ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

দেশ গরমে পুড়লেও স্বস্তিতে সিলেট অঞ্চল

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৮ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৯
দেশ গরমে পুড়লেও স্বস্তিতে সিলেট অঞ্চল দৃষ্টিনন্দন টিলাঘেরা চা বাগান। ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: ৩৬০ আওলিয়ার পূণ্যভূমি এবং চায়ের শিল্পাঞ্চল সিলেটের তাপমাত্রা সম্প্রতিক সময়ে অন্যান্য বিভাগের চেয়ে কম। ফলে স্বস্তিদায়ক আবহাওয়া বিরাজ করছে সিলেট শহরসহ তৎসংলগ্ন প্রান্তরজুড়ে। চা বাগানের সবুজ পাতায় পাতায় রয়েছে মেঘগর্জনময় বৃষ্টির আহ্বান। 

প্রতিরাতেই বৃষ্টিপাত হচ্ছে এখানে। মাঝে মধ্যে মৃদু বা ঝড়ো বাতাসে বয়ে নিয়ে আসছে স্বস্তির পরশ।

এই বৃষ্টির রেশ সীমান্তঘেরা চায়ের-শহর শ্রীমঙ্গলেও। এই বৃষ্টিপাতের ফলে তাপমাত্রা কম রয়েছে।

সবদিক বিচেনায়, অন্যান্য বিভাগের চেয়ে তুলনামূলক কম সিলেটের তাপমাত্রা।

সোমবার (১৩ মে) দুপুর ১২টা পর্যন্ত সিলেটের শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর শ্রীমঙ্গলের তাপমাত্রা দুপুর ১২টা পর্যন্ত ছিল ৩২ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

সিলেট আবহাওয়া কার্যালয়ের সূত্র জানায়, গত ১ মে থেকে ১২ মে পর্যন্ত সিলেট শহরের রেকর্ড তাপমাত্রায় দেখা যায় ৩৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপর উঠেনি গড় তাপমাত্রা। ১২ দিনের এই তাপমাত্রা যথাক্রমে- ১ মে ৩৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২ মে ৩৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৩ মে ৩১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস,  ৪ মে ২৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৫ মে ৩২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৬ মে ৩১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৭ মে ৩৩ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৮ মে ৩৪ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৯ মে ৩৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ১০ মে ৩৫ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস, ১১ মে ৩৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ১২ মে ৩৩ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

সিলেট আবহাওয়া কার্যালয়ের আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমেদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন,  এবছর আমি লক্ষ্য করছি, বর্তমান সময়ে অন্যান্য বিভাগের তুলনায় আমাদের সিলেটের তাপমাত্রা অনেক কম। ফলে আমাদের গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রা অনেকটাই সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। এতে করে আমরা ঘর থেকে কর্মক্ষেত্রে বের হয়ে খুব বেশি অস্বস্তির মধ্যে পড়ছি না।

তিনি আরও বলেন, যদিও লোকজন বলছেন গরম, ৩৫ ডিগ্রি তাপমাত্রাকেই যদি আমি গরম বলি, তাহলে ৩৯/৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রাকে আমি কি বলবো? বাতাসে জলীয় বাষ্পের কারণে কিছুটা গরম অনুভূত হচ্ছে ঠিকই, তবে সেটা সে ধরনের পর্যায়ের গরম নয়। কিন্তু আমাদের রেকর্ড বলছে অন্যান্য বিভাগের চেয়ে আমরা অনেক ভালো আছি। অন্যান্য বিভাগে যেমন তীব্র তাপদাহের ফলে জনজীবন বিপর্যস্ত সেই অবস্থাটা আমাদের নেই।

চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গলের তাপমাত্রা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শ্রীমঙ্গলের তাপমাত্রা সোমবার বেশি, ৩২ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৪ মে (মঙ্গলবার) তাপমাত্রা কমবে। ১৫ মে এবং ১৬ মে সেই তাপমাত্রা কিছুটা কমে এই দু’দিন একই ধরনের থাকবে। ১৭ মে এর দিকে তা আরও কমবে। ১৮ মে এর দিকে গিয়ে সেই তাপমাত্রা বাড়বে শুরু করবে। তার রেশ ১৯ মে এবং ২০ মে পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। তবে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বাড়বে ২১ এবং ২২ মে।

শ্রীমঙ্গলের বৃষ্টিপাত সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রকৃতিকে বৃষ্টিপাত না হলে স্বাভাবিকভাবেই তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং জনজীবনে অস্বস্তি নেমে আসে। শ্রীমঙ্গলে সোমবার রাতে বৃষ্টি হতে পারে। তারপর ১৫, ১৬ ও ১৭ মে বৃষ্টিপাত বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ১৮, ১৯, ২০ ও ২১ এই কয়দিন শ্রীমঙ্গলে বৃষ্টিপাত নেই বললেই চলে। ’

প্রথম রমজান থেকে শুরু করে প্রতিদিন রাতেই কিন্তু বৃষ্টিপাত হচ্ছে সিলেটে। ফলে প্রকৃতিতে রয়েছে স্বস্তির পরিবেশ। আগামী ২২মে পর্যন্ত সিলেটে প্রতিদিন রাতে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে এবং ১৬ ও ১৭মে সিলেটে বৃষ্টিপাত বেশি হবে বলেও জানান সিলেট আবহাওয়া কার্যালয়ের আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমেদ চৌধুরী।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১০ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৯
বিবিবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।