ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

ভারতের বিপক্ষে জিততে না পারায় 'রাগ হয়েছিল' জামালের

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৫ ঘণ্টা, মে ২২, ২০২০
ভারতের বিপক্ষে জিততে না পারায় 'রাগ হয়েছিল' জামালের জামাল ভূঁইয়া (মাঝে)/ছবি: সংগৃহীত

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ জাতীয় দলের জন্য সবচেয়ে স্মরণীয় ম্যাচ সম্ভবত ভারতের মাটিতে ১-১ ড্র ম্যাচটি। কলকাতার সল্টলেকে তুমুল উত্তেজনা ছড়ানো ম্যাচটিতে ৮৭তম মিনিটে গোল হজম করায় জিততে জিততে ড্র নিয়ে ফেরে বাংলাদেশ। অবশ্য ড্র করলেও বাংলাদেশের ফুটবলারদের অদম্য লড়াই সমর্থকদের হৃদয় জিতে নিয়েছিল। কিন্তু ওই ড্র এখনও পোড়ায় জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়াকে।

করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে দেশের ফুটবল স্থগিত হয়ে গেছে। এই অবসরে আপাতত পরিবারের সঙ্গে ডেনমার্কে অবস্থান করছেন জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া।

সেখান থেকেই শুক্রবার (২২ মে) বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) ফেসবুক পেজের এই লাইভ আড্ডায় হাজির হন এই মিডফিল্ডার। সেখানে ভক্তদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে খোলামেলা আড্ডা দেন তিনি।

ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটি নিয়ে জামাল বলেন, 'ভারতের বিপক্ষে জিততে পারলে এ ম্যাচটা সেরা ম্যাচ থাকত। আসলে এ ম্যাচটা নিয়ে অনেক হাইপ ছিল। প্রেস কনফারেন্সে অনেক সাংবাদিক ছিল। আমরা যখন ভারতে গেলাম, বিমানবন্দরে অনেক সাংবাদিক এসেছিল। ওরা ধরে নিয়েছিল আমরা হারব। তিন-চার গোল খাব। প্রেস কনফারেন্সেও একই কথা বলেছিল। আমি বলেছিলাম-আমি ভারতীয়দের হৃদয় ভাঙব। শুনে ওরা হেসেছিল। '

'আমরা হোটেল ম্যারিয়টে ছিলাম। ওখানকার সবাই আমাদের কাছে টিকিট চাচ্ছিল। বলছিল টিকিট দেন, টিকেট দেন। কিন্তু আমাদের কাছে টিকিট ছিল না। গ্যালারি ভরা ছিল। ওদের চিৎকারে আমার কথা কেউ শুনতে পাচ্ছিল না। গলা বসে গিয়েছিল চিৎকার করতে করতে। আমার কর্নার থেকে সাদের (সাদউদ্দিন) গোলটা হলো। আমরা অনুশীলনও সেভাবেই করেছিলাম। '

'যখন অতিরিক্ত সময় মিলিয়ে খেলার মিনিট আট বাকি, তখন মনে হলো এই খেলাটা ধরে রাখি। আর তো মাত্র কয়েক মিনিট। কিন্তু যখন ওরা গোল দিল, আমার হৃদয় ভেঙে গিয়েছিল। জীবন ভাই (নাবীব নেওয়াজ জীবন) সুযোগ পেয়েছিল। ওর একটা শট গোললাইন থেকে সেভ করে এক ডিফেন্ডার। এ ম্যাচটা জিতলে সেরা ম্যাচ হতো। ওই ড্র নিয়ে এখনও আমার রাগ হয়। ' 

ভারতের বিপক্ষে ওই ম্যাচে জামালের খেলা নজর কেড়েছিল ভারতীয় সমর্থকদেরও। এমনকি ম্যাচে শেষে জামালের সঙ্গে হোটেল লবিতে দেখা করতে এসেছিলেন বলিউড অভিনেত্রী আলিয়া ভাট। জামাল নিজেই সেটা জানালেন। ফেসবুক আড্ডায় 'চুপচাপ' জামাল এদিন ভক্তদের সঙ্গে এত স্বাভাবিক আড্ডা দিলেন যে মনেই হলো না তিনিই দেশের সবচেয়ে বড় ফুটবল তারকা তথা 'পোস্টারবয়'।

ওভাবে ড্র করায় ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটি নিজের সেরার ম্যাচের তালিকায় রাখেননি জামাল। বরং তার প্রিয় ম্যাচ হলো ২০১৮ এশিয়ান গেমসে কাতারের বিপক্ষে ১-০ গোল জেতা ম্যাচটি। ওই ম্যাচ জেতায় বাংলাদেশ এশিয়ান গেমসের দ্বিতীয় পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল।

একসময় স্ট্রাইকার হতে চাওয়া জামাল ভূঁইয়া কীভাবে মিডফিল্ডার সেটাও জানা গেল। সেই সঙ্গে জানা গেল তার প্রিয় ফুটবলারদের নামও, 'আসল রোনালদো (ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি স্ট্রাইকার রোনালদো নাজারিও) আমার ফেভারিট। ভাবতাম ওর মতো স্ট্রাইকার হব। কিন্তু বড় হয়ে মনে হয়েছে মিডফিল্ডই আমার জন্য মানানসই। এই পজিশনে আমার প্রিয় জিনেদিন জিদান। তিন জন আইডল রোনালদো-জিদান-রোনালদিনহো। '

২০১৩ সালে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে জামাল বলেন, 'সাত বছর ধরে এখানে খেলছি। দেশের হয়ে খেলার কথা সবসময় ভেবেছি। যখন প্রথম বাংলাদেশের জার্সিতে খেললাম-আমার সোনার বাংলা/আমি তোমায় ভালোবাসি বেজে উঠল। দলের সবাই গাইছিল। আমার রোম দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। নিজেকে খুব সুখী এবং ভাগ্যবান অনুভব করেছিলাম। কিন্তু কখনো এই দলের অধিনায়ক হব ভাবিনি। '

বাংলাদেশ কোনো একদিন বিশ্বকাপে খেলবে বলে আশাবাদী জামাল। তবে এজন্য অনেক লম্বা পথ পাড়ি দিতে হবে বলে জানালেন সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের ৩০ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার।  

এবারের ঘরোয়া ফুটবল মৌসুম বাতিল করেছে বাফুফে। এর আগেই অবশ্য ডেনমার্কে গেছেন জামাল। সেখানে পরিবারের সঙ্গে অবসর কাটালেও বসে নেই জামাল ভূঁইয়া। নিয়ম করে দুই বেলা অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানালেন। ফেসবুক আড্ডায় তিনি সদ্য বিবাহিত স্ত্রী, ছবি আঁকার প্রতিভা, প্রিয় খাবার এমন সব বিষয় নিয়েও কথা বললেন তিনি।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, মে ২২, ২০২০
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।