রয়েছে। এমনকি দুই একটি পণ্যের দাম কমেছেও। তাই ভোক্তাদের পণ্যের সরবরাহ ও দাম নিয়ে অস্থির হওয়ার প্রয়োজন নেই। আপনারা বাজরে হুমড়ি খেয়ে পড়বেন না। আপনারা তিন দিন বা সাত দিনের পণ্যে একসঙ্গে কিনেন। কিন্তু পুরো রমজানের বাজার একসঙ্গে করে বাজার অস্থির করবেন না।

এবারের রমজান যাতে সবাই স্বস্তিতে পার করতে পারে সেই প্রত্যাশা করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের ডিজি।  
এ সময় এফবিসিসিআইয়ের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, ব্যবসায়ীরা কোনো পণ্য বেশি দামে বিক্রি করলে বাজার কমিটিগুলো গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। যদি বাজার কমিটিগুলো এটি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে, তাহলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কিমিটি বাতিল বা স্থগিত করতে পারেন। তাই ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানাবো, এবার রমজানে সব ভোক্তা যেনো স্বস্তিতে থাকে।

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, রমজান এলেই ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। কিন্তু এবার কোনো পণ্যের দাম বাড়ার যৌক্তিক কারণ নেই। যদি কোথাও বাড়ে তাহলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর, এফবিসিসিআই ও বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি সেটি চিহ্নিত করবে।

তিনি আরও বলেন, আজকের তদারকিতে আপনারা দেখেছেন, ডাল, ছোলাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক পণ্যের দাম কমেছে। বেড়েছে শুধু ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম। যা বাড়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই৷ দুই একদিনের মধ্যে যদি দাম না কমে বা অব্যহতভাবে বাড়তে থাকে, তাহলে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে ব্রলার মুরগি আমদানির ব্যবস্থা করার জন্য সরকারকে অনুরোধ জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৫ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০২৩
এসসি/এসএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।