ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

‘রুদ্ধদ্বার খুলুক সংগীতে’

সুনীল বড়ুয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৩
‘রুদ্ধদ্বার খুলুক সংগীতে’

কক্সবাজার: সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা শিল্পীরা জড়ো হতে থাকেন কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রাঙ্গণে। কর্মব্যস্ত এ জীবনে একে অপরের সঙ্গে কুশল বিনিময় মুহূর্তেই যেন প্রাণের স্পন্দন ছড়িয়ে পড়লো অনুষ্ঠান জুড়ে।

একসঙ্গে এত শিল্পীর মিলনমেলায় যেন আনন্দের কমতি ছিল না।

শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিনব্যাপী নবগঠিত কক্সবাজার জেলা সংগীত শিল্পী পরিষদের অভিষেক ও মিলনমেলার আয়োজন করে সংগঠনটি।

‘রুদ্ধদ্বার খুলুক সংগীতে’ এ প্রতিপাদ্যে কক্সবাজার সাংস্কৃতিক মিলনমেলায় জেলার নয় উপজেলার তিন শতাধিক সংগীত শিল্পী অংশ নেন।

সকালে কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) সাইমুম সরওয়ার কমল। বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষন কান্তি দাশ।  

এর আগে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র থেকে শুরু হয়ে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়। পরে সমস্বরে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে দেশের প্রতি শ্রদ্ধা জানান শিল্পীরা।

সংগঠনের সভাপতি কক্সবাজার বেতারের সংগীত প্রযোজক বশিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. ওমর ফারুক, কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. মুজিবুল ইসলাম প্রমুখ।

এছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ফরমান রেজা, সিনিয়র শিল্পী রায়হান উদ্দিন, আবু হায়দার ওসমানী, আলম শাহ, তালেব মাহমুদ, মানসী বড়ুয়া, উৎপলা বড়ুয়া,মিনা মল্লিকসহ তিন শতাধিক শিল্পী অনুষ্ঠানে অংশ নেন।  

দুপুর দেড়টার দিকে শুরু হয় উপজেলা ভিত্তিক পরিবেশনা। 'যাত্রা শুরু হল রে ভাই যাত্রা শুরু হল, কক্সবাজার জেলা শিল্পী পরিষদের' সমবেত কণ্ঠে এ গানটি নিয়ে প্রথমেই মঞ্চে আসেন চকরিয়া উপজেলার শিল্পীরা। এর পর গান পরিবেশন করেন খ্যাতনামা শিল্পী শরণ বড়ুয়া। তিনি গেয়েছেন, ‘কত যে তোমাকে ভেসেছি ভালো, সে কথা তুমি যদি জানতে' গানটি।

এরপর মঞ্চে আসেন চকরিয়ার শিল্পী ও সংগঠক দ্বীপলাল চক্রবর্তীর নেতৃত্বে চকরিয়া উপজেলা দল। দেশের গানে বাঁশিতে সুর তুলেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব বংশীবাদক ওমর ফারুক ও কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( প্রশাসন) ও বংশীবাদক মো. রফিকুল ইসলাম।  

শিল্পী সমীর শীলের নেতৃত্বে কুতুবদিয়ার শিল্পীরা গেয়ে শুনান, ‘কুতুবদিয়া আঁর বাড়ি ফঅরি নজাইয়, জাইবার সমত আঁরও ঘাড়ত সাম্পান ভিড়াইও। ’ 

অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের বিখ্যাত শিল্পী কুতুবদিয়ার সন্তান আলা উদ্দিন তাহের মঞ্চ মাতান পর পর দুটি গান গেয়ে। তার শেষ গান ছিল- আঞ্চলিক গানের সম্রাজ্ঞী শিল্পী বুলবুল আকতারের গাওয়া- ‘অ হালা ছান গলার মালা পেট পুরেদ্দে তোয়ারলাই। ’ এ সময় শিল্পী মঞ্চে ডেকে নেন গানটির মূল শিল্পী বুলবুল আকতারকে। গানটি দ্বৈতকণ্ঠে গেয়েছেন তারা। ‘মাইট্ট্যা গুদাম টইনর ছানি, ঝরঝরাইয়া পরের পানি। ’

বিভাস সেন গুপ্ত ও মানসী বড়ুয়ার নেতৃত্বে ‘মৃত্যুর উত্তার সমুদ্র পেরিয়ে’ ও ‘লাঞ্ছিত নিপীড়িত জনতার জয়’ পর পর দুটি গণসংগীত পরিবেশন করে রামুর শিল্পীরা। এরপর কি সুন্দইর্য্যা সৈকত নগরী হকসবাজার সমবেত কণ্ঠে এ গানটি পরিবেশন করেন কক্সবাজারের শিল্পীরা। এছাড়া অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন আঞ্চলিক গানের সম্রাজ্ঞী বুলবুল আকতার, শিল্পী মেরী, মিন্টু ব্যানার্জী।

সংগঠনের সভাপতি বশিরুল ইসলাম বলেন, কক্সবাজার জেলায় অন্তত চার শতাধিক সংগীত শিল্পী রয়েছেন। কিন্তু সংগীতের শিল্পীদের এক জায়গায় আসার মতো এতদিন কোনো প্ল্যাটফর্ম ছিল না। আমরা সংগঠনের মাধ্যমে চেষ্টা করবো জেলার শিল্প সংস্কৃতির প্রসারের পাশাপাশি শিল্পীদের কল্যাণে কাজ করার।

অনুষ্ঠানের শেষ আকর্ষণ ছিল র‌্যাফেল ড্র।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৩
এসবি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।