ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

‘দম বন্ধ হয়ে আসছে, কষ্ট পাচ্ছি’ ঘাতকদের বলেছিলেন খাশোগি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৮
‘দম বন্ধ হয়ে আসছে, কষ্ট পাচ্ছি’ ঘাতকদের বলেছিলেন খাশোগি প্রখ্যাত সাংবাদিক জামাল খাশোগি, ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: হত্যার আগে ঘাতকদের উদ্দেশে প্রখ্যাত সাংবাদিক জামাল খাশোগির শেষ কথা ছিল, ‘আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে, আমার মাথা থেকে এই ব্যাগটা সরান। আমি খুব কষ্ট পাচ্ছি।’

তুরস্কের সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে পাওয়া খাশোগি হাত্যাকাণ্ড সংশ্লিষ্ট অডিও রেকর্ডটির সূত্র দিয়ে দেশটির একটি সংবাদমাধ্যমের অনুসন্ধানী রিপোর্টিংয়ের প্রধান নাজিফ কেরাম্যান আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য দেন।

এসময় সাংবাদিক নাজিফ কেরাম্যান বলেন, একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ দিয়ে খাশোগির পুরো মাথা ঢেকে ফেলা হয়েছিল।

খাশোগি এসময় কিছু দেখতেও পাচ্ছিলেন না। তার গলায় ব্যাগটি শক্ত করে ধরাও হয়েছিল। আস্তে আস্তে তার শ্বাস বন্ধ হয়ে আসছিল। আর তখনই ঘাতকদের তিনি তার কষ্ট লাগছে বলে কথাগুলো বলেছিলেন।

অডিও রেকর্ডের বরাত দিয়ে তিনি এও বলেন, প্রায় সাত মিনিটের মধ্যে খাশোগিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছিল।

এর আগে শনিবার (১০ নভেম্বর) তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ফ্রান্স এবং ব্রিটেনের তদন্তকারীদের কাছে তুলে দেন ওই অডিও রেকর্ডটি। পরে বিষয়টি তিনিই সংবাদমাধ্যমকে জানান।

কেরাম্যান তুর্কি গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বলেন, খাশোগিকে হত্যা করতে সৌদি আরব থেকে প্রায় ১৫ জন লোক এসেছিলেন। তারা তাকে হত্যা করে মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে তার মরদেহটি টুকরো টুকরো করে ফেলেন।

২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে ব্যক্তিগত কাগজপত্র আনার প্রয়োজনে গেলে নিখোঁজ হয়ে যান সাংবাদিক খাশোগি। এ ঘটনার পর থেকে তুরস্ক দাবি করে আসছিল- সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরেই জামাল খাশোগিকে হত্যা করা হয়েছে।

প্রথম দিকে অস্বীকার করে নানা রকম কথা বললেও ঘটনার ১৭ দিন পর কনস্যুলেট ভবনের ভেতরে খাশোগি নিহত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে সৌদি। তবে তারা দাবি করে, কনস্যুলেটরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মারামারি করে নিহত হন এ সাংবাদিক।

এদিকে, তুরস্কের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর জানিয়েছিলেন, সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশ করা মাত্রই খাশোগিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এরপর তার মরদেহ টুকরো টুকরো করে ঘটনাটি নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়।

তার মরদেহের একটি টুকরো কনস্যুলেটের ভেতরেই পাওয়া গিয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন তুরস্কের এক রাজনীতিবিদ। যদিও খাশোগির মরদেহের কোনো হদিস এখনও মেলেনি।

তাছাড়া খাশোগিকে হত্যার পর তার মরদেহ টুকরো টুকরো করে অ্যাসিড দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন তর্কি প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা ইয়াসিন আকথে।

সৌদির ক্রাউন প্রিন্স সালমানের নির্দেশে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠে।

যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছা-নির্বাসিত খাশোগি ছিলেন বাদশাহ-যুবরাজসহ সৌদি রাজপরিবারের কট্টর সমালোচক।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৮
টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।