পার্বত্য জেলা বান্দরবানে সয়াবিন তেলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বেশির ভাগ দোকানে নেই সয়াবিন তেল।
বান্দরবান পৌর এলাকার বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা যায়, কোনো কোনো দোকানে এক ও দুই লিটার সয়াবিন তেলের বোতল দেখা যাচ্ছে। আবার অনেক দোকানে নেই সয়াবিন তেল। তবে বেশির ভাগ দোকানেই নেই ৫ লিটারের তেলের বোতল।
এদিকে সয়াবিন তেলের সংকটের কারণ দেখিয়ে ক্রেতাদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করছেন অনেক ব্যবসায়ী। পবিত্র রমজান শুরুর সময়ে বাজারে তীব্র তেলের সংকটের কারণে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডিলার পর্যাপ্ত পরিমাণ সয়াবিন তেল বাজারে সরবরাহ করতে না পারায় সংকট চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে।
ব্যবসায়ীদের অনেকে অভিযোগ করে জানান, সয়াবিন তেলের ডিলাররা অনেকেই বান্দরবানে চড়া দামে বিভিন্ন মার্কেটে তেল সরবরাহ করছে। ডিলাররা বেশি লাভের আশায় বান্দরবান বাজারে তেল সরবরাহ না করে পার্শ্ববর্তী এলাকা বাজালিয়া, কেরানীহাটসহ বিভিন্ন স্থানে পাচার করছে। যে কারণে বান্দরবানে তীব্র হয়েছে সয়াবিন তেলের সংকট।
বান্দরবান বাজারের পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী বিসমিল্লাহ স্টোরের স্বত্বাধিকারী মো. নাছির বাংলানিউজকে বলেন, ডিলাররা বেশি দামে সয়াবিন তেলের বোতল বান্দরবানের বাইরে বিক্রি করছে। ফলে বান্দরবানে তেলের সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।
একই বাজারের আরেক ব্যবসায়ী আজমীর স্টোরের মালিক জমির উদ্দিন বলেন, ‘গত ১৫ দিন ধরে আমার দোকানে কোনো সয়াবিন তেল বিক্রি করতে পারিনি। ডিলাররা নাম মাত্র সয়াবিন তেলের বোতল সরবরাহ করায় আমরাও সাধারণ ক্রেতাদের চাহিদা মতো দিতে পারছি না।
মমতাজ স্টোরের মালিক মমতাজ উদ্দিন বলেন, ‘আমার দোকানে এক ও দুই লিটারে তেলের বোতল থাকলেও পাঁচ লিটারের বোতল নেই। ডিলাররা আমাদের তেল না দিয়ে বেশি দামে অন্যত্র সরিয়ে ফেলছে। ডিলারদের গুদামে চেক করলে পর্যাপ্ত তেল পাওয়া যাবে, কিন্তু বাজারে তেল নেই। ’
অভিযোগ বিষয়ে সুজন দাশ নামে সয়াবিন তেলের একজন ডিলার বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের প্রতিদিনের চাহিদা ৫০০ লিটার। কিন্তু চট্টগ্রাম থেকে আমাদের প্রতিদিন সরবরাহ করা হচ্ছে মাত্র ১০০ লিটার, যা বাজারে সরবরাহ করছি। চাহিদার থেকে সরবরাহ কম থাকায় বাজারে তেলের এই সংকট।
এদিকে পবিত্র রমজানের শুরুতে বাজারে তেলের সংকটে চিন্তিত ব্যবসায়ী নেতারা। শিগগিরই এ বিষয়ে কার্যকরী ব্যবস্থা নেবে বলে জানান তারা।
বান্দরবান ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. আবু সালেহ চৌধুরী বলেন, বাজারে তেলের সংকট শোনার পর আমরা এ বিষয়ে মনিটরিং করছি।
বাজারে তেলের সংকট মোকাবিলায় প্রশাসন কাজ করছে জানিয়ে বান্দরবান জেলা প্রশাসক (ডিসি) শামীম আরা রিনি বাংলানিউজকে বলেন, যারা বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছেন, তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান শুরু হয়েছে। প্রতিটি দোকানের পাশাপাশি বিভিন্নস্থানে গুদামজাত করে রাখা তেলের গুদামেও অভিযান পরিচালিত হবে। বান্দরবান থেকে কোনো তেল যাতে বেশি দামে আশেপাশের অন্যান্য জেলা-উপজেলায় যেতে না পারে, সেজন্য পুলিশের চেকপোস্টগুলোর নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, ০১ মার্চ, ২০২৫
এসআরএস