ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

লটকন আর আলু বোখারায় বাজিমাত 

মো. আমিরুজ্জামান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ১, ২০২৪
লটকন আর আলু বোখারায় বাজিমাত 

নীলফামারী: লটকন আর আলু বোখারা চাষ করে বাজিমাত করেছেন নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বাগান মালিক বাবুল সরকার (৬৫)।  

তিনি উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের লক্ষণপুর চড়কপাড়ার উকিলবাড়ির বাসিন্দা।

 

বাগানের ফল বিক্রি করে প্রতিদিনই তার পকেটে আসছে টাকা।  

বাবুল সরকার সৈয়দপুরে রেলের হিসাব বিভাগে চাকরি করে অবসর নেন। সৈয়দপুরের দক্ষিণ নিয়ামতপুর এলাকায় গড়ে তোলেন বাসাবাড়ি। গ্রামের বাড়ি লক্ষণপুরে পৈতৃক সূত্রে পাওয়া প্রায় ৬০ শতাংশ জমিতে গড়ে তুলেছেন মিশ্র ফলের বাগান। তার বাগানে রয়েছে লটকন, আলু বোখারা, কদবেল, বেদানা, ডালিম, বিভিন্ন জাতের আম, জামসহ নানা জাতের ফলের গাছ। বাগানে বিভিন্ন জাতের আমের মধ্যে রয়েছে হাঁড়িভাঙ্গা, মিসরি ভোগ, ল্যাংড়া।  

সুমিষ্ট এসব আমের চারা দিনাজপুর ও রাজশাহীর নার্সারি থেকে সংগ্রহ করেছেন বলে জানান বাগানমালিক।  বাগানে থোকায় থোকায় শোভা পাচ্ছে লটকন। গাছের গোড়া, কাণ্ড ও ডালে-ডালে ঝুলে আছে লটকনের থোকা। বাগানে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। সেই লটকন বাজারে এসে বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা কেজি। গাছে শোভা পাচ্ছে আলু বোখারা। মসলা জাতীয় এ ফলের চাহিদা সারা বছরই রয়েছে। পোলাও, বিরিয়ানি, রোস্ট, সালাদ, জ্যাম, জেলি, আচার এবং বোরহানিসহ নানা অভিজাত খাবার তৈরিতে আলু বোখারা ব্যবহার হয়। ফল দেখতে খুবই সুন্দর। কাঁচা ফল স্বাদ টক হয়। তবে পাকার পর তা কালো হয়ে মিষ্টি হয়ে যায়। বাগান থেকেই ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে আলু বোখারা।
 
বাগানের মালিক বাবুল সরকার জানান, চাকরি থেকে অবসরে গিয়ে বসে না থেকে মিশ্র বাগান করেছি। ফল ব্যবসায়ীরা বাগানে এসে ফল কিনে নিয়ে যান।  

তিনি বলেন, বেলে ও দো-আঁশ মাটিতে লটকনের ফলন ভালো হয়। লটকন ফলনে তেমন কোনো খরচ নেই। গাছ লাগিয়ে একটু পরিচর্যা করতে হয়। গাছের গোড়ার চারদিকে জৈব সার দিলে ফলন ভালো হয়।

সৈয়দপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু মো. আলেমুল বাসার জানান, ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাশিয়াম, সোডিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ আলু বোখারায় রয়েছে ফ্যাট, প্রোটিন, ভিটামিন এ, বি, সি, কে এবং ই। লটকন ফল রুচি বাড়াতে ও মানসিক অবসাদ দূর করতেও সাহায্য করে। ত্বক, দাঁত এবং হাড় মজবুত করতে লটকন মৌসুমী ফলের মধ্যে অন্যতম।

সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভূষণ বলেন, যে কোনো ফলের চেয়ে, অনেক লাভজনক লটকন চাষ করা। এর স্বাদ টক-মিষ্টি। এখন ফলটি বাজারে বেশ দেখা যাচ্ছে এবং দামও চড়া। চাষাবাদে কম খরচ, কম পরিচর্যা ও লাভজনক হওয়ায় এখানে লটকনের আবাদ বেড়েই চলেছে। লটকন চারা লাগানোর তিন থেকে চার বছরেই ফল ধরে গাছে। রাসায়নিক সার বা কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না। এছাড়া অপ্রচলিত আলু বোখারার চাষও শুরু হয়েছে এখানে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, জুলাই ১, ২০২৪
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।