ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিনোদন

শেখ হাসিনাকে ‘আদর্শ মা’ সম্বোধন করে জয়ের সেই চিঠি ফের ভাইরাল

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৪
শেখ হাসিনাকে ‘আদর্শ মা’ সম্বোধন করে জয়ের সেই চিঠি ফের ভাইরাল

অভিনেতা ও উপস্থাপক শাহরিয়ার নাজিম জয় ও সমালোচনা একে অপরের পরিপূরক। বিভিন্ন অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় বিতর্কিত প্রশ্নের উপস্থাপন করে ও নানান ধরনের মন্তব্য করে প্রায়শই সমালোচিত হন জয়।

 

অনেকের মতে, নিজের অনুষ্ঠানের ভিডিওর ভিউ বাড়াতে সচেতনভাবেই সমালোচনা বা বিতর্কে জালে জড়ান তিনি।

তাছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে একেবারেই নির্লিপ্ত থেকে সমালোচনা ও ধিক্কারের মুখে পড়েন জয়। এজন এক ভিডিও বার্তায় জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন তিনি।

তবে এবার কোনো বক্তব্য বা বিতর্কিত প্রশ্ন দিয়ে নয়; সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘আদর্শ মা’ সম্বোধনে এক চিঠি লেখার জেরে ফের সমালোচনার মুখে পড়লেন এ অভিনেতা-উপস্থাপক।  

চিঠিটি অবশ্য ২০১৪ সালের। পূর্বাচলে এক খণ্ড জমি পাওয়ার আশায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীকে উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ নেত্রী ও আদর্শ মা বলে সম্বোধন করে সেই চিঠি লিখেছিলেন জয়। সেই চিঠির একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো ভাইরাল। এর আগেও ভাইরাল হয়েছিল চিঠিটি।

চিঠিটি শেয়ার দিয়ে শাহরিয়ার নাজিম জয়কে নিয়ে নানা ধরনের নেতিবাচক মন্তব্য চলছে ফেসবুকে। অনেকে বিষয়টি নিয়ে বেশ মজাও করছেন নেটদুনিয়ায়।

পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দ চেয়ে কী লেখা রয়েছে জয়ের সেই চিঠিতে?

শুরুতেই শেখ হাসিনাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ নেত্রী ও আদর্শ মা’ সম্বোধন করেছেন শাহরিয়ার নাজিম জয়।

এরপর তিনি লিখছেন, ‘আপনার সুযোগ্য পুত্রের নামের আরেক পুত্র শাহরিয়ার নাজিম জয়ের সালাম রইল আপনার প্রতি। আমি জয়, বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় নায়ক (টিভি ও চলচ্চিত্র)। আপনার দোয়ায় গত ১৭ বছর ধরে আমি বাংলাদেশের জনগণের বিনোদনের অন্যতম উৎস হয়ে আছি টিভি পর্দায় এবং সুস্থ চলচ্চিত্রে। ’

শেখ হাসিনার রাজনীতির প্রশংসা জানিয়ে জয় লেখেন, ‘আপনি অত্যন্ত দরদি এবং বাংলার মানুষের বিপদের বন্ধু। শুধু তাই নয়, গত নির্বাচনকালীন সময়ে আপনি যে বলিষ্ঠ সাহসী এবং জ্ঞানদীপ্ত আদর্শের উপর বলীয়ান ছিলেন, তা আমাদের মতো মানুষকে আজীবন আপনার নেতৃত্বকে স্যালুট জানানোর অঙ্গীকার করিয়েছে। ’

আবেদনের তৃতীয় প্যারায় তিনি নিজের চাওয়া স্পষ্ট করেন। তিনি লেখেন, ‘মা, আপনার নিকট একজন শিল্পীর আবেদন, আমার সমসাময়িক সকল শিল্পীই পূর্বাচলে ১০ কাঠা, ৫ কাঠার প্লট পেয়েছে। আমি দেশের বাইরে শুটিংয়ে থাকার জন্য অ্যাপ্লাই করতেই পারিনি। পরবর্তীতে ঝিলমিলে অ্যাপ্লাই করলে লটারিতে তা পাইনি। ’

