ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

সৈকতে ভেসে আসা দুই তিমি সংরক্ষণ করা হচ্ছে

সুনীল বড়ুয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২১
সৈকতে ভেসে আসা দুই তিমি সংরক্ষণ করা হচ্ছে

কক্সবাজার: কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের হিমছড়ি পয়েন্টে ভেসে আসা বিশালাকার দুই মৃত তিমির কঙ্কাল শিক্ষা ও গবেষণায় ব্যবহারের জন্য সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

সৈকতের বালুচরে পুঁতে রাখা তিমিগুলোর কঙ্কাল দুই মাস পর উত্তোলন করে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের জাদুঘরে সংরক্ষণ করা হবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

 
তবে তিমির কঙ্কালগুলো সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটে সংরক্ষণের কথা ভাবছেন সমুদ্র বিজ্ঞানীরা।

গত শুক্রবার ও শনিবার (১০ এপ্রিল) মৃত তিমিগুলো কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার সৈকতে ভেসে আসে। তবে বিশালাকার এ দুটি তিমির মৃত্যুর কারণ জানতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা।
তিমির মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান ও কঙ্কাল সংরক্ষণে জেলা প্রশাসন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আমিন আল পারভেজকে প্রধান করে আট সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে।  
কমিটি তিমির কঙ্কাল সংরক্ষণ ও মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে কাজ করবে।
অতিরক্তি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আমিন আল পারভেজ দুই তিমির মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করে দেখা হচ্ছে বলে জানান।
তিনি জানান, তিমির মৃতদেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্যে দেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজার বন বিভাগের(দক্ষিণ) বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) হুমায়ুন কবির বলেন, বালুচরে পুঁতে রাখা তিমির কঙ্কাল দুই –আড়াই মাস পর তুলে চকরিয়ার ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের জাদুঘরে সংরক্ষণ করা হবে।  
এ সময়ের মধ্যে দুই এলাকায় বনরক্ষীরা পাহারা দেবেন। তবে সমুদ্র বিজ্ঞানীরা কঙ্কাগুলো সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটে সংরক্ষণের প্রয়োজন বলে মনে করেন।

কক্সবাজারস্থ বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো. শফিকুর রহমান জানান, তিমির কঙ্কাল গবেষণায় ব্যবহারের জন্য সংরক্ষণের চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে।  

কক্সবাজারের দরিয়ানগরের বাসিন্দা সাংবাদিক আহমদ গিয়াস দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশ ও সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ নিয়ে কাজ করছেন।

তিনি জানান, শিক্ষা ও গবেষণা কাজে ব্যবহারের জন্যে কঙ্কালগুলো সমুদ্র গবেষণা কেন্দ্রে সংরক্ষণ করা উচিত।

এ দিকে দুই তিমির ওজন, আকৃতি ও মৃত্যু নিয়ে সরকারি দপ্তর ও বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন থেকে এরই মধ্যে একেক সময় একেক তথ্য দিচ্ছে। আর তা সংবাদ মাধ্যমে প্রচার হওয়ায় নানা বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে।

কক্সবাজারস্থ বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের সামুদ্রিক মৎস্য ও প্রযুক্তি কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুর রহমান তিমি দু’টির মরদেহ পরিদর্শন করে জানান, দুই তিমিই ব্রাইডস হোয়েল প্রজাতির।  
একটির দৈঘ্য ৪৬ ফুট ও আরেকটির ৪৪ ফুট। দুই তিমির শরীরে বড় আঘাতের চিহৃ রয়েছে।  

তিনি জানান, অন্তত ১০-১২ দিন আগে গভীর সাগরে মারা যাওয়ার পর তিমিগুলো ভেসে এসেছে।

গত শনিবার ঘটনাস্থলে কক্সবাজার বন বিভাগের (দক্ষিণ) ডিএফও হুমায়ুন কবির বার্ধক্যজনিত কারণে তিমিগুলোর মৃত্যু হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন। তবে মৎস্য বিজ্ঞানীরা এতে ভিন্নমত দিয়েছেন।  
তিমিগুলো দুই থেকে তিন টন ওজন হবে বললেও মূলত ২৫ টনের অধিক বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা।
সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম জানান, ব্রাউডস হোয়েল জাতের তিমি ৫০ থেকে ৫৫ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। একটি প্রাপ্ত বয়স্ক এ জাতের তিমি বাঁচেও ৫০-৫৫ বছর। একেকটির ওজন ২৫ থেকে ৩৫ টন পর্যন্ত হয়ে থাকে।
ফলে এখানে ভেসে আসা দুই তিমির ওজনও কমপক্ষে ২৫ টন করে হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৮২৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০২১
এসবি/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।