ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

জার্মানউইংস প্লেন বিধ্বস্ত হওয়ার পূর্বমুহূর্তের ভিডিও প্রকাশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২, ২০১৫
জার্মানউইংস প্লেন বিধ্বস্ত হওয়ার পূর্বমুহূর্তের ভিডিও প্রকাশ

ঢাকা: গত সপ্তাহে দেড়শ’ আরোহী নিয়ে ফ্রান্সের আল্পসে বিধ্বস্ত হওয়া জার্মান‌উইংসের এয়ারবাস এ-৩২০ এর শেষ মুহূর্তের একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে।

বুধবার (০১ এপ্রিল) ভিডিওটি প্রকাশ করে জার্মানভিত্তিক সংবাদপত্র দ্য বিল্ড।

বিধ্বস্ত প্লেনটির কোনো এক আরোহীর মোবাইল ফোনে এটি ধারণ করা হয় বলে জানা গেছে। তবে ভিডিওটি জনসম্মুখে প্রকাশ করেনি বিল্ড।

গত ২৪ মার্চ ফ্রান্সের আল্পস এলাকায় দেড়শ’ আরোহী নিয়ে বিধ্বস্ত হয় লুফথানসা বিমান সংস্থার অঙ্গপ্রতিষ্ঠান জার্মানউইংয়ের এ-৩২০ প্লেন। নিহত হন এর সব আরোহী।

এরপর ঘটনাস্থল থেকে প্রথম ব্ল্যাকবক্স উদ্ধারের পরই কো-পাইলটের ইচ্ছাকৃত দুর্ঘটনা ঘটানোর বিষয়টি সামনে চলে আসে। জানা যায়, প্লেনটির মূল পাইলট ককপিটের বাইরে আটকা পড়েছিলেন। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি দরজা ভেঙ্গে ককপিটে ঢোকার চেষ্টা করেন।

জানা যায়, বিধ্বস্ত হওয়ার আগে ছয় হাজার ফুট উচ্চতায় থাকা অবস্থায় রাডারের সাথে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় প্লেনটির। এরপর এটি ৩৮ হাজার ফুট উপরে ওঠে। তারপরই মাত্র আট মিনিটে খসে পড়ে আল্পসে বিধ্বস্ত হয়। দুই ইঞ্জিনবিশিষ্ট এয়ারবাসটিতে কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল না বলেও জানা গেছে।

এমনকি পতনের আট মিনিটে এর কোনো ইঞ্জিন বিকলও হয়নি। প্লেনটি সরাসরি আল্পসে আঘাত হেনে বিধ্বস্ত হয় বলে নিশ্চিত হয়েছেন তদন্তকারীরা।

বিল্ড জানায়, কোলাহলপূর্ণ ওই ভিডিওটিতে ‘মাই গড’ উচ্চরণ করতে শোনা যায় স্পষ্টভাবে। এর অর্থ দাঁড়ায়, আরোহীরা জানতেন কি ঘটতে চলেছে।

তবে ফ্রান্সের প্রসিকিউটর ব্রাইস রবিন এ বিষয়ে কিছু জানেন না ও এ ধরনের কোনো ভিডিও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তদন্তকারী দলগুলোর হাতে এসে পৌঁছায়নি বলে জানিয়েছেন। ব্রাইস রবিন লুফথানসার মালিকানাধীন জার্মানউইংসের প্লেনটি বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় মামলা পরিচালনা করছেন।

সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, এ ধরণের কোনো ভিডিও সম্বলিত মোবাইল ফোন উদ্ধারের বিষয়ে আমি কিছু জানি না।

এদিকে, প্রাপ্ত ভিডিওটিকে ‘নিঃসন্দেহে নির্ভরযোগ্য’ দাবি করে দ্য বিল্ড জানিয়েছে, অন্তত তিনবার সেখানে ধাতব কিছুতে আঘাত করার শব্দ শোনা গেছে। পাইলট ককপিটের বাইরে আটকা পড়ার পর সেখানে ঢুকতে দরজায় আঘাত করার শব্দ হতে পারে এটি বলে মতামত দেওয়া হয়।

শেষ মুহূর্তের আগে প্রচণ্ড ঝাঁকি দিয়ে দৃশ্য উল্টে যেতে দেখা যায়। সেই সঙ্গে প্রচণ্ড চিৎকারের মধ্যেই ভিডিওটি বন্ধ হয়ে যায় বলে জানায় বিল্ড।

দৃশ্য দেখে মনে হয়, ভিডিওটি বিধ্বস্ত প্লেনটির পেছনের দিক থেকে ধারণ করা হয়েছে। তবে কে এই ভিডিও ধারণ করেছেন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে বিল্ড।

এর আগে ফ্রান্সভিত্তিক ম্যাগাজিন ‘প্যারিস ম্যাচ’ও একটি ভিডিও পাওয়ার কথা জানায়, যেখানে দুই পাইলটের মধ্যে কথোপকথন ধারণ করা ছিল।

ওই ভিডিওটিতে দেখা যায়, ককপিট থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আগে পাইলট টয়লেটে যাবেন বলে তার কো-পাইলট আন্দ্রেয়াস লুবিৎজকে নিয়ন্ত্রণ নিতে বলছেন।

এর আগে গত মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) লুফথানসা জানায়, ২০০৯ সালে বিমান পরিচালনা প্রশিক্ষণের সময় ‘হতাশায়’ ভোগার কথা জানিয়েছিলেন লুবিৎজ। হতাশাগ্রস্ত একজন পাইলটকে নিয়োগের সময় এই সমস্যাটি এড়িয়ে যাওয়ার ঘটনা পুরো পাইলট নির্বাচন ব্যবস্থাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

এদিকে, লুবিৎজ লাইসেন্স পাওয়ার আগে ‘আত্মহত্যা প্রবণতায়’ ভুগছিলেন বলে জানিয়েছেন এই মামলায় সংশ্লিষ্ট প্রসিকিউটররা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।