আবেদনপত্রটি তিনি শেষ করেছেন পূর্বাচলে একটি প্লটের জোরালো দাবি জানিয়ে। তিনি লেখেন, ‘মা, পূর্বাচলে একটা জমি আমার স্বপ্ন- আমার সন্তানের ভবিষ্যৎ। আমি আপনার কাছে আবদার করলাম, আপনি আপনার এই সন্তানের আবদার ফেলে দেবেন না আমি জানি (ইনশাআল্লাহ)। ’

ওই আবেদনপত্রে জয়ের ছবির পাশে তৎকালীন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেনের সিলও রয়েছে। সুপারিশকারী হিসেবে তৎকালীন যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়ের স্বাক্ষরও রয়েছে।

প্লট বরাদ্দের সেই চিঠির বিষয়ে শাহরিয়ার নাজিম জয়ের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।  

উল্লেখ্য, সম্প্রতি বেশ বিপাকে রয়েছেন শাহরিয়ার নাজিম জয়। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা করে তাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে কদিন আগেই জয়সহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।  

এরই মধ্যে শেখ হাসিনার স্তুতি গেয়ে জয়ের সেই চিঠি ফের ভাইরাল হলো।

অবশ্য এবারই প্রথম নয়; ২০১৯ সালের মার্চের শেষদিকেও ভাইরাল হয়েছিল সেই চিঠি।  

সেসময় বনানীতে একটি বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পানির পাইপ চেপে ধরে হিরো বনে যায় রাজধানীর কড়াইল বস্তির শিশু নাঈম ইসলাম। তার এমন কাজে খুশি হয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এক বাংলাদেশি তাকে পাঁচ হাজার ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেন।  

এ ঘটনায় আলোচনায় আসার পর টিভি উপস্থাপক ও অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয় ওই শিশুর একান্ত সাক্ষাৎকার নেন।  

সাক্ষাৎকার নাঈম পুরস্কারের সেই টাকাগুলো এতিমখানার অনাথ শিশুদের জন্য দান করতে চায়।

এতিমখানায় কেন টাকা দিতে চায় এমন প্রশ্নের উত্তরে নাইম বলে, কয়েক বছর আগে খালেদা জিয়া এতিমের টাকা লুট করে খেয়েছে। তাই এই টাকা সে এতিমদের দিতে চায়।

শিশু নাঈমের মুখ থেকে এ ধরনের বক্তব্য অনুষ্ঠানের পূর্বে জয়ের শিখিয়ে দেওয়া বলে দাবি করেন অনেকে। এ নিয়ে সমালোচনার জেরে জয়ের সেই চিঠিটি ভাইরাল হয়ে পড়ে ফেসবুকে।

এদিকে, গত ২৬ আগস্টের করা মামলার বিষয়ে আত্মপক্ষ সমর্থন করেছেন জয়।  

তিনি বলেন, ‘মামলার ঘটনায় খুব দুঃখ পেয়েছি। জীবনে কখনো কাউকে গায়ে হাত দেওয়ার সাহস পাইনি। কারও সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদেও যাইনি। সেখানে এমন একটি ঘটনায় আমি মর্মাহত। আমার পরিবারের মানুষ চিন্তিত হয়ে পড়েছে। ২০১৫ সালের ১৫ এপ্রিল আমি শুটিংয়ের কাজে নেপালে ছিলাম। ’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তার নিষ্ক্রিয় ভূমিকার বিষয়েও বক্তব্য দিয়েছেন জয়। তিনি বলেছেন, ‘ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা না রাখতে পারার জন্য জাতির কাছে আমি নিঃশর্ত ক্ষমা চাই। ক্ষমার চেয়ে বড় গুণ আর কিছু নাই। আপনারা নিশ্চয়ই আমাকে ক্ষমা করবেন। ’

২০০৭ সালে ‘গোধূলি লগ্নে’ নাটক দিয়ে টেলিভিশন পর্দায় অভিষেক হয় শাহরিয়ার নাজিম জয়ের। অভিনয় করেছেন সিনেমায়ও। এ ছাড়া এটিএন বাংলার সেলিব্রিটি টকশো ‘সেন্স অব হিউমার’, এশিয়ান টিভির ‘কমনসেন্স’, একুশে টেলিভিশনের ‘উইথ নাজিম জয়’ অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা করেছেন। বর্তমানে তিনি চ্যানেল আইয়ে ‘৩০০ সেকেন্ড’ নামের অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৪
এসএএইচ          

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।