ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

আনোয়ারুজ্জামানই কী সিসিকের নতুন মেয়র?

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৩ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২৩
আনোয়ারুজ্জামানই কী সিসিকের নতুন মেয়র?

সিলেট: অপেক্ষার পালা শেষ। বুধবার (২১ জুন) সকাল থেকে পঞ্চমবারের মতো ভোট শুরু হয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশনে (সিসিক)।

সর্বত্রই ভোটের আমেজ। তবে এই আমেজে নেই দুই কিংবদন্তি রাজনীতিবিদ বদর উদ্দিন আহমদ কামরান ও আরিফুল হক চৌধুরী।

সিলেট পৌরসভা সিটি করপোরেশনে উন্নীত হওয়ার পর চারটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ (২১ জুন) চলছে পঞ্চম নির্বাচনের ভোট। অতীতের চারটি নির্বাচনেই মেয়র পদে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে।

প্রথম দুটি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীদের পরাজিত করে টানা দুইবার মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের বদরউদ্দিন আহমদ কামরান। এর মধ্যে প্রথম নির্বাচন হয় বিএনপি সরকারের আমলে এবং দ্বিতীয় নির্বাচন হয় এক-এগারো সরকারের সময়ে।

এরপর আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাকালে অনুষ্ঠিত দুটি নির্বাচনে টানা দু’বার (২০১৩ ও ২০১৮) ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরানকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন বিএনপির আরিফুল হক চৌধুরী। তবে দলের সিদ্ধান্ত মেনে এবার আর প্রার্থী হননি আরিফুল হক। নেই তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বদরউদ্দিন আহমদ কামরানও। তারপরও এবার আওয়ামী লীগের প্রার্থীই সহজ জয় পাবেন বলে মনে করছেন অনেকে।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবার সিসিকে মেয়র পদে মনোনয়ন দিয়েছে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে। বিষয়টি নিয়ে শুরুর দিকে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ থাকলেও, কেন্দ্রের নির্দেশে তারা আনোয়ারের পক্ষেই মাঠে নামেন।

তাই এখন বিএনপির সরে যাওয়া এবং নিজেদের সাংগঠনিক শক্তি দেখিয়ে ১০ বছর পর সিলেট সিটির মেয়র পদ সহজেই পুনরুদ্ধারের আশা করছে আওয়ামী লীগ। দলের নেতারা মনে করছেন, নৌকার জয় আসবে বড় ব্যবধানেই।

এদিকে, উৎসবমুখর পরিবেশে চলছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। এদিন সকাল ৮টা ২০ মিনিটের দিকে পাঠানটুলা শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া কামিল মাদরাসা কেন্দ্রে ভোট দেন নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।

এসময় তার সঙ্গে নেতাকর্মীদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ভোট দেওয়া শেষে হাত উঁচিয়ে বিজয় নিশানা প্রদর্শন করেন তিনি।

নির্বাচনে জয়ের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে আনোয়ারুজ্জামান বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ চলছে। ভোটের পরিবেশ অনেক ভালো। ইনশা আল্লাহ জয় হবে।

তবে ৪২টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণই হচ্ছে। কাউন্সিলর পদে রয়েছেন বিএনপি-জামায়াতের অর্ধশত প্রার্থী। কাউন্সিলর প্রার্থীদের তৎপরতায় ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে নির্বাচনী উত্তাপও তাই বেড়েছে।

কামরান-আরিফের সেই শূন্যস্থানে এবারের সিসিক নির্বাচনে ৮ জন প্রার্থী থাকলেও, শুরু থেকে মূল আলোচনায় আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল।

মেয়র প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগের মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, জাতীয় পার্টির মো. নজরুল ইসলাম (বাবুল), জাকের পার্টির প্রার্থী মো. জহিরুল আলম, স্বতন্ত্র প্রার্থী মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা, মো. শাহ জাহান মিয়া, মো. ছালাহ উদ্দিন এবং মো. আবদুল হানিফ। এছাড়া ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা মাহমুদুল হাসান ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন।  

এছাড়া সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৮৭ জন এবং সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ২৭২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।  

এদিকে বুধবার (২১ জুন) সকাল থেকে পঞ্চমবারের মতো সিসিক নির্বাচনে ভোট উৎসবে মেতে ওঠেন নগর এলাকার ৪২টি ওয়ার্ডের ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন ভোটার। নিজেদের ভোট দিয়ে তারা নির্ধারণ করবেন সিসিকের নতুন পরিষদ, মেয়র-কাউন্সিলর।

এদিন সকাল ৮টা থেকে সিসিকের ১৯০ কেন্দ্রে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচনী কর্মকর্তারা।

সকালে নগরের মীরের ময়দান ব্লু বার্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দিচ্ছেন নারী-পুরুষরা।  

নগর এলাকার ৪২টি ওয়ার্ডের ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন ভোটার এসব কেন্দ্রের এক হাজার ৩৬৪টি গোপন কক্ষে ভোটগ্রহণ চলছে।

নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে ২ হাজার ৬০০ পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট নির্বাচনী মাঠে নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন। এর বাইরেও ৪২টি ওয়ার্ডে একজন করে ৪২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ৭ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন।

সিলেট সিটি করপোরেশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সাল কাদের বলেন, সিসিকের ৪২টি ওয়ার্ডে ১৯০টি কেন্দ্রে একজন করে ১৯০ জন প্রিজাইডিং অফিসার, এক হাজার ৩৬৭ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, ২ হাজার ৭৩৪ জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করছেন। আর এক হাজার ৭৪২টি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে ভোট কেন্দ্রের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে নির্বাচন কমিশন।

তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সবক’টি কেন্দ্রে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১০১৯ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০২৩
এনইউ/এনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।