ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

আশুরার রোজার ফজিলত ও সওয়াব

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪২ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২৩
আশুরার রোজার ফজিলত ও সওয়াব

মহররম হিজরি বর্ষপঞ্জির প্রথম মাস। এ মাস তাৎপর্যমণ্ডিত ও বরকতময়।

মহান আল্লাহ তাআলা হিজরি সনের যে চারটি মাসকে সম্মানিত করেছেন। তার মধ্যে মহররম হলো অন্যতম। বাকিগুলো হলো- জিলকদ, জিলহজ ও সফর।

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘যেদিন থেকে তিনি আসমান ও জমিন সৃষ্টি করেছেন, সেদিন থেকে নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে গণনা হিসেবের মাস হলো বারোটি। এর মধ্যে চারটি মাস বিশেষ সম্মানিত। ’ (সুরা তাওবাহ, আয়াত : ৩৬)

মহররম মাসে রোজা রাখার গুরুত্ব
ফজিলত বিবেচনায় এই মাসের রোজা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এ মাসে রোজা রাখার প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে মহররমের রোজার মধ্যে আশুরার রোজার ফজিলত আরও বেশি।

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘নবী (সা.) মদিনায় এসে দেখতে পেলেন, ইহুদিরা আশুরার দিন রোজা পালন করছে। নবী (সা.) বললেন, এটি কী? তারা বলল, এটি একটি ভালো দিন। এ দিনে আল্লাহ তাআলা বনি ইসরাঈলকে তাদের শত্রুর কবল থেকে বাঁচিয়েছেন। তাই মুসা (আ.) রোজা পালন করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, মুসা (আ.)-কে অনুসরণের ব্যাপারে আমি তোমাদের চেয়ে বেশি হকদার। অতঃপর তিনি রোজা রেখেছেন এবং সাওম রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৮৬৫)

আরেক হাদিসে আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘আমি আল্লাহর রাসুল (সা.)-কে রমজান ও আশুরায় যেরূপ গুরুত্বের সঙ্গে রোজা রাখতে দেখেছি অন্য সময় তা দেখিনি। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১/২১৮)

আশুরার রোজার ব্যাপারে আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘রমজানের পর আল্লাহর মাস মহররমের রোজা হলো সর্বশ্রেষ্ঠ। ’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২/৩৬৮; জামে তিরমিজি, হাদিস : ১/১৫৭)

আশুরার রোজায় বিশেষ দুইটি পুরস্কার
একবার এক ব্যক্তি আলী (রা.)-কে প্রশ্ন করেছিল যে, রমজানের পর আর কোনো মাস আছে; যাতে আপনি আমাকে রোজা রাখার আদেশ করেন? তখন তিনি বললেন, এই প্রশ্ন আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর নিকট জনৈক সাহাবি করেছিলেন, তখন আমি তার খেদমতে উপস্থিত ছিলাম। উত্তরে রাসুল (সা.) বললেন, ‘রমজানের পর যদি তুমি রোজা রাখতে চাও, তবে মহররম মাসে রাখ। কারণ, এটি আল্লাহর মাস। এ মাসে এমন একটি দিন আছে, যে দিনে আল্লাহ তাআলা একটি জাতির তওবা কবুল করেছেন এবং ভবিষ্যতেও অন্যান্য জাতির তওবা কবুল করবেন। ’ (জামে তিরমিজি, হাদিস : ১/১৫৭)

অন্য হাদিসে নবী কারিম (সা.) বলেন, ‘আমি আশাবাদী যে, আশুরার রোজার কারণে আল্লাহ তাআলা অতীতের এক বছরের (সগিরা) গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন। ’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১/৩৬৭; জামে তিরমিজি, হাদিস : ১/১৫৮)

যে কারণে আশুরায় দুই রোজা

আশুরার রোজা সম্পর্কে এক হাদিসে আছে, ‘তোমরা আশুরার রোজা রাখ এবং ইহুদিদের সাদৃশ্য পরিত্যাগ করে— আশুরার আগে বা পরে আরও একদিন রোজা রাখ। ’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ১/২৪১)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমি যদি আগামী বছর বেঁচে থাকি, তাহলে ৯ তারিখেও অবশ্যই রোজা রাখব। ’ (সহিহ মুসলিম : ১/৩৫৯)

আল্লাহ তাআলা আমাদের আশুরার রোজা রাখার এবং সঠিকভাবে ইসলাম মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।

লেখক: মুহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৩০ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০২৩
এসআই


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।