ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

বিরল ‘বহুরঙা উড়ন্ত কাঠবিড়ালি’র ছানা

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৫৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৮
বিরল ‘বহুরঙা উড়ন্ত কাঠবিড়ালি’র ছানা বিরল বহুরঙা উড়ন্ত কাঠবিড়ালি ছানার ছবিটি শ্রীমঙ্গলের বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন থেকে তুলেছেন বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন

মৌলভীবাজার: বিপন্ন প্রকৃতির দায়ভার আর এড়াতে পারেনি ছোট্ট কাঠবিড়ালিও। প্রাকৃতিক আবাসস্থল ধ্বংসসহ বিভিন্ন প্রতিকূলতার কারণে এক সময় সে ছিটকে পড়ে যায় গাছ থেকে নিচে। এক ব্যক্তি তাকে উদ্ধার করে নিজের কাছে রেখে বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনে খবর দেন।

শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক সজল দেব জানান, কাজল হাজরা নামে এক ব্যক্তি গত ১৪ জুলাই চা-বাগানে অসুস্থ অবস্থায় কাঠবিড়ালিটিকে পড়ে থাকতে দেখে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে যান। তারপর সুস্থ করে তোলেন।

বুধবার (১৮ জুলাই) প্রাণীটিকে বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের কাছে হস্তান্তর করেন।

উদ্ধার প্রাণীটি কিছুটা অসুস্থ। সুস্থ হলে এটিকে অবমুক্ত করা হবে বলে জানান সজল দেব।

বিরল প্রাণীটির বিষয়ে যোগাযোগ করে হলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, এটি উড়ন্ত কাঠবিড়ালির ছানা। অপ্রাপ্তবয়স্ক থাকায় এর শারীরিক রঙের পূর্ণতা সেভাবে ফুটে ওঠেনি; তবে ছবি দেখে যা মনে হচ্ছে এটা Parti-colored Flying Squirrel হতে পারে।

বাংলা নাম সম্পর্কে তিনি বলেন, এর বাংলা নাম ‘ছোট উড়ন্ত কাঠবিড়ালি’ বা ‘বিচিত্ররঙা উড়ন্ত কাঠবিড়ালি’ কিংবা ‘বহুরঙা উড়ন্ত কাঠবিড়ালি’। এর বৈজ্ঞানিক নাম Hylopetes alboniger। এরা মূলত নিশাচর, সন্ধ্যার সাথে সাথে বের হয়। গাছের শিকড়, কুঁড়ি পাতা, পিঁপড়ার ডিম খেয়ে বেঁচে থাকে। সিলেট, চট্টগ্রামের বনাঞ্চলসহ চা বাগান এলাকায় এদের বিরচণ করতে দেখা যায়।

উড়ন্ত কাঠবিড়ালি প্রসঙ্গে ড. কামরুল আরো বলেন, এদের বৈশিষ্ট্য, এরা একদম পাখির মতো উড়ে না। গাছ দিয়ে উপরে উঠে এরা অন্য গাছে ডাইভিং করে। পাখি ডানা ঝাপটানো ছাড়াই যেভাবে বাতাসে ভেসে যায় ঠিক সেভাবে। এরা যখন লাফ দেয় তখন তাতে খুব গতি থাকে; গতি আর পায়ের চামড়ার প্রসারিত আবরণ তাকে বাতাসে ভাসিয়ে রাখতে সাহায্য করে। এভাবে প্রায় দেড়শ’, দুশো ফুট দূরত্বে ছুটে যেতে পারে বহুরঙা উড়ন্ত কাঠবিড়ালি।  

আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন), বাংলাদেশ এর ‘লাল তালিকা’য় এই ছোট উড়ন্ত কাঠবিড়ালিটিকে ‘ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত’ প্রাণী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানান ড. কামরুল হাসান।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৮
বিবিবি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।