ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

জাতীয় নির্বাচনে ভোটকক্ষ বাড়ানোর প্রস্তাব

ইকরাম-উদ দৌলা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০২২
জাতীয় নির্বাচনে ভোটকক্ষ বাড়ানোর প্রস্তাব

ঢাকা: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা না বাড়িয়ে বরং ভোটকক্ষ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপাররা (এসপি)। একই সঙ্গে জ্বালানি খরচ ও নির্বাহী হাকিমদের ভাতা বাড়ানোর সুপারিশও করেন তারা।

শনিবার (৮ অক্টোবর) নির্বাচন ভবনের অডিটোরিয়ামে নির্বাচন কমিশন (ইসি) আয়োজিত বৈঠকে অংশ নিয়ে এ প্রস্তাব করেন ডিসি-এসপিরা। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনিনরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব আক্তার হোসেন, অতিরিক্ত আইজিপি আতিকুল ইসলামসহ ইসি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব আক্তার হোসেন বৈঠকের পর জানিয়েছেন, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে আমরা মাঠপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে বলেছি। জনগণের জন্য যেন মৌলিক অধিকার সঠিকভাবে সংরক্ষণ হয় তা নিশ্চিত করতে বলেছি। পক্ষপাতমুলক কার্যক্রম হচ্ছে, এমন ভ্রান্ত ধারণা তৈরি না হয় সেটি লক্ষ্য রাখা ও বিশেষ করে জাতীয় নির্বাচনে ভোট সুন্দরভাবে করার কথাও বলা হয়েছে।

আক্তার হোসেন বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ৪০ হাজারের মতো ভোটকেন্দ্র ছিল। আগামী নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র বেড়ে প্রায় ৪৩ হাজারের ওপরে হয়ে যাচ্ছে। আমরা বলেছি কমিশন যেন নির্দেশনা দেন, জেলা প্রশাসন-পুলিশ প্রশাসনসহ মাঠ প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধি সবাইকে সঙ্গে নিয়ে ভোট কেন্দ্র পরিদর্শনের। আর যে জায়গাগুলায় সুরক্ষিতভাবে ভোটগ্রহণ করা যাবে সেটা রেখে যেখানে অপ্রয়োজনীয় ভোট কেন্দ্র রয়েছে সেগুলোর পরিবর্তে প্রতিটি ইউনিয়নে যৌক্তিক সংখ্যক ভোট কেন্দ্র নির্ধারণ করার কথা বলেছি। যাতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঠিকভাবে মোতায়েন করা যায়।

তিনি বলেন, একটি ইউনিয়নে ৯/১০টি বা তার থেকেও বেশি ভোট কেন্দ্র রয়েছে। নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের যে সংখ্যা তাতে পর্যাপ্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা যায় না। এজন্য আমরা চাচ্ছি ভোট ভেন্যুর সংখ্যা কমিয়ে ভোটকক্ষের বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য। এখন যেহেতু যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে, কাজেই ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করে যৌক্তিক সংখ্যক করা হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হবে।

সিনিয়র সচিব আরও বলেন, নির্বাচন কমিশনের যেকোনো পর্যায়ের ভোট সঠিকভাবে করার জন্য আদেশ নির্দেশ বাস্তবায়নে জননিরাপত্তা বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কোনো রকমের পক্ষপাতমুলক আচরণ যেন না হয় তা আমরা নিশ্চিত করবো। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাঠ প্রশাসনে রদবদল হয় না; এটি রুটিন ওয়ার্ক। কিছুদিন আগে পদোন্নতির কারণে আমরা ৪০টি জেলায় নতুন এসপি নিয়োগ দিয়েছি। ওই এসপিদের আমরা নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে বলেছি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হয়রানিমুলক মামলার সুযোগ নেই। এর প্রশ্নই নেই। আমরা কখনো এ ধরনের নির্দেশ দেব না।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় আইজিপি বৈঠকে অংশ নিতে পারেননি। পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি বলেন, নির্বাচনের সময় ইসির অধীনে পুলিশ প্রশাসন কাজ করে থাকে। কারও বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পুলিশের ভূমিকা ২০১৮ সালের নির্বাচনের মত থাকবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত আইজিপি বলেন, নির্বাচন কমিশন আমাদেরকে যেভাবে দায়িত্ব পালন করতে বলেন। সেইভাবে দায়িত্ব পালন করবো।

জ্বালানি ও ভাতা বৃদ্ধি নিয়ে আপত্তি, হইচই
বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, জ্বালানি খরচ ও নির্বাহী হাকিমদের ভাতা বাড়ানোর সুপারিশ হলে উষ্মা প্রকাশ করেন নির্বাচন কমিশনার আনিসুর রহমান। একই সঙ্গে গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচন ও জেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি আচরণ বিধি প্রতিপালনে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করার বিষয়টি তুলে ধরেন। প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তাদের অনেকে এ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে হইচই করতে থাকেন। এক পর্যায়ে এই কমিশনার ডায়াস ছেড়ে নিজ আসনে ফিরে যান। এ নিয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সভাশেষে সিইসি ব্রিফিং করেছেন। আর কিছু বলার নেই।

বাংলাদেশে সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০২২
ইইউডি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।