ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

মালদ্বীপে দেখা গেছে নিখোঁজ মালয়েশীয় প্লেন!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৫, ২০১৫
মালদ্বীপে দেখা গেছে নিখোঁজ মালয়েশীয় প্লেন! ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: গত বছর ২৩৯ আরোহী নিয়ে নিখোঁজ হওয়া মালয়েশিয়ান প্লেন এমএইচ-৩৭০ খুব সম্ভবত যে অঞ্চলে খোঁজ করা হচ্ছে, তার থেকে পাঁচ হাজার কিলোমিটারে দূরবর্তী মালদ্বীপের কাছাকাছি কোনো এলাকায় বিধ্বস্ত হয়ে থাকতে পারে। দ্বীপপুঞ্জটির প্রত্যন্ত এক দ্বীপের বাসিন্দাদের বক্তব্যের সূত্রে এমনটাই মনে করা হচ্ছে এখন।



গত বছর ৮ মার্চ মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুর থেকে চীনের বেইজিংয়ের উদ্দেশ্যে উড়াল দেওয়ার ঘণ্টাখানেকের মধ্যে দক্ষিণ চীন সাগরের উপর থাকা অবস্থায় রাডার থেকে গায়েব হয়ে যায় ২৩৯ আরোহীর মালয়েশিয়ান প্লেন এমএইচ-৩৭০। নিখোঁজ হওয়ার পরপরই অস্ট্রেলিয়ার নেতৃত্বে ভারত মহাসাগরে অস্ট্রেলীয় উপকূল পর্যন্ত প্রায় ৪৬ লাখ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে ও সমুদ্রতলে প্রায় দুই হাজার মিটার গভীরে অনুসন্ধান চালানো হয়। কিন্তু প্লেনটির আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি কখনোই।

তবে মালদ্বীপের ধালু প্রবালদ্বীপের দক্ষিণাংশ কুদাহুভাধু দ্বীপের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গত বছর ৮ মার্চ এমএইচ-৩৭০ হারিয়ে যাওয়ার পরই তাদের এলাকায় খুব নিচ দিয়ে একটি জাম্বো জেট উড়ে যেতে দেখেছেন তারা।

সাড়ে তিন হাজার বাসিন্দার ওই গ্রামের উপর দিয়ে প্লেনটি উড়ে গেছে বলে অনেক গ্রামবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে কী ধরনের প্লেন তারা দেখেছেন, তার বর্ণনাও নিয়েছে।

কুদাহুভাধু দ্বীপের বাসিন্দা আইটি ম্যানেজার আহমেদ শিয়াম (৩৪) বলেন, আমি যা দেখেছি, তার ব্যাপারে আমি নিশ্চিত। দিনটা ছিল উজ্জ্বল। বিশাল প্লেনটি খুব নিচ দিয়ে উড়ে গেছে। আমি জানি না, এটা খোয়া যাওয়া মালয়েশিয়ান প্লেন কি না।

আব্দু রাশীদ ইব্রাহিম নামে ওপর একজন প্লেনটিকে প্রায় পানির ওপর দিয়ে ভেসে আসতে দেখেছেন বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন।

ইব্রাহিম বলেন, আমি জানতাম না ওই প্লেনটাই নিখোঁজ প্লেন কি না। ওটা দেখার পর আমি সোজা বাড়ি চলে গেছি। আমার স্ত্রী-পরিবারকে বললাম, আমি এক অদ্ভুত প্লেন দেখেছি। আমার জীবনে দেখা সবচেয়ে বড় প্লেন ছিল ওটা। আমি নিখোঁজ প্লেনটার ছবি দেখেছি। আমার শক্ত ধারণা, আমার দেখা প্লেনটাই নিখোঁজ মালয়েশিয়ান প্লেন। যারা ওটা অনুসন্ধানে কাজ করছে, তাদের এই এলাকায় আসা উচিত বলে আমি মনে করি।

তবে গত বছর মার্চে প্লেন নিখোঁজের ঘটনার পরপরই মালদ্বীপ ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্স এক বিবৃতিতে জানায়, ওই এলাকায় এমন কোনো সন্দেহজনক প্লেন দেখা যায়নি।

তবে এই বিবৃতিকে দেশটির রাডার সুবিধার সীমাবদ্ধতাকে লুকানোর একটা অপচেষ্টা বলেই মনে করছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় গণমাধ্যম ‘হাভিরু অনলাইন’ প্লেনটি নিখোঁজের পর গত বছর ১৮ মার্চ প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে এক খবরে জানিয়েছিল, প্লেনটা এতো নিচ দিয়ে যাচ্ছিলো যে, এর দরজাটাও দেখা যাচ্ছিল।

এক প্রত্যক্ষদর্শী ‘হাভিরু’কে সেসময় বলেছিলেন, আমাদের দ্বীপের ওপর দিয়ে এর আগে কখনোই কোনো জেটকে আমি উড়ে যেতে দেখিনি। আমরা সবাই সি-প্লেন দেখেছি। আমি নিশ্চিত, সেদিন যে প্লেনটা আমরা দেখেছি, তা সি-প্লেন না। এমনকি আমরা প্লেনটার দরজাও দেখতে পাচ্ছিলাম।

মালদ্বীপের কুদাহুভাধু দ্বীপের বাসিন্দাদের বক্তব্য সঠিক হলে নিখোঁজ মালয়েশিয়ান প্লেন এমএইচ-৩৭০ খোঁজ করতে অনুসন্ধানী টিমগুলোকে নতুন করেই পরিকল্পনা করতে হবে। সেই সঙ্গে যে এলাকায় এখন অনুসন্ধান চলছে, তাদেরকে তার থেকে অন্তত পাঁচ হাজার কিলোমিটার সরে যেতে হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০১৫
সম্পাদনা: রাজিউল হাসান, নিউজরুম এডিটর/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।