এক্সপোর্ট ইমপোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেড’র (এক্সিম ব্যাংক) চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার বাংলানিউজকে দেয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে এ তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, দেশের ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে ৫ কোটি কর্মজীবী।
“এক্সপোর্ট ইম্পোর্ট ব্যাংক অব বাংলাদেশ লিমিটেড” (এক্সিম ব্যাংক) নামে যাত্রা শুরু করেছে ১৯৯৯ সালের ৩ আগস্ট । বর্তমানে বাংলাদেশের অন্যতম একটি শরীয়াহ-ভিত্তিক বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক।
নজরুল ইসলাম মজুমদার ব্যাংকটির চেয়ারম্যান। পাশাপাশি তিনি ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) এর চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করছেন।
রাজধানীর তেজগাঁওস্থ কার্যালয়ে দেয়া সাক্ষাৎকারে নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, বাড়ি নির্মাণ বা ফ্ল্যাট কেনার জন্য সরকারি ব্যাংকগুলো পর্যাপ্ত ঋণ দেয় না। প্রায় সবগুলো বেসরকারি ব্যাংক এখন বাড়ি-গাড়ি ক্রয়ের জন্যও ঋণ দিচ্ছে। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে গ্রাহক বিনাসুদে মাসিক কিস্তিতে টিভি, ফ্রিজ, ফার্নিচার ক্রয় এবং বিদেশ ভ্রমণের জন্য ঋণ নিতে পারছেন। দেশে এখন বেকারের সংখ্যা খুব কম। ছোট ছোট ঋণ নিয়ে অনেকে এখন টং-দোকান, চায়ের দোকান, মুদি দোকান দিয়ে ব্যবসা করছে।

তিনি বলেন, বেসরকারি ব্যাংকের অর্থায়নে দেশে বহু স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এসব ব্যাংক প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দিচ্ছে। এক্সিম ব্যাংক থেকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য দুই হাজার কম্পিউটার বিতরণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার অজপাড়ায় এক্সিম ব্যাংকের একটি শাখা স্থাপন করা হয়েছে। আমার ধারণা ছিল, এটি লাভের মুখ দেখবে না। কিন্তু আমার আশঙ্কা অমূলক প্রমাণ করে দুই বছরের মাথায় শাখাটির আমানত দাঁড়িয়েছে ৪০ কোটি টাকায়। গ্রামের মানুষ এখন সঞ্চয়মুখী হওয়ায় এবং বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা ওই শাখায় জমা হওয়ায় ব্যাংকটির মোট আমানত ৪০ কোটি ছাড়িয়েছে।
নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, মানুষের হাতে এখন টাকা আছে। এমনকি পোশাক কারখানার কোনো শ্রমিকের বেতনও আর ৫ হাজার টাকা নিচে নেই। প্রতিবছর আমাদের দেশ থেকে ৩০ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি হচ্ছে।
‘বেসরকারি ব্যাংকের কুফলের চেয়ে সুফল অনেক বেশি’ বলে দাবি করেন এই ব্যাংক মালিক। খেলাপি ঋণ ব্যাংকিং খাতে কুফল বয়ে আনে একথা সত্য। তবে অনেক সময় ব্যাংক ঋণ নেওয়ার পর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণেও অনেকের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আগুন লাগা, বিদেশি ক্রেতাদের অর্ডার বাতিল করা, পার্টনারদের বিভেদ, শিল্প কারখানা ভাগ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি কারণে অনেকে ঋণখেলাপি হয়ে যান।
তিনি বলেন, গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করে একজন ছেলে বা মেয়ে বেসরকারি ব্যাংকে শিক্ষানবিস হিসেবে চাকুরিতে যোগদান করলেই ১৮-২০ হাজার টাকা বেতন পান। দুই বছর পর যখন কনফার্ম হয় তখন তার বেতন হয় ৩০ হাজার টাকা। ৫ বছর পর একবার পদোন্নতি পেলে বেতন বেড়ে দাঁড়ায় ৫০ হাজার টাকা।
নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে প্রায় ১ লাখ গ্রাজুয়েট চাকরি করছেন। ১ লাখ গ্রাজুয়েটের সরকারি চাকরি পেতে বহু সময় লাগবে। বেসরকারি ব্যাংক ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে তারা স্বচ্ছল জীবন যাপন করছেন। পরিবারের একজন সদস্য ব্যাংকে চাকরি করে ভাইবোনের লেখাপড়া, সংসারের খরচ দিয়ে পুরো পরিবারটাকে বদলে দিতে পারেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৭
এসই/জেএম