ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

জেলা পরিষদ নির্বাচন

অর্থ-শিক্ষায় নাসির খান, সম্পদে এগিয়ে মিসবাহুর 

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২২
অর্থ-শিক্ষায় নাসির খান, সম্পদে এগিয়ে মিসবাহুর 

সিলেট: জেলা পরিষদ নির্বাচনে সিলেট ও মৌলভীবাজার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত দুই প্রার্থী।

তারা হলেন- সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. নাসির উদ্দিন এবং মৌলভীবাজারে দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক, সাবেক প্রশাসক মিসবাহুর রহমান।

 তাদের মধ্যে অর্থ ও শিক্ষায় এগিয়ে রয়েছেন অ্যাডভোকেট মো. নাসির উদ্দিন খান। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা এলএলবি।

নগদ অর্থ সম্পদের দিকেও তিনি এগিয়ে রয়েছেন মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের চেয়ে। নিজ ও স্ত্রীর নামে স্থাবর-অস্থাবরসহ সম্পদের পরিমাণ ৫ কোটি ৪৯ লাখ ১৪ হাজার ৭৬০ টাকা।  

আর মৌলভীবাজার জেলা পরিষদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত চেয়ারম্যান মিসবাহুর রহমানের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ মিলিয়ে রয়েছে ২ কোটি ৫৭ লাখ ৫৫ হাজার ১৮৬ টাকা। তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি। তবে অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খানের চেয়ে সম্পদে এগিয়ে আছেন মিসবাহুর। জায়গা জমির দিক থেকে মিসবাহুরের ধারের কাছেও নেই সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়া অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন।

মিসবাহুর হলফনামায় পৈত্রিকভাবে প্রাপ্ত সম্পদের পরিমাণ কয়েক একর দেখালেও এর মূল্য উল্লেখ করেননি। নির্বাচন কমিশনে দুই প্রার্থীর দাখিলকৃত হলফনামায় এসব তথ্য উল্লেখ করেছেন।   

হলফনামা ঘেঁটে দেখা গেছে, অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খানের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। অতীতে জরুরি বিধিমালা ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে হওয়া দুই মামলা উচ্চ আদালতের আদেশে প্রত্যাহার হয়েছে। তার বাৎসরিক আয় বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট/দোকান ভাড়া থেকে ২ লাখ ৫৬ হাজার ৫০০ টাকা। এই খাতে নির্ভরশীলদেরও আয় সমপরিমাণ। অংশীদারী ব্যবসা থেকে ৮ লাখ ৯ হাজার ৭৫০ টাকা এবং এখাতে নির্ভরশীলদের ৬ লাখ ১৭ হাজার ১৩৮ টাকা আয়। আইনপেশা থেকে বছরে আয় দেখিয়েছেন ১২ লাখ ৬২ হাজার টাকা।  

অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে তার নিজ নামে নগদ আছে ৭ লাখ ৩৯ হাজার ৭৫৩ টাকা। স্ত্রীর নামে ১৩ লাখ ৫৫ হাজার ৪১০ টাকা।  

আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বন্ড,ঋণপত্রে নিজ নামে ১ লাখ ৩ হাজার ১৭০ টাকা, ইনস্যুরেন্স কোম্পানিতে আছে ২৩ লাখ ১২ হাজার ৪৫৪ টাকা এবং স্ত্রীর নামে আছে ২১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৩৮ টাকা। রয়েছে ১৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা মূল্যের ২টি কার, স্বর্ণালঙ্কার বিবাহ সূত্রে পাওয়া, ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী দেখিয়েছেন ২৫ হাজার টাকা এবং আসবাবপত্র ২৫ হাজার টাকার।  

এছাড়া অন্যান্যের মধ্যে অংশীদারী ব্যবসায় মূলধন ও অন্যান্য খাতে নিজ নামে ৬০ লাখ ২৯ হাজার ৯০০ টাকা এবং স্ত্রীর নামে আছে ৩৭ লাখ ৭৬ হাজার ৮৪৭ টাকা।

স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে নাসির উদ্দিনের ৬ শতক অকৃষি জমি। যার মূল্য দেখিয়েছেন ৬১ লাখ টাকা। ছয়তলা আবাসিক ভবনের অর্ধেকের মালিক তিনি। এর মূল্য ১ কোটি ৩৭ লাখ ৫০ হাজার ৫০০ টাকা। সমপরিমাণ টাকার সম্পদের মালিক তার সহধর্মীনি। তবে ব্যাংকে কোনো দায়-দেনা নেই।  

এদিকে মৌলভীবাজার জেলা পরিষদে বিনাভোটে নির্বাচিত চেয়ারম্যান মিসবাহুর রহমানের শিক্ষাগত যোগ্যতার স্থলে লিখেছেন এসএসসি। পেশায় ইটভাটার মালিক ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যমুনা এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে ইট, বালু ও পাথর সরবরাহকারী তিনি। ব্যবসা থেকে তাঁর বছরে আয় ১২ লাখ ২৫ হাজার ১০৫ টাকা, ব্যাংকে আমানত আছে ৮ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮১ টাকা এবং সম্মানী বাবদ পান ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৪০০ টাকা।

তিনি অস্থাবর সম্পদ দেখিয়েছেন নগদ ১০ লাখ টাকা, নিজ নামে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে রয়েছে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা, স্ত্রীর নামে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা করা টাকা ১০ লাখ। ৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা দামের হোন্ডা সিআরভি গাড়ি রয়েছে। নিজ নামে স্বর্ণালঙ্কার ৯০ হাজার টাকার এবং স্ত্রীর নামে আছে ২০ ভরি স্বর্ণ, ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার, আসবাবপত্র রয়েছে নিজ নামে ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা এবং স্ত্রীর নামে ২ লাখ টাকার।

স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে পৈত্রিক সূত্রে কৃষি জমি ২ দশমিক ৩৭২৩৯ একর, ২ দশমিক ৯৯ একর। ২৯ হাজার টাকা আগের ক্রয়মূল্যের অকৃষি রয়েছে এক দশমিক ৩২১০২ একর। রয়েছে দোতল আবাসিক ভবন। মায়ের কাছ থেকে প্রাপ্ত বাড়ির জায়গা ২২ দশমিক ৬৮ ডিসিমেল।

দায়-দেনা ব্যাংকে না থাকলেও আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে ঋণ দেখিয়েছেন ৯৫ লাখ টাকা। তার বিরুদ্ধে করাত কল লাইসেন্সের জন্য বন আইনে মামলা হয়। গত বছর এই মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন তিনি।  

জেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী গত ১৮ সেপ্টেম্বর বাছাই প্রক্রিয়া শেষে সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলা পরিষদে উভয় প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন সংশ্লিষ্ট রিটানিং কর্মকর্তা। তাই একক প্রার্থী হিসেবে বিনাভোটে তারা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এখন বাকি রইল কেবল আনুষ্ঠানিকতা।  

আগামী ১৭ অক্টোবর দেশের ৬১টি জেলা পরিষদের ভোট অনুষ্ঠিত হবে। তবে সিলেট ও মৌলভীবাজারে কেবল সংরক্ষিত ও সাধারণ সদস্যরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।  

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০২২
এনইউ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।