ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

উপকূল থেকে উপকূল

উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন উদ্বোধনের অপেক্ষায় ইউএনও

রফিকুল ইসলাম, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৩৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৩
উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন উদ্বোধনের অপেক্ষায় ইউএনও

উপকূল ঘুরে: উদ্বোধন হয়নি উপজেলা পরিষদের নতুন কমপ্লেক্স ভবন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয় এখনও তাই পুরনো ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে। প্রায় তিন মাস আগে পরিষদের অন্য দপ্তরসমূহ নতুন ভবনে স্থানান্তর করা হলেও যেতে পারছেন না ইউএনও।

উদ্বোধনের অপেক্ষা মাসের পর মাস, কবে প্রধানমন্ত্রী কিংবা অন্যকোনো মন্ত্রী সময় করে ভবনটি উদ্বোধন করে যাবেন।

এ চিত্র লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা পরিষদের। শহর থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে বিশাল এলাকা জুড়ে পরিষদের নতুন ভবন নির্মিত হলেও ইউএনও কার্যালয়টি এখনও হাজিরহাট হামিদিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কাম সাইক্লোন শেলটারে। ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় সূত্র বলছে, এই ভবনটি ২০১০ সালে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল আওয়াল বাংলানিউজকে বলেন, ভবনটি পরিত্যক্ত নয়, তবে ঝুঁকিপূর্ণ। নতুন ভবনে কিছু কাজ অসমাপ্ত থাকায় সেখানে কার্যালয় স্থানান্তর করা যাচ্ছে না। তবে অন্য দপ্তরসমূহের কাজ চলছে সেখানে। অচিরেই আমার কার্যালয় সেখানে নেওয়া হবে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, হাজিরহাট হাফিজিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কাম সাইক্লোন শেলটারের একটি কক্ষে চলছে কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়। সাইক্লোন শেলটারের সামনে টাঙানো নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের ক্ষয়ে যাওয়া সাইনবোর্ডটি ঝুলছে। একই ভবনের আরেক কক্ষে রয়েছে হাফিজিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষের কার্যালয়। সাইক্লোন শেলটারটির পাশে আরেকটি ভবনে উপজেলা পরিষদের অন্যান্য দপ্তরসমূহের কার্যক্রম চলেছে দীর্ঘদিন। ওই দপ্তরগুলো প্রায় তিন মাস আগে নতুন ভবনে স্থানান্তর করা হয়েছে।

সূত্র বলছে, কমলনগর উপজেলা প্রতিষ্ঠার প্রায় ৫ বছর পর ২০১২ সালের শেষের দিকে উপজেলা পরিষদের নতুন ভবন নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে ভবনটি উদ্বোধনের প্রত্যাশা ছিল সংশ্লিষ্টদের। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকাকালে একবার সাহারা খাতুনের এটি উদ্বোধনের জন্য আসার কথা ছিল। কিন্তু সে কর্মসূচি বাতিল হয়।    

একদিকে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হচ্ছে না, অন্যদিকে জরাজীর্ণ ভবনে উপজেলা পরিষদের কার্যক্রম চালাতেও অসুবিধা হচ্ছিল। সে কারণে অন্য দপ্তরগুলো নতুন ভবনে নিয়ে শুধু ইউএনও কার্যালয়টি পুরানো ভবনে রাখা হয়েছে। তবে ইউএনও’র সভাপতিত্বে উপজেলা পরিষদের সভাসমূহ নতুন ভবনের সভাকক্ষেই অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলার নাম কমলনগর হলেও ‘কমলনগর’ নামে কোনো এলাকার নাম নেই এখানে। সাবেক রামগতি উপজেলার একটি ছোট বন্দর হাজিরহাট নামক স্থানে স্থাপিত হয় এই উপজেলা সদর। বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার আমলে সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বাল্যনাম ‘কমল’ অনুসারে নতুন উপজেলা ‘কমলনগর’-এর ঘোষণা দেওয়া হয়। ২০০৬ সালের ৬ জুন নতুন এই উপজেলা প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেওয়া হয়, দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু হয় ২০০৮ সাল থেকে।

সূত্র বলছে, লক্ষীপুরের রামগতি উপজেলাটি আয়তনে অনেক বড় ছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাসহ প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনায় অনেক সমস্যা হতো। সে কারণে বিচ্ছিন্ন জনপদ হাজিরহাট এলাকার আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের সুবিধার্থে এখানে থানা প্রতিষ্ঠার দাবি ওঠে। দাবির প্রেক্ষিতে ১৯৯৬ সালে হাজিরহাট পুলিশ তদন্তকেন্দ্র স্থাপিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় পূর্নাঙ্গ থানা প্রতিষ্ঠার দাবি তোলেন এলাকাবাসি। ওই দাবির প্রেক্ষিতে তৎকালীন সরকার রামগতি থেকে ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে কমলনগর উপজেলা গঠন করে। পরে ৫টি ইউনিয়নকে পূনর্বিন্যাস করে ৯টি করা হয়।

এলাকার সাংসদ আশরাফ উদ্দিন নিজান বাংলানিউজকে বলেন, মেঘনার ভাঙন এলাকা থেকে অনেক দূরে বিশাল এলাকা নিয়ে উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। তবে, কবে এ ভবনের উদ্বোধন হবে আমার জানা নেই।

বাংলাদেশ সময়: ০৩২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৩
আরআইএম/টিকে/জেসিকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।