ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন

পঞ্চগড় থেকে জনি হক

দিনে ভোটযুদ্ধের উত্তাপ, রাতে শীতের প্রকোপ

জনি হক, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৫
দিনে ভোটযুদ্ধের উত্তাপ, রাতে শীতের প্রকোপ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

পঞ্চগড় থেকে : পঞ্চগড়কে বলা হয় ‘হিমালয় কন্যা’। তাই এখানে শীতের প্রকোপ থাকাটা স্বাভাবিকই।

দিনে সূর্যের মুখ দেখা ‍যায় বলে এখানে তাপমাত্রা থাকে সহনীয় পর্যায়ে। আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনের সুবাদে ভোটযুদ্ধের উত্তাপ সেটাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে খানিকটা হলেও। মাইকিং, প্রচারণার ছোটাছুটি, জটলা বেঁধে আড্ডা ও আলোচনা, বাড়িতে বাড়িতে দলবল নিয়ে প্রার্থীদের উপস্থিতি- সব মিলিয়ে দিনভর বয়ে যাচ্ছে নির্বাচনী গরম হাওয়া।
 
অবশ্য সকাল-দুপুর তেমন ঠাণ্ডা গায়ে না লাগলেও বিকেল গড়াতেই বইতে থাকে হিমেল হাওয়া। আর রাতে পড়ে ঘন কুয়াশা। ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসে জেঁকে বসে শীত। সন্ধ্যা থেকেই গৃহিণী কিংবা বয়স্করা লেপ, কম্বল, কাথার ভেতর মুড়িয়ে রাখছেন নিজেকে। রাতে প্রচণ্ড শীতে জড়োসড়ো হয়ে পড়ছেন সবাই।

শীতের তীব্রতায় পথে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা গেলো অনেককে। শীতের চাদর মুড়ি দিয়ে পাহাড়ের লতাপাতা কিংবা খড়কুটো কুঁড়িয়ে ক’জন মিলে বসে আগুন পোহানোর চিত্র দেশের অন্যান্য জায়গার মতোই এখানে চেনা।
 
জেলা শহরটিতে পৌষের শুরু থেকেই বেড়েছে শীতের প্রকোপ। রাত যতো গভীর হয়, শীতের তীব্রতা ততো বাড়ে। রাতের গভীরতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়ে যায় হিমেল হাওয়ার মাত্রা।

বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) পঞ্চগড়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ১২ ডিগ্রি। সকাল ৭টায় তাপমাত্রা ছিলো ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে। সময় গড়ানোর সঙ্গে তা বেড়েছে। সকাল ৮টায় ১৫ ডিগ্রি, সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ১৭ ডিগ্রি, ১১টায় তা বেড়ে ২০ ডিগ্রি, দুপুর ১২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ২১ ডিগ্রি থাকলেও বিকেল ৫টায় তা নেমে আসে ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

এদিন সূর্য ডুবেছে বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে। সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টা পর্যন্ত ১৬ ডিগ্রি, রাত ৮টা থেকে ৯টা অবধি ১৪ ডিগ্রি আর রাত ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ছিলো ১৩ ডিগ্রি। রাত ১২টা থেকে সকাল (বৃহস্পতিবার) ৬টা অবধি তাপমাত্রা ছিলো ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে। বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) সূর্যোদয় হয়েছে সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে।
 
সরেজমিনে বুধবার সকাল থেকে রাত অবধি পঞ্চগড় পৌর এলাকায় ঘুরে নানান চিত্র দেখা গেছে। দিনে যেমন কুয়াশায় ঢাকা থাকছে চারপাশ, তেমনি রাতে বাড়ছে ঠাণ্ডা। কনকনে ঠাণ্ডা আর হিমেল হাওয়া বাড়লেই কমে যাচ্ছে মানুষের স্বাভাবিক চলাচল। রাস্তাঘাটে মানুষের উপস্থিতি তখন স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম দেখা যায়। নিতান্তই প্রয়োজনে বের হলেও সবাই শীতে জড়োসড়ো হয়ে থাকছেন। শহরের দোকানগুলোতে দেশি-বিদেশি গরম কাপড় বিক্রি হচ্ছে ভালো।
 
শীতের ভোরে ঘুম ভাঙলেই দেখা যায় প্রকৃতি কুয়াশাচ্ছন্ন। সবুজ ঘাসে জমে আছে বিন্দু বিন্দু শিশির। কুয়াশা কমে গিয়ে রোদ উঠলেই শীতের তীব্রতা কমে যায় এখানে। কুয়াশা দীর্ঘসময় না থাকায় বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) উপভোগ করা গেলো রৌদ্রধোঁয়া প্রকৃতি। সকালবেলার মিষ্টি রোদ, খেজুর গাছে রসের হাড়ি, খেজুর গুড়, রসের পিঠা- সবই শীত ঋতুর অলঙ্কার!
 
শীত জবুথবু করে দিলেও হিম-কুয়াশার ধূসর চাদর জ্যোৎস্নায় মিশে যাওয়ার দৃশ্য অতুলনীয় মনে হয়। হুমায়ূন আহমেদের ভাষায়, ‘কিছু কিছু সৌন্দর্যের ছবি হয় না। এগুলো চোখ দিয়েই উপভোগ করতে হয়। ’ শীতে বিশাল মাঠে বা ক্ষেতের পাশে দাঁড়িয়ে থাকলে জ্যোৎস্নার রূপ দেখা যায়। কবিদের লেখনীতেও এসেছে শীতের সৌন্দর্য। জীবনানন্দ দাশ ‘শীত রাত’ কবিতায় লিখেছিলেন- ‘এইসব শীতের রাতে আমার হৃদয়ে মৃত্যু আসে; বাইরে হয়তো শিশির ঝরছে, কিংবা পাতা, ...এদিকে কোকিল ডাকছে– পউষের মধ্যরাতে...’।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৯০৫  ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৫
জেএইচ/জেডএস

** প্রার্থীদের মার্কা যখন বিনোদনের খোরাক!

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।