ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

মহাকাশে সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করছে চীন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৪ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৫
মহাকাশে সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করছে চীন ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা: ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩৬ হাজার কিলোমিটার উপরে মহাশূন্যে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করতে চলেছে চীন। গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণ সঙ্কট মোকাবেলা ও শক্তি সংকট দূরীকরণে বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রির অধ্যাপক ও সায়েন্স ফিকশন লেখক আইজ্যাক আজিমভের কল্পনা সত্য প্রমাণিত হবে যদি এ প্রকল্প সফল হয়।



১৯৪১ সালে ‘রিজন’ শিরোনামে একটি ছোট গল্প প্রকাশ করেন আজিমভ। সেখানে তিনি মহাশূন্যে সৌরশক্তি পরিচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের ধারণার কথা প্রথম উল্লেখ করেন।

চীনের এই মহাশূন্য বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপণের কার্যক্রম এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় মহাশূন্য প্রকল্প হতে চলেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি আসলে বিশাল একটি উপগ্রহ, যা পৃথিবীর আবর্তনের সাথে সমন্বয় করে পৃথিবীর চারপাশে নিজ কক্ষপথে আবর্তন করবে। এতে যে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে, তাকে প্রথমে ক্ষুদ্র তরঙ্গে (মাইক্রোওয়েভ) অথবা লেজার রশ্মিতে রূপান্তরিত করা হবে। পৃথিবীতে তা গ্রাহক যন্ত্রের মাধ্যমে গৃহীত হবে। পরবর্তীতে তা আবার বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তরিত করা হবে।

চাইনিজ একাডেমি অব সায়েন্সের পরিষদ সদস্য ও ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি অব অ্যাস্ট্রনটস সদস্য ওয়াং জিজি (৯৩) বলেন, আজিমভের ধারণাটার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে।

৪০ বছর আগে চীনের প্রথম রকেটের ডিজাইন এই ওয়াং জিজিই করেছিলেন। তিনি বলেন, এ ধরনের বিদ্যুৎ উৎপাদক কৃত্রিম উপগ্রহ অনেক বড় হওয়াই স্বাভাবিক। এর আয়তন হতে পারে ৫ থেকে ৬ বর্গকিলোমিটার।

বেইজিংয়ের সবচেয়ে বড় মিলনকেন্দ্র তিয়ানআনমেন স্কয়ারের চেয়ে এটি অন্তত ১২ গুণ বড় হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, হতে পারে পৃথিবী থেকে খালি চোখেই এটি দেখা যাবে।

ওয়াং আরো বলেন, পৃথিবীর বুকে বসানো সোলার প্যানেলগুলোর কার্যকারিতা আবহাওয়া, দিবা-রাত্রির ওপর নির্ভর করে। কিন্তু মহাশূন্যে এসবের কিছুই নেই। কাজেই সেখানে ৯৯ শতাংশ নিরবচ্ছিন্ন শক্তি উৎপাদন সম্ভব।

চাইনিজ একাডেমি অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সদস্য ডুয়ান বায়োয়ান বলেন, মহাশূন্যে স্থাপিত সৌরকোষ পৃথিবীর সৌরকোষের তুলনায় অন্তত দশগুণ বেশি শক্তি উৎপাদনে সক্ষম হবে।

তবে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে বেশ কিছু সীমাব্ধতাও রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা উপগ্রহের ওজন। এ ধরণের উপগ্রহের আনুমানিক ওজন হবে ১০ হাজার টন। কিন্তু এখন পর্যন্ত সবচেয়ে উন্নত রকেটগুলো একশ’ টন ওজন বহন করতে সক্ষম।

ওয়াং জিজি বলেন, আমাদের প্রথমে সস্তা ও ভারী ওজন বহনে সক্ষম রকেট তৈরি করতে হবে। সেই সঙ্গে আমাদের হালকা সোলার প্যানেল তৈরি করতে হবে, যার প্রতি বর্গমিটারের ওজন দুইশ’ গ্রামের চেয়েও কম হবে।

চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট লি মিং জানিয়েছেন, ২০২০ সালের মধ্যে তার দেশ একটি স্পেস স্টেশন তৈরি করবে, যা সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কৃত্রিম উপগ্রহ স্থাপনে বিশেষ সহায়ক হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৫ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।