ঢাকা, সোমবার, ১৮ ফাল্গুন ১৪৩১, ০৩ মার্চ ২০২৫, ০২ রমজান ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

খুলনায় ইফতারে নানা হালিমের কদর শীর্ষে

মাহবুবুর রহমান মুন্না, ব্যুরো এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৭ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০২৫
খুলনায় ইফতারে নানা হালিমের কদর শীর্ষে

খুলনা: নানা হালিমের স্বাদের জাদুতে আছে ভিন্নতা। খুলনা নগরবাসীর ইফতারিতে এ হালিমের কদর  সবার শীর্ষে।

শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রথম রমজান রোববার (২ মার্চ) দুপুরের পর থেকেই অনেক রোজাদাররা ভিড় করছেন নানা হালিমের দোকানে।

খুলনা মহানগরীর সাউথ সেন্ট্রাল রোডে সরকারি পাইওনিয়ার মহিলা কলেজের সামনে নানা হালিমের একমাত্র বিক্রয়কেন্দ্র। বিক্রি হয় শুধু রমজান মাসেই। নানা হালিমের গুণগত মান, স্বাদ ও  সুগন্ধে মুগ্ধ সবাই। দীর্ঘদিনেও কমেনি চাহিদা, বরং আরও বেড়েছে। নানা হালিম তৈরিতে সোনামুগ ডাল, পোলাও চাল, গম, দেশি ঘি, খাসির মাংস ও নিজস্ব মসলা ব্যবহার করা হয়।

নানা হালিমের মালিকের নাম মো. হজরত আলী (৮১)। ‘নানা’ নামের আড়ালে তার নিজের নাম প্রায় হারিয়েই গেছে। দীর্ঘ ৩৩ বছর ধরে হালিম বিক্রি করছেন তিনি। হালিমের মান ঠিক রাখতে এখনো হজরত আলী নিজ হাতেই রান্না করেন।

মো. হজরত আলী বাংলানিউজকে বলেন, আমি হালিম তৈরি করতে অনেক জিনিস দেই। ভালো খাসি দেই। ডাল, তেল সব আসলটা ব্যবহার করি। বয়সের কারণে আগের মতো পারি না। কয়েকজন সহযোগী রয়েছে। এবার ব্যবসা তেমন হবে বলে মনে হয় না। তবু রোজাদাররা আমার হালিমের অপেক্ষায় থাকে তাই রান্না করেছি। রমজানের প্রথম দিনেই অনেক মানুষ এসেছে হালিম নিতে। বাজারে জিনিস পত্রের দাম বেশি হলেও গতবার যে দামে বিক্রি করেছি এবারও সে দামে বিক্রি করছি।

তিনি জানান, আধা কেজি হালিম ২০০ টাকা এক কেজি ৪০০ টাকা, দেড় কেজি ৬০০ টাকা আর ২ কেজি ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ক্রেতারা জানান, নানা হালিমে ঝাল ও মশলার পরিমাণ সহনীয় এবং ঘরোয়া পরিবেশে রান্নার মতোই। ইফতারে এ হালিম ছোট-বড় সবাই খেতে পারে।

শাহ নেওয়াজ নামের এক ক্রেতা বলেন, খুলনার ইফতারির একটা ঐতিহ্য নানা হালিম। হালিমের স্বাদে জাদু আছে। না খেয়ে মনে হয় ইফতারের কি যেন নেই। দেরি করে আসলে না পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই একটু তাড়াতাড়ি এসেছি। তারপরও এত বড় লাইন।

সরকারি চাকরিজীবী এক ক্রেতা বলেন, ২০১৫ সালে খুলনায় বদলি হয়ে আসা থেকে প্রতি বছর নানা হালিম কিনি। আমরা অপেক্ষায় থাকি কখন রমজান আসবে কখন নানা হালিম কিনবো। নানা হালিমের স্বাদ ও মান খুলনার মধ্যে সবচেয়ে সেরা। যার কারণে এখান থেকেই কিনে থাকি।

এদিকে রমজানে নগরীর রাস্তার মোড়ে মোড়ে ছোট-বড় অনেক ইফতারের বাজার গড়ে উঠেছে। দুপুরের পর থেকেই ক্রেতারা ইফতারের দোকানে ভিড় করছেন। বিক্রেতারাও ব্যস্ত ইফতার তৈরি, একই সঙ্গে ইফতার সরবরাহে। প্রায় প্রতিটি দোকানেই ইফতার একই রকম। আলুর চপ, বেগুনি, পিঁয়াজু, ডিম চপ, শাহী জিলাপি, হালিম, চিংড়ির চপ, পাকোড়া, ছোলা, মুড়ি, সবজি রোল, টিকিয়া, বোরহানি, চিড়া-দই, কলা, আখের রস, মাঠা, চিকেন ফ্রাই এবং এ মৌসুমের তরমুজসহ রকমারি ফল। প্রতিটি দোকানে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।

সড়কের পাশে নানা পদের ইফতারসামগ্রীর রমরমা বাজার। আর এখানকার ইফতারের স্বাদ নিতে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ ছুটে আসছেন। উচ্চবিত্ত থেকে শুরু করে মধ্য ও নিম্নবিত্ত সবারই ভিড় এখানে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০২৫
এমআরএম/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।