ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

ভোলায় গো-খাদ্যের সংকট, মারা যাচ্ছে মহিষ

ছোটন সাহা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪০ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০১৮
ভোলায় গো-খাদ্যের সংকট, মারা যাচ্ছে মহিষ ভোলায় গো-খাদ্যের সংকট,  মারা যাচ্ছে মহিষ

ভোলা: ভোলার উপকূলীয় চরগুলোতে পর্যাপ্ত চারণভূমি ও গো খাদ্যের সংকটে মহিষ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন মালিক ও বাতানরা। মহিষ পালনে মারাত্মক বিঘ্ন সৃষ্টির পাশাপাশি দেখা দিয়েছে নানা সংকট। 

বিশেষ করে দুধ উৎপাদন কমে যাওয়ার পাশাপাশি নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মহিষ। খাদ্য সংকটে মহিষ ও মহিষের বাচ্চা মারা যাওয়ার ঘটনাও ঘটছে অহরহ।

গত এক মাসে বিভিন্ন চরে অন্তত ৮১টি মহিষ মারা গেছে বলে প্রাণি সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায়। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত মালিকরা মহিষ পালনে অনাগ্রহী হয়ে পড়েছেন।

জেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের হিসাব মতে, ভোলা জেলার সাত উপজেলায় ৮৩টি চরে অন্তত ৭৯ হাজার মহিষ রয়েছে। এরমধ্যে ব্যবসায়ীক খামার কিংবা বাতান রয়েছে ৫৫৪টি। এসব মহিষ থেকে প্রতিদিন ১০০ মেট্রিক টন দুধ উৎপাদন হচ্ছে। কিন্তু এসব এলাকায় এখন চারণভূমি ও গো-খাদ্যের মারাত্মক সংকট দেখা দিয়েছে।

 ভোলায় গো-খাদ্যের সংকট,  মারা যাচ্ছে মহিষ
মহিষ মালিকরা বাংলানিউজকে জানান, কিছুদিন ধরে চরগুলোতে মহিষ চরানো হলেও তারা খাদ্য সরবরাহ করতে পারছেনা। আর তাই দুধ উৎপাদন কমে যাওয়ার পাশাপাশি দেখা দিয়েছে নানা সমস্যা। মাঝে মধ্যে মারা যাচ্ছে বাচ্চা মহিষও।

ভোলা সদরের মাঝের চর ও মদনপুর এলাকায় গো-খাদ্যের সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে, সেখানে মাঝে মধ্যেই খাদ্যের অভাবে বাচ্চা মারা যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বাতান ও মহিষ মালিকরা।  

মহিষ মালিক আবদুল্লাহ, কাসেম, রহমান আলী বাংলানিউজকে বলেন, চরে ঘাষ নেই, মাঠে মহিষ চরালেও কোনো খাবার পাচ্ছে না মহিষ। এছাড়াও মহিষ পালনের জন্য নেই কিল্লা। সামান্য জোয়ারে চরে পানি উঠে যায়, এতে নানা অসুখে আক্রান্ত হচ্ছে মহিষ ও মহিষের বাচ্চা।

ঢালচর এলাকার মহিষের বাতান মালিক আলী আজগর ও নোমান বাংলানিউজকে বলেন, খাবার না পেয়ে মহিষগুলো রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ছে, এতে দুধ কমে যাচ্ছে। মহিষের বাচ্চাও দুধ না পেয়ে স্বাভাবিকভাবে বাড়তে পারছে না।  

সদর প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, সদরের ৯টি চরে গত কয়েক মাসে ৫৪টি মহিষ মারা গেছে। তবে এসব মহিষ কোন অসুখে মারা যায়নি, মারা গিয়েছে খ্যাদ্য সংকটের কারণে।
  ভোলায় গো-খাদ্যের সংকট,  মারা যাচ্ছে মহিষ
এদিকে বাণিজ্যিকভাবে ঘাষের চাষ না করা এবং জমির স্বল্পতা থাকায় চরগুলোতে প্রকৃতিকভাবে নতুন করে কোনো গো-খাদ্য তৈরি হচ্ছে না।

জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আলমগীর হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, জেলায় যেটুকু চারণভূমি রয়েছে সেখানে উন্নত জাতের নেপিয়ার, পারা, জার্মান ঘাষ চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। খুব শিগগিরই একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় আছে; চরে ঘাষ চাষ, সুপেয় পানি এবং মহিষের বাসস্থান নির্মাণ। এটি বাস্তবায়ন হলে মহিষের মৃত্যু অনেকটা কমে যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৩৩৬ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৮
এইচএল/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।