ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

সুন্দরবনে বাঘ গণনা কার্যক্রম স্থগিত

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৩
সুন্দরবনে বাঘ গণনা কার্যক্রম স্থগিত

মংলা (বাগেরহাট): বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় সুন্দরবনে ক্যামেরা মনিটরিংয়ের মাধ্যমে বাঘ গণনা কার্যক্রম স্থগিত হয়ে গেছে।

বন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রোববার থেকে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও কিছু অসুবিধার কারণে এই কার্যক্রম আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।



কর্মকর্তারা আরও জানান, এখন বাঘ মনিটরিংয়ের জন্য সুন্দরবনের কোন কোন এলাকায় ক্যামেরা স্থাপন করা হবে তা নির্ধারণ করা হবে। তবে কবে নাগাদ করা হবে তা জানাতে পারেননি প্রকল্প পরিচালক।
 
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হওয়ার পরেও কেন এটি স্থগিত করা হল তা তারা জানেন না।

তিনি আরও জানান, বাঘ বিলুপ্তি রোধের অংশ হিসেবে এ প্রকল্পের মাধ্যমে বনের মধ্যে ক্যামেরা স্থাপন করে ছবি ধারণের মাধ্যমে বাঘের সঠিক সংখ্যা নির্ধ‍ারণ করার কথা ছিল। এ ধরনের প্রকল্প সুন্দরবনে এই প্রথম।

ইনফ্লারেড নামক ৮৯টি ক্যামেরা এ বাঘ গণনায় ব্যবহৃত হবে। একটি ক্যামেরা তিনশ বর্গকিলোমিটার এলাকার ছবি ধারণ করতে পারবে। একটি পয়েন্টে অটোমেটিক ক্যামেরার অবস্থানকাল হবে ২০ দিন। এজন্য ২০১৪ সালের  জুন পর্যন্ত  সময় লাগবে।

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, ক্যামেরায় ধারণকৃত ছবিগুলো বিশেøষণের পর সুন্দরবনের বাঘের সঠিক  সংখ্যা নিরুপণ করা যাবে।

জানা গেছে, সর্বশেষ শুমারি অনুযায়ী সুন্দরবনে ৪৪০টি বাঘ রয়েছে। কিন্তু সুন্দরবনে লোকজন ও শিকারীদের হামলা, বন্যার কারণে বাঘের মৃত্যু ও পাচারের ফলে সুন্দরবনে বাঘের অস্তিত্ত্ব বিপন্ন হতে চলেছে। এ কারণে বাঘ রক্ষায় বিভিন্ন উদ্যোগে কাজ শুরু হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ক্যামেরার মাধ্যমে বাঘ গণনা করার কথা ছিল।

এ বিষয়ে পূর্ব সুন্দরবনের চ‍াঁদপাই রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. খলিলুর রহমান জানান, বাঘ কখন এবং কোথায় গণনা করা হবে এ সম্পর্কে  অফিসিয়ালি তার দপ্তরে কোনো চিঠি না আসায় তিনি কিছুই জানেন না।
 
খুলনার বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন সংরক্ষক (ডিএফও) জহির উদ্দিন জানান, বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় সুন্দরবনে বাঘ মনিটরিং কার্যক্রম রোববার থেকে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা স্থগিত হয়ে গেছে।

তিনি এর বেশিকিছু জানেন না দাবি করে বিস্তারিত জানতে প্রকল্প পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।

প্রকল্প পরিচালক (সিএফ) তপন কুমার দে’র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বাঘ গণনার কাজ এই মূহুর্তে তারা করছেন না। এখন শুধু কোন এলাকাতে ক্যামেরার মাধ্যমে বাঘ গণনা করা হবে সে এলাকা নির্ধারণের কাজ করবেন। তবে কবে নাগাদ এলাকা নির্ধারণ করা হবে তা তিনি বলতে পারেননি।
 
জানা গেছে, বিশ্বব্যাংক এই প্রকল্পের জন্য চলতি অর্থবছরে ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। ওয়ার্ল্ড লাইফ ইন্সটিটিউট অব ইন্ডিয়ার সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. ওয়াই বি ঝালা ও একই প্রতিষ্ঠানের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. কামাল কোরাইশির নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ একটি দল চলতি বছরের এপ্রিল মাসের শেষ দিকে বনে ক্যামেরা স্থাপনের ব্যাপারে স্থানীয় বন কর্মচারীদের চারদিন প্রশিক্ষণ দেন।

বন বিভাগের রেকর্ড অনুযায়ী ১৯৮২ সালে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বাঘের সংখ্যা ছিল ৪৫৩টি। ১৯৮৫ সালের জরিপ অনুযায়ী বাঘের সংখ্যা ৪৫০টি। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থায় বিশেষজ্ঞদের মতে ৯৪ সালের জরিপ অনুযায়ী বনের বাঘের সংখ্যা ছিল ৩৬৯টি।

বাংলাদেশ  সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০১৩
এসআর/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।