ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

প্রত্যেক ব্যবসায়ীর বড় বেদনা পণ্য খালাস: সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০২৩
প্রত্যেক ব্যবসায়ীর বড় বেদনা পণ্য খালাস: সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর

লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এলএফএমইএবি)-এর সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেছেন, রাজশাহীর এক আম চাষির ছেলে আজ বাংলাদেশে বসে প্রায় ৪০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য অ্যামাজনে বিক্রি করছেন। স্মার্ট বাংলাদেশের কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে।

বিদ্যমান কিছু আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করতে পারলে বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও দ্রুত সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, প্রত্যেক ব্যবসায়ীর বড় বেদনার জায়গা পণ্য খালাস করা। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) যে উদ্যোগটা ইতোমধ্যে নিয়েছেন, বাংলাদেশ সরকার একটা লজিস্টিকস পলিসি করেছে, আসলে স্মার্ট দেশ হতে হলে স্মার্ট লজিস্টিকস দরকার। কিন্তু এখনো চট্টগ্রাম বন্দরে মালামাল খালাস করতে ১২ দিন পর্যন্ত লেগে যায়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আমি অনুরোধ করব, বাংলাদেশে মাল খালাস করতে (বন্ডেড বা ডিউটি পেইড) কত দিন লাগে, সেটা দেখার জন্য আপনি আপনার অফিসে একটা ট্রাকার বসান। আপনি নিজে দেখবেন। পণ্য খালাসে এই ধীরগতি আজকের বাংলাদেশে মেনে নেওয়া যায় না। আমরা শুল্ক দিচ্ছি। আমরা দ্রুত পণ্য খালাস করতে চাই, দ্রুত রপ্তানি করতে চাই।

তিনি বলেন, শুধু অ্যামাজন ব্যবহার করে ভারত থেকে ১ লাখ ২৫ হাজার রপ্তানিকারক বছরে ৮ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করে। এরা ছোট ছোট রপ্তানিকারক। সবাইকে বড় কোম্পানি হওয়ার দরকার নেই। ছোট ছোট জায়গায় বসে রপ্তানি করা সম্ভব। শুধু মনোভাবের পরিবর্তন দরকার। এখানে শুধু স্মার্ট অবকাঠামো করলে হবে না, আমাদের স্মার্ট একটা এনবিআর-কাস্টমস রেজিম দরকার। আমাদের বিশ্বাস করুন। আমরা ব্যবসায়ী, বাংলাদেশকে আমরা উন্নত করতে চাই।
চামড়া শিল্পের এই উদ্যোক্তা বলেন, আমরা বিগত অর্থবছরে চামড়াজাত শিল্পের এই সেক্টর থেকে ১.৭ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করতে পেরেছি। অর্থাৎ আমরা মুচি হিসেবে ১.২ বিলিয়ন ডলার আয় করতে সক্ষম হয়েছি। লেদারগুডস থেকে ৪০০ মিলিয়ন ডলার এবং চামড়া থেকে ১০০ মিলিয়ন ডলার আয় এসেছে। চামড়া থেকে আমরা কী করতে পারি এটা তারই একটা দৃষ্টান্ত। তবে এখানে আত্মতৃপ্তিতে ভোগার সুযোগ নেই। সারা পৃথিবীতে শুধু জুতোর মার্কেটই প্রায় ৩৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের। সেখানে ১.২ বিলিয়ন ডলার অর্জন বাহবা পাওয়ার মতো নয়। এটাকে অতিক্রম করার ক্ষেত্রে প্রধান বাধা হচ্ছে সাভার সিইটিপি (কেন্দ্রীয় বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ স্থাপনা)। এটা নিয়ে উপদেষ্টা মহোদয় কাজে যোগ দেওয়ার পর থেকেই চেষ্টা করে যাচ্ছেন। বেপজা খুব সুন্দর একটা সিইটিপি সাভার থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে চালাচ্ছে। আমি বিদেশিদের নিয়ে যখন সাভারে আমাদের সিইটিপি ও বেপজার সিইটিপি দেখাই, তারা বলে দুইটা একই দেশ নয়। বেপজার সক্ষমতা আছে। তাদের তত্ত্বাবধানে একটা ইউরোপিয়ান কোম্পানিকে সাভার সিইটিপির দায়িত্ব দিতে পারলে সমস্যার সমাধান হতো।

তিনি বলেন, এ মুহূর্তে মাত্র ১০০ মিলিয়ন ডলার আসছে চামড়া থেকে। এটা সত্যিই লজ্জাজনক, যেখানে বছরে আমাদের প্রায় ৩৫০ মিলিয়ন বর্গফুট চামড়া আসে। তিন বছরের মধ্যে চামড়া থেকে ৫০০ মিলিয়ন ডলার আয় আনা সম্ভব, শুধু সরকারকে এখানে ১০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে হবে। ইউরোপিয়ান কোম্পানিকে সিইটিপির কাজ দিতে হবে, ওরাই এটাকে ঠিক করতে পারবে।

স্মার্ট বাংলাদেশ করতে হলে পরিবেশবান্ধব টেকসই উৎপাদনে যাওয়ার বিকল্প নেই। ছোট্ট একটা দেশ, অনেক মানুষ। সেখানে পরিবেশবান্ধব উৎপাদন নিশ্চিত করতে হলে সিইটিপিতে আরও গুরুত্ব দিতে হবে। না হলে কাঁচামাল আমরা নষ্ট করে ফেলব। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আরেকটি আবেদন হচ্ছে, সাভার এলাকার সঙ্গে আরও ২০০ একর জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে পণ্য বানানোর জন্য। অনুরোধ করব সরকার যেন এটাকে গুরুত্বের সঙ্গে দ্রুত বাস্তবায়ন করে। তাহলে শুধু কাঁচা চামড়া নয়, আমরা ফিনিশড প্রোডাক্ট (চামড়াজাত পণ্য) রপ্তানি করতে পারব। ফিনিশড প্রোডাক্ট করার সক্ষমতা আমরা অর্জন করেছি।  

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৬ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০২৩
এসআইএস
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।