ঢাকা, সোমবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প

এলপিজিতে চালাতে হবে সাভারের ট্যানারি

রহমান মাসুদ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১৭
এলপিজিতে চালাতে হবে সাভারের ট্যানারি সাভারের চামড়া শিল্প পল্লি; ছবি- দীপু মালাকার

ঢাকা: সাভারের চামড়া শিল্প পল্লিতে প্রাথমিকভাবে লিকুইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস বা এলপিজি’র মাধ্যমে উৎপাদনে যেতে হচ্ছে ট্যানারি মালিকদের। তবে হাজারীবাগের যে ৫৫টি ট্যানারিতে গ্যাস সংযোগ আছে, সেই ট্যানারি মালিকরা হেমায়েতপুরের হরিণদাড়ার চামড়া শিল্প পল্লির নতুন কারখানায় দ্রুতই গ্যাস সংযোগ পাবেন।

বাকি ১০০ ট্যানারিকে উৎপাদন শুরু করতে হবে এলপিজি দিয়েই। তবে আবেদনের প্রেক্ষিতে জাতীয় গ্যাস সংযোগ কমিটির অনুমোদনের পর তারাও তিতাসের গ্যাস সংযোগ পাবেন বলে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনকে জানিয়েছে পেট্রোবাংলা।

মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান আবুল মনসুর মোহাম্মদ ফয়জুল্লাহ’র সঙ্গে আদালতের রায়ের ভিত্তিতে হাজারীবাগের ট্যানারি পল্লির গ্যাস সংকট ও করণীয় নিয়ে কথা বলতে যান বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দ। এ সময় পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ট্যানারি মালিকদের এসব কথা জানান।

একাধিক ট্যানারি মালিক নাম না প্রকাশের শর্তে বাংলানিউজকে জানান, ব্যবসা চালিয়ে রাখতে হলে হেমায়েতপুরের কারখানায় এলপিজি দিয়েই উৎপাদন শুরু করতে হবে। আমরা সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছি। কিন্তু এটা সাময়িক সমাধান। এভাবে হয়তো হাতের অর্ডার সাপ্লাই দেওয়া যেতে পারে। সাধারণত ছোট কারখানাগুলো এই উদ্যোগে সফল হতে পারে। বড় কারখানায় এলপিজি ব্যবহার করা ব্যয়বহুল হবে। তবু ছোট পরিসরে হলেও সবাই এলপিজি ব্যবহার করতে বাধ্য হবে।

এ বিষয়ে মেসার্স ইকবাল ব্রাদার্স ট্যানারির প্রধান নির্বাহী ইকবাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা এলপিজিতে ট্যানারি চালাতে প্রস্তুত। কিন্তু এটা খুবই ব্যয়বহুল হবে। এতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে।
সাভারের চামড়া শিল্প পল্লি; ছবি- দীপু মালাকার
তিনি বলেন, এরইমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চামড়া শিল্প পল্লিতে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছেন। তাই গ্যাসের সংযোগ না পাওয়া পর্যন্ত এলপিজিতেই ক্রাস্ট ও ফিনিশড লেদারের কাজ চালাতে হবে। এটা কিন্তু চূড়ান্ত সমাধান নয়।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, আমরা গ্যাস সংযোগ নিয়ে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান ও তিতাস গ্যাস কোস্পানির সঙ্গে বৈঠক করেছি। পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান আমাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্যাসের সংযোগ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে তিনি কেবল হাজারীবাগে গ্যাস সংযোগ থাকা ট্যানারিগুলোতেই গ্যাস সংযোগ দিতে চেয়েছেন। কিন্তু আমরা ১৫৫টি ট্যানারিতেই গ্যাস সংযোগ চেয়েছি। কারণ সবারই উৎপাদন পদ্ধতি এক।

শাহীন আহমেদ বলেন, চামড়া ওয়েট ব্লু করার পর ক্রাস্ট ও ফিনিশড করার যে দুটো ধাপ, তাতে গ্যাসের প্রয়োজন হয়। আর আমরা ক্রাস্ট ও ফিনিশড লেদারই রফতানি করি। হাজারীবাগে যাদের গ্যাস সংযোগ ছিলো না, তারা যাদের ট্যানারিতে গ্যাস সংযোগ আছে, সেই সব ট্যানারিতে চুক্তি ভিত্তিক ক্রাস্ট ও ফিনিশডের কাজ করেছেন। এতে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যায়। এজন্য হরিণদাড়ার চামড়া পল্লিতে সবাইকেই গ্যাস সংযোগ দিতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও বৈঠক করেছি। নতুন চামড়া শিল্প পল্লির দুই পাশেই তিতাসের গ্যাসের লাইন আছে। এখন যতো দ্রুত সম্ভব ডিস্ট্রিবিউশন পয়েন্ট স্থাপন করে সংযোগ দেওয়া প্রয়োজন। আমরা বলেছি হাজারীবাগে যখন আমাদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে, তখনই যেন গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়। তবে সম্ভবত এ কাজে ছয় মাস সময় লাগতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১৭
আরএম/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